ভেবে দেখুন তো, সকালটা যদি শুরু করা যায় প্রিয়জনকে আলিঙ্গন করে! কেমন হতো তাহলে? দিনের শুরুতে একটি মিষ্টি আলিঙ্গন সারাদিন আপনাকে ভালোবাসায় আচ্ছন্ন করে রাখবে। আলিঙ্গনের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ পায়, প্রিয়জনের প্রতি স্নেহ প্রকাশ করা হয়। এমনকি প্রিয়জন রেগে গেলে তার রাগ ভাঙ্গানোর সবথেকে শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে আলিঙ্গন। মা,বাবা,ভাই,বোন,প্রিয় মানুষটিকে আলিঙ্গন করার মাধ্যমে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ রাখা হয়। কিন্ত আলিঙ্গন শুধু ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ নয় এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। গবেষকদের মতে আলিঙ্গনের মাধ্যমে বিষণ্নতা, মানসিক চাপ, উত্তেজনা , উদ্বেগ এবং নিঃসঙ্গতা দূর হয়। আসুন জেনে নেয়া যাক আলিঙ্গনের কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
মানসিক প্রশান্তি আনে
আলিঙ্গনের সময় ‘অক্সিটোসিন’ নামক একটি হরমোনের নিঃসরণ হয় যা বিষণ্ণতা, রাগ ও একাকীত্ব দূর করে মনে প্রশান্তি আনে। আলিঙ্গনের মাধ্যমে মানসিকভাবে মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তার খোঁজ পান দুজন মানুষ। এতে করে মানসিক বন্ধনের সৃষ্টি হয়। মন বুঝতে পারে যে সে একা নয়, তার সাথে অন্য কেউ আছে। তাই আলিঙ্গনে মানসিক স্বস্তি আসে।
সুখের অনুভূতির সৃষ্টি করে
আলিঙ্গনের মাধ্যমে মস্তিস্কে সেরোটোনিনের মাত্রা বৃদ্ধি। সেরোটোনিন মস্তিষ্কে সুখের অনুভূতির সৃষ্টি করে। যে কোন ধরনের দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা দূর করে মাত্র এক মিনিটে সুখী হবার উপায় একমাত্র আলিঙ্গন। তাই প্রিয়জনের মানসিক অশান্তি, রাগ ও দুঃখ দূর করার জন্য অন্তত ১ মিনিটের জন্য হলেও তাকে জড়িয়ে ধরুন।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ভালোবাসামাখা একটি আলিঙ্গন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গবেষণায় দেখা যায়, আলিঙ্গনের সময় বক্ষাস্থিতে মৃদু চাপ ও মস্তিস্কের অনুভূতি দুইটি একসাথে কাজ করে সোলার প্লেক্সাস চক্রের সৃষ্টি করে। এই সোলার প্লেক্সাস চক্র দেহের থাইমাস গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে। থাইমাস গ্রন্থির উদ্দীপন দেহের সাদা রক্ত কোষ উৎপাদনে সহায়তা করে। সাদা রক্ত কোষ দেহকে রোগ মুক্ত রাখে। এভাবে একটি আলিঙ্গনের মাধ্যমে আপনি নিজেকে সুস্থ ও নীরোগ রাখতে পারেন।
ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
আলিঙ্গন দেহে সাদা রক্ত কোষের উৎপাদনের সাথে সাথে রক্ত সঞ্চালনের ভারসাম্য রক্ষা করে। রক্ত সঞ্চালন দেহের টিস্যুসমূহকে নরম করে ও শরীরের পেশীকে শিথিল করে। এতে করে শরীরের যে কোন ধরনের ব্যথার উপশম হয়। আপনার প্রিয় কোন মানুষের ব্যথা উপশমে একটি আলিঙ্গন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করবে।
এছাড়াও আলিঙ্গনের আরও অনেক ধরনের উপকারিতা আছেন। গবেষকরা আলিঙ্গনকে মেডিটেশনের সাথে তুলনা করেন। মানসিক প্রশান্তির জন্য মেডিটেশনের মতই গুরুত্বপূর্ণ আলিঙ্গন। সাইকোথেরাপিস্ট ভার্জিনিয়া সেটিয়ার এর মতে, “ বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন ৪টি আলিঙ্গন, সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ৮টি আলিঙ্গন এবং মানসিক প্রশান্তির জন্য প্রতিদিন ১২টি আলিঙ্গন আমাদের প্রত্যেকের প্রয়োজন”।
0 comments:
Post a Comment