অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের পরে...

বিয়ে এমন একটি সামাজিক রীতি, যা দুই মেরুর দুটি মানুষকে এক করে। শুধু দুটি মানুষ নয় দুটি পরিবারের মেলবন্ধন ঘটায় বিয়ে নামক সামাজিক এই আচার। আধুনিকতার এই যুগে প্রেমের বিয়ে হয় বেশি, তাই বলে পারিবারিক বিয়ের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়! পারিবারিকভাবে বিয়ে হলে সঙ্গী মানুষটিকে বুঝে উঠতে সময় লাগে বেশি। কারণ, দুটি ভিন্ন পরিবারের, ভিন্ন পরিবেশের মানুষ একসঙ্গে বসবাস শুরু করে। তাই কেউ কারো আচরণ, অভ্যাস সম্পর্কে অবগত থাকে না। ফলে বিয়ের পর সঙ্গীর সাথে মানিয়ে নিতে তাই অনেকেই অনেক ছোটখাট সমস্যার সম্মুখীন হন। এক্ষেত্রে একটু ধৈর্য, সহনশীলতা আর কিছু পন্থা অবলম্বন করলেই অচেনা জীবনসঙ্গীকে আপন করতে পারবেন খুব সহজেই।


*অন্তত তিন মাস সময় নিন মানুষটিকে বোঝার জন্য। তার অভ্যাসগুলো পর্যবেক্ষণ করুন।

*অনেকেই আছে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন, আবার অনেকে রাত জেগে বই পড়েন, ফেসবুকিং করেন। যদি এমন বিপরীতধর্মী জুটি হয়ে থাকেন তবে নিজেদের মাঝে ভালোভাবে বোঝাপড়া করে নিন। যার ঘুম দরকার তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন, যার রাত জাগা দরকার তিনি টেবিল ল্যাম্প জ্বেলে কাজ সারলেন। এতে একজন আরেকজনের অসুবিধার কারণ হবেন না।

*খাবারের ক্ষেত্রেও বেশ সমস্যা সৃষ্টি হয়। অনেকেই অনেক খাবার খান না, বাছবিচার করেন, অনেকের অ্যালার্জি থাকে। তাই খাবারের ক্ষেত্রে একে অপরের সুবিধা-অসুবিধা, পছন্দ-অপছন্দগুলো জানার চেষ্টা করুন। গৃহিণী রান্নার সময় কর্তার পছন্দের দিকে খেয়াল রাখুন। স্বামী বাজার করার আগে স্ত্রীর সাথে আলোচনা করুন। বাইরে খেতে গেলে অর্ডার দেবার আগে একে অন্যের রুচি সম্পর্কে জেনে নিন।



*আজকাল ছেলে বন্ধু এবং মেয়ে বন্ধুর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। স্ত্রী হয়তো বিয়ের পর দেখলেন স্বামীর মেয়েবন্ধুর সংখ্যা বেশি। আবার এমনও হতে পারে স্ত্রীর ছেলেবন্ধুর সংখ্যা বেশি। সেক্ষেত্রে এ বিষয় নিয়ে উলটোপালটা না ভেবে সঙ্গীর বন্ধুদের সাথে ভাব জমান। এতে যেমন আপনাদের সম্পর্ক গাঢ় হবে, তেমনি আপনি পাবেন সঙ্গীর আস্থা ও শ্রদ্ধা।

*আপনি যদি চুপচাপ শান্ত স্বভাবের হন এবং আপনার সঙ্গী যদি হৈ-হুল্লোড় পছন্দ করেন তাহলে চেষ্টা করুন ঐ পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে। স্বামীর বন্ধুদের বউদের সাথে আলাপ জমিয়ে ফেলুন। আর স্বামীরা স্ত্রীর বান্ধবীদের বরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারেন।

*কর্পোরেট এই যুগে দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দুজনেই বাইরে কাজ করেন। সময়ের অভাব সম্পর্ক গঠনের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে নতুন জুটিদের ক্ষেত্রে দেখা দেয় নানা টানাপোড়েন। দুজন দুজনার কাজের চাপ বুঝে, আলোচনা করে ঠিক করে নিন নিজেদের একান্তে থাকার সময়। একটি ঘুরে বেড়ানোর বিকেল, সিনেমা দেখার জন্য একটি সন্ধ্যা বা জোছনা উপভোগ করের একটি রাতও আপনাদের নিয়ে আসতে পারে অনেক কাছে।


*নবদম্পতিদের জীবনযাপনে সব কিছুই নতুন মনে হয়, অস্বস্তি ঠেকে সব কাজেই। ধীরে ধীরে পরস্পরের মধ্যে অভ্যস্ততা তৈরি হয়। মতের অমিল কমে আসে। তখন এ জীবনই হয়ে ওঠে সহজ ও স্বাভাবিক।

মনের মতো সঙ্গী না পেলে অনেকেই তুলনা করতে থাকেন, আক্ষেপ করতে থাকেন। এটা মনে রাখতে হবে যে, পৃথিবীর সব মানুষই আলাদা, কারো সাথে কারো মিল নেই। একেক জন একেক রকম- এ কথাটি যত দ্রুত অনুধাবন করতে পারবেন, আপনার দাম্পত্যজীবন তত দ্রুত সুখময় হয়ে উঠবে।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!