মুখের আলসার বিকৃত যৌনচর্চায়


সমাজের উন্নয়নের জন্য প্রগতিশীল মন মানসিকতার বিকাশ অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু অতি প্রগতিশীলতার নামে সমাজে বিকৃত যৌনতা বিস্তার লাভ করছে।

বিকৃত যৌনতায় ব্যবহার হচ্ছে মুখ, ঠোঁট, জিহবা, যৌনাঙ্গ এবং মলদ্বার। বিকৃত যৌনতার কারণে মুখের আলসার থেকে শুরু করে শরীরে বিভিন্ন জটিল রোগের বিস্তার লাভ করছে।

মুখের আলসারের চিকিৎসায় ওরোজেনিটাল সেক্স সত্যিই বড় এক চ্যালেঞ্জ। ওরাল সেক্সের ক্ষেত্রে অসাবধানতা এবং অজ্ঞতার জন্য মুখের জটিল রোগ থেকে শুরু করে দীর্ঘ মেয়াদী শারীরিক সমস্যা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। বিকৃত যৌনতায় আপনি যদি অভ্যস্ত হতে থাকেন তাহলে চিকিৎসককে খুলে না বললে আপনার মুখের আলসারের যথার্থ চিকিৎসা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সবচেয়ে ভালো হয় বিকৃত যৌনাচার পরিহার করে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হওয়া।

ওরাল সেক্সের মাধ্যমে যৌন সংক্রমিত রোগ বিস্তার লাভ করে। ওরাল সেক্সের মাধ্যমে হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস সবচেয়ে বেশি বিস্তার লাভ করে। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ সাধারণত ঠোঁটকে আক্রান্ত করে যা কোল্ড সোর নামে পরিচিত। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের মাধ্যমে ফ্যারিনজাইটিস, গলা ব্যথাসহ আলসার হতে পারে। আপনার যদি ঠোঁটে কোল্ড সোর থাকে তাহলে আপনার সঙ্গীকে ঠোঁটে চুমু দেয়া থেকে বিরত থাকুন আর ওরাল সেক্সের কথা তো চিন্তাই করা যায় না। ওরাল সেক্স’এ অংশগ্রহণকারী একজন যদি অন্যজনের সংক্রমণ জনিত খোলা আলসারের সংস্পর্শে আসে তাহলে সিফিলিস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এভাবে সিফিলিস জনিত জিহ্বার আলসার দেখা দিতে পারে। ওরাল সেক্সে অংশগ্রহণকারী দু’জনের একজনের যদি হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাস থাকে তাহলে অন্যজনের জন্য তা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাস জেনিটাল ওয়ার্টস বা গোটার সৃষ্টি করে থাকে। ওরাল সেক্সের মাধ্যমে একজন যদি হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাস সংক্রমিত অবস্থায় থাকে তাহলে অন্যজনের দেহে তা সংক্রমিত হত পারে এবং মুখের পাশে বা ভিতরে ওয়ার্টস বা গোটা অর্থাৎ মুখের ভেতরে ভাইরাসের গোটা দেখা দিতে পারে।

সেক্ষেত্রে ওরাল সেক্সের অভ্যাসের কথা ডাক্তারকে রোগী অবগত না করলে বা লুকিয়ে গেলে চিকিৎসা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন ধরে যদি ওরাল সেক্স চলতে থাকে তাহলে হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাস থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।

ওরো অ্যানাল সেক্স অথাৎ মুখ ও পায়ু পথেল যৌনতায় সালমোনিলা, শিগেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে। এর মাধ্যমে মুখে আলসার ছাড়া পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়া হতে পারে। হেপাটাইটিস ‘এ’ ভাইরাস সংক্রমনের মাধ্যমে জন্ডিস ও পেটে ব্যথা হতে পারে। ভাগ্য খারাপ হলে ওরো অ্যানাল সেক্সের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ‘এ’ ভাইরাস বিস্তার লাভ করে। ওরাল সেক্স করার সময় যদি রক্ত বের হয় আর সঙ্গীর যদি হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস থাকে তাহলে তা সংক্রমিত হতে পারে। এইডস রোগের ক্ষেত্রেও রক্ত সঞ্চালিত না হলে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায় না। তবে সম্ভবনা থেকেই যায়।

হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস ওরাল সেক্সের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায় না। তবে সম্ভাবনা থেকেই যায়। হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস ওরাল সেক্সের মাধ্যমে বিস্তার লাভের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ‘বি’ ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিভিন্ন প্যারাসাইট ওরো অ্যানাল সেক্সের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে। তাই মুখের আলসার প্রতিরোধে ওরাল সেক্স পরিহার করা উচিত। তাছাড়া ওরাল সেক্স আমাদের সংস্কৃতির সাথে কোনকালেই সম্পৃক্ত ছিল না। তাই সবার উচিত নিজের স্বার্থে সুন্দর পথে নান্দনিক জীবন উপভোগ করা। আর একান্তই যদি কেউ ওরাল সেক্স পরিহার করতে না পারে সেক্ষেত্রে ওরাল সেক্সের ক্ষেত্রে সাবধানতা এবং করণীয় সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। তা না হলে ক্ষণিকের আনন্দ জীবনটাকে দুর্বিষহ করে দিতে পারে।

লেখক: মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!