রোজায় থাকুন সুস্থ


রমজানের রোজা রাখার জন্য সেহরি করা যেমন সুন্নত হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ তেমনি স্বাস্থ্যগত দিক দিয়েও এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কাজেই শেষ রাতে শুধু একগ্লাস পানি খেয়ে যারা রোজার নিয়ত করেন তাদেরকে অবশ্যই এই অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
 
রোজার সময়টাতে সেহরি’র খাবারই দিনের যাবতীয় কাজের প্রধান শক্তিদাতা। তাই সেহরি’র খাবার যেন যথাযথ খাদ্যমানসম্পন্ন হয় সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে খাদ্য উপকরণের মাঝে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফল-সবজি এবং প্রচুর পরিমাণে পানি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তবে সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকবেন বলে এই সময়টিতে কখনোই অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত নয়।

এবারের রোজার সময়টায় যেহেতু আবহাওয়া খানিকটা উষ্ণ তাই রোজা রেখে কায়িক পরিশ্রম যতটা কম করা যায় ততই ভাল। এছাড়া যাদেরকে কাজের প্রয়োজনে রোজা রেখেই বাইরে যেতে হয় তারাও যথাসম্ভব সূর্যালোক এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন।

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের ঠিক আগে স্বভাবতই রক্তের ফ্লুইড ও সুগারের লেভেল অনেক নিচে নেমে আসে। তাই ইফতারের সময় একসাথে এবং দ্রুত অনেক খাদ্য গ্রহণের চেষ্টা করলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে প্রথমে পানি, শরবত, দুধ বা ফলের রস জাতীয় কোনো তরল খাবার গ্রহণ করুন। এরপর খানিকটা বিরতি দিয়ে এবং মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে মুড়ি, পেঁয়াজু, ছোলা ইত্যাদি খাবার ক্রমান্বয়ে গ্রহণ করুন।

ইফতারের পর বেশ খানিকটা সময় বিরতি দেবার পর রাতের খাবারে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর এবং ব্যালেন্সড ডায়াট গ্রহণে সচেষ্ট থাকুন। আর রাতের খাবার এর সাথে আগের চাইতে কম করে হলেও দু’গ্লাস পানি বেশি খাবার চেষ্টা করুন।

ইফতারের ঠিক পরের সময়টিতে চা, কফি কিংবা সফট ড্রিংকস্‌ গ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

চা, কফির প্রতি যারা অতিমাত্রায় আকৃষ্ট তারা ইফতারের ঠিক পরের সময়টিতে এই আকর্ষণ এড়াতে ফ্রেশ জুস কিংবা ইয়োগার্ট দুধ পান করে চা-কফি থেকে দূরে থাকুন।

রমজানের সময়, বিশেষ করে ইফতারের পর যেকোনো ধরনের মিস্টি খাবার বা ডেজার্ট খাওয়া উত্তম।

রোজার সময় সারাদিনে আপনার শরীরে যে পানির ঘাটতি দেখা দেয় সেটি দূর করার জন্য ইফতারের পর থেকেই একটু একটু করে বিশুদ্ধ পানি খাওয়া শুরু করুন এবং চেষ্টা করুন যেন ঘুমুতে যাবার আগেই আপনার শরীরে কমপক্ষে আট গ্লাস বিশুদ্ধ পানি প্রবেশ করে।

সম্ভব হলে ইফতারের পর হালকা এক্সারসাইজ যেমন ১৫ থেকে ২০ মিনিটা হাঁটাহাটি করার চেষ্টা করুন।

সেহরি ও ইফতারে ভাজাপোড়া খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।

শেষরাতে সেহরি খেতে ঘুম থেকে ওঠার কারণে আপনার ঘুমের রুটিন বা ঘুমের সময়ে যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

যাদের ধূমপানের অভ্যাস রয়েছে তারা রোজা রাখার অভ্যাসটিকে কাজে লাগিয়ে ধূমপান পরিহার করুন। এছাড়া ইফতারের পর পর কিংবা সেহরি খাওয়ার সময় ভুলেও ধূমপান করবেন না।

সেহরির সময় লাচ্ছি কিংবা ইয়োগার্ট এর মতো মিষ্টি জাতীয় পানীয় গ্রহণ করা সম্ভব হলে তা সারাদিনে আপনার তৃষ্ণা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকাংশে সহায়ক হবে। অন্যদিকে সেহরির সময় ডিম খেলে তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোজার সময় পানির তৃষ্ণা বাড়িয়ে দিতে পারে।

ইফতারের সময় প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং উচ্চমাত্রা চর্বি ও কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

সর্বোপরি রমজানের পুরো সময়টিতে শরীরের জন্য ক্ষতিকারক যাবতীয় খাবার ও নেশাজাতীয় বস্তু গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!