সোনার চেয়েও প্রিয়


গহনা নারীর সাজের অন্যতম অনুষজ্ঞ। তাই বলে গহনা যে সব সময় সোনারই হতে হবে তা তো নয়। সোনার চড়া দাম, আবার পরে বের হলে ছিনতাইয়ের ভয়- এ সব কারণে ভিন্ন ধরনের গহনা নারীদের কাছে হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়। তরুণীদের বেশি প্রিয় এ সব ট্রেন্ডি জাঙ্ক জুয়েলারির বিস্তারিত জানাচ্ছেন হাবিবাহ নাসরিন


হাল আমলের তরুণীদের কাছে সোনার চেয়ে প্রিয় জাঙ্ক জুয়েলারী। গলায় বড়সড় মালা, হাতে মোটা বালা কিংবা কানে ঝোলানো বিচিত্র ডিজাইনের দুল— চমত্কৃত করার মতো খবর হলো, গয়নাগুলো তৈরি হচ্ছে বিচিত্র সব জিনিস দিয়ে! যেমন হাড়গোড়, মাটি, সুতা, কাঠ, প্লাস্টিক, শুকনো ফুল, শোরা, তালপাতা, সিমেন্ট, কাপড়, পাট, পুঁথি, নানা ধাতুর চাকতি (!) এই পরিবর্তন কেন? হতে পারে সোনার দাম বেশি। কিংবা নতুনের প্রতি আকর্ষণ। বলা যায় রনির হাওয়ায় বদল এসেছে। চলতি হাওয়ার পন্থী হবেন যেভাবে।


কেমন গয়না পরবেন


জাঙ্ক জুয়েলারির প্রধান বৈশিষ্ট্যই হলো বড় আর নজরকাড়া আকার। গলায় কম ঝুলের মালা পরলে মালাটা ভারি আর মোটা হলেই ভালো। আর বড় মালার ক্ষেত্রে মালাটা ছেড়ে কিংবা পেঁচিয়ে কয়েক লহরে পরা যেতে পারে। গলায় ভারি কোনো গয়না পরলে কানে ছোট দুল পরুন। পায়ে পরার জন্য খাড়ুও এখন বেশ জনপ্রিয়। অ্যান্টিক সোনালি রঙের চলই এখন বেশি। ক্যাপ্রি, ফতুয়ার সঙ্গে পরতে পারেন গলায় লম্বা মালা, পায়ে মেটাল বিডসের পায়েল। পায়ে বিভিন্ন রং ও ধরনের পায়েল ও আঙুলে বড় আকৃতির আংটি পরলে একজন নারী হয়ে উঠতে পারেন বেশ আকর্ষণীয়। অন্যের দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারেন হাতে, রং-বেরঙের চুরি ও বালা পরেও। রূপা সব সময় ব্যবহার করলে কালো হয়ে যায়, অক্সিডাইজ দীর্ঘসময় পড়লে রং নষ্ট হয়ে যায় বলে এ ধরনের গয়নাকেই রোজকার আয়োজনে রাখতে চান কর্মজীবী ও শিক্ষার্থী নারীরা। লাল, কমলা, সবুজ রঙের ভারি পাথর, পুঁথি, কাঠ, সুতা দিয়ে ডিজাইন করা গয়নাগুলো সব বয়সের মেয়েরাই পরতে পারেন। এ ছাড়া রয়েছে গলার বড় মালা, হাঁসুলি, হাতের বালা, কানের মাকড়ি, খোঁপার কাঁটাসহ নানা ধরনের গয়না। তবে যাই পরা হোক না কেন খেয়াল রাখতে হবে আপনার গয়না পোশাকের সঙ্গে মানানসই হলো কি না। বর্তমানের সবচেয়ে জনপ্রিয় গয়নাগুলোর হিসাব করতে গেলে পিতল, কাঠ, কড়ি ও সুতার কানের দুল, হাতের ব্রেসলেট, চুড়ি, বালা, গলায় অক্সিডাইজ ও পিতলের নেকলেসই চোখে পড়ে। সঙ্গে বিভিন্ন স্টাইলের পায়েল ও খাড়ু তো থাকছেই। এছাড়া হাত ও পায়ের আঙুলের আংটিও হাল ফ্যাশনের মানানসই এবং অন্যতম একটি উপাদান।


কেমন সাজ


এ ধরনের গয়না পরলে মেকআপের তেমন প্রয়োজন নেই, গয়নাটাই নজর কাড়ে। ফলে মুখের সাজ হালকা হলেই ভালো। গাঢ় নীল, সবুজ, গোলাপি ইত্যাদি রঙের আইশ্যাডো দেয়া যেতে পারে চোখে। হলুদ, লাল, কালো, সবুজ এসব রঙের নেইলপলিশও ব্যবহার করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে গয়না কম পরাই ভালো। গলায় বড় কোনো মালা অথবা হাতে মোটা একটি ব্যাঙ্গল আর ঠোঁটে থাকবে হালকা রঙের লিপগ্লস।


কেমন দাম


২০-৫০০ টাকার মধ্যে পেতে পারেন বিভিন্ন উপাদানের কানের দুল। মাটি, কড়ি, পিতল, কাঠ ও সুতার তৈরি গলার গয়না পেতে আপনাকে খরচ করতে হবে ৫০-১৫০০ টাকা। হাতের ব্রেসলেটের দাম পড়বে ৩০-৩০০ টাকা, খাড়ু ২৫০-১০০০ টাকা, আর হাতের বালা পাবেন ২৫০-৫০০ টাকায়। হাত ও পায়ের আংটির জন্য দাম পড়তে পারে ১০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।


কোথায় পাবেন


শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে মিলবে এই গয়নাগুলো। চাঁদনী চকেও সুলভমূল্যে পাবেন। উন্নতমানের গয়নার জন্য যেতে পারেন আড়ং, দেশাল, বিবিয়ানা, পিরান, মাদুলী, রং, যাত্রা, নগরদোলা, নিত্যউপহার, নন্দনকুঠিরসহ ছোট-বড় ফ্যাশন হাউস ও গয়না দোকানে। তবে আরও কম মূল্যে গয়না সংগ্রহের জন্য নিউমার্কেট ও গাউছিয়া ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গয়না আপনার সুন্দর রুচি বহন করে। তাই গয়না বাছাই করুন সতর্কতায় এবং নিজের শারীরিক গঠন, পোশাক-আশাকের প্রতি ভালোবাসা রেখে।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!