আকর্ষনীয় লেডি ডক্টরের গল্প


আরে সেই জন্যই তো ফোনটা করলাম। আনেক মজার ঘটনা বলার আছে আর তার সাথে কিছু দরকারী কথাও আছে।

ওমা তাই নাকি? কি হয়েছে বালোনাগো।

বলছি বলছি, সব বলছি তোমাকে।

আমি আবার এতদিন বাদে ডাক্তারি করা শুরু করছি শুনে তোমরা মায়েরা সবাইতো আমাকে খুব করে ধরলে যে আমি যেন তোমাদের ছেলেগুলোকে মানে আমার আদরের তিন ভাগ্নেকে পড়াবার সাথে সাথে ওদের শরীর সাস্থ্যর দায়িত্ব্যটাও নিই। আমিও ভাবলাম সত্যিই তো ! এতদিন ধরে ওদের আমি পড়াচ্ছি, আর আজ আমি যখন আবার ডাক্তারি শুরু করছি তখন আমার নিজের আদরের ভাগ্নেগুলোকে পরীক্ষা করবনা সেটা কি হয়?কিন্তু আবার এটাও মনে হলো যে যতইআমি ওদের নিজের ডলুমাসি হইনা কেন, ওদের চোখে আমি এখনো ওদের একজন শিক্ষিকা,তাকে হঠাত একজন ডাক্তার হিসেবে মেনে নিতে ওদের বেশ অসুবিধা হতে পারে,তাছাড়া ওরা বেশ বড় হয়েছে,এত বড় ছেলে হয়ে একজন লেডিডাক্তারকে দেখাতে ওদের আপত্তিও থাকতে পারে।

আরে না না ডলুদি, তুমি ওসব নিয়ে একদম ভাববেনা।ওরা এমন কিছু বড় হয়নি যে ওরা নিজেরা ঠিক করবে যে একজন মহিলাডাক্তারকে দেখাবে কিনা।আমরা মায়েরা যখন ঠিক করেছি যে এখন থেকে তুমিই ওদের চিকিত্সা করবে, তখন এটাই ওদের মেনে নিতে হবে।আগে তুমি ডাক্তারি করতেনা তখন না হয় অন্য ব্যাপার ছিল।এখন নিজের মাসিই যেখানে ডাক্তার তখন সেই ডাক্তারমাসিকে দেখাবেনাতো কাকে দেখাবে? ওদের কত সৌভাগ্য যে ওদের ডলুমাসী ওদের ডাক্তারি করবে। হলেইবাতুমি লেডিডাক্তার, তোমার চেয়ে ভালো করে কেউ ওদের ডাক্তারি করবেনা।তুমি কোনো চিন্তা কোরো না,সেরকম ঝামেলা করলে আমরা মায়েরা ওদের জোর ধমক দিয়ে আবার তোমার কাছেই পাঠাবো।

হ্যা গীতা, সেটা তো আমি জানিই যে তোমাদের কত ভরসা আমার ওপর। আমি আবার ডাক্তারি করব শুনে তোমরা কত খুশী হয়েছ। সত্যি বলতে কি প্রথমে ঐসব চিন্তা মাথায়ে এলেও পরে আমি ঠিক তোমার মতই ভাবলাম - ঠিকই তো, কত আর বড় হয়েছে ছেলেগুলো, একজন মহিলাডাক্তার হলেও আমি ওদের পরীক্ষা করতেই পারি। প্রথম প্রথম হয়ত একটু লজ্জা সংকোচ করবে, কিন্তু পরে আমি ওদের ঠিক সব সংকোচ অস্বস্থি ভাঙিয়ে দেব। তাছাড়া তুমি ঠিকই বলেছ, আমি লেডিডাক্তার মাসি হয়ে আমার আদরের ভাগ্নেদের ডাক্তারি না করলে কে করবে বলো?

তাছাড়া শুধু আমার ভাগ্নেরা কেন, সব ছেলে বা পুরুষ রোগীদেরই ক্ষেত্রেই আমাদের লেডিডাক্তারদের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হয় ওদের লজ্জা আর সংকোচ কাটিয়ে দেওয়ার জন্য, যাতে ভবিষ্যতে আমরাওদের ওপর সবরকমের ডাক্তারি করতে পারি।

কাল রাত্রে এটা ভাবতে ভাবতেই মনে হলো, আরে! আগামীকাল তো শনিবার, ছেলেগুলোতো সকালেই পড়তে আসবে। তাহলে কালকেই আমি ওদের ডাক্তারি শুরু করে দিই না কেন। তোমরা মায়েরা আর আমি মাসি মিলে যখন ঠিক করেই ফেলেছি যে এখন থেকে আমিই ওদের ডাক্তার হব,তখন শুভ কাজে দেরি করে কি লাভ। ঠিক করলাম যে প্রথমদিন শুধু রুটিন চেকআপ করব ওদের। সেরকম কিছু দেখলে পরে আরও ভালো করে সেটার চিকিত্সা করব। সেই জন্যই কাল রাত্রেতোমাদের ফোন করে বললাম আমার প্ল্যানটা, যাতে কালকে তোমরা বিল্টু,পল্টু আর সন্তুকে অবশ্যই আমার কাছে পড়তে পাঠাও। তোমাদেরও আমার প্রস্তাবটা ভীষণ ভালো লেগে গেল।

ডাক্তারির ব্যাপারটা ইচ্ছে করেই ওদের বলতে বারণ করেছিলাম, নাহলে শুধু শুধু ওরা ঘাবড়ে যেত। আমি মনে মনে এটাই ঠিক করে রেখেছিলাম যে একবার এখানে এলে আমি নিজেই ওদের আস্তে আস্তে আমার ডাক্তারি পরীক্ষার মধ্যে নিয়ে আসব। আর এর জন্য অনেকরকম মনস্তাত্বিক কায়দাআছে, যেগুলো আমার আদরের ভাগ্নে রোগীদের উপর আমাকে প্রয়োগ করতে হবে। অনেকছেলেরোগী থাকে যারা ভীষণ অবাধ্য, উগ্র স্বভাবের হয়,তারা কিছুতেই লেডিডাক্তারদের কাছে দেখাতেচায়না।তখন তাদের মায়েরা কিছু না বলেই আমাদের কাছে নিয়ে আসে। আমাদেরই তখন নানান রকম সাইকোলজিকাল উপায়ে ওদের রাজি করাতে হয় একজন লেডি ডাক্তারকে দিয়ে নিজের চিকিত্সা করাতে।

যদিও আমার ভাগ্নেগুলো অবশ্য সবকটাই বেশ ভালো ছেলে, বিল্টু আর পল্টুটার একটু দুষ্টু বুদ্ধি মাঝে মাঝে কাজ করে এই আর কি, কিন্তু তোমারটা তো একদম গোবেচারা লক্ষী ছেলে। ওই জন্যই সন্তুকেআমি একটু বেশিই ভালবাসি। তবে ওদের কারো ক্ষেত্রেই ঐসব উগ্র,অবাধ্য রোগীদের মতো অত ঝামেলার আশংকা ছিলনা।কিন্তু তোমরা মায়েরা যাই ভাবনা কেন,এটা আমি জানতাম যে নিজেদেরশিক্ষিকা মাসিকে এতদিন পরে হঠাত লেডিডাক্তার মাসি হিসেবে মেনে নিতে তোমাদের ছেলেগুলোর বেশ অসুবিধা হবে।আর একবার যদি ওদের মনে আমাকে ওদের ডাক্তার হিসেবে গ্রহন করতে তীব্রঅস্বস্থি বা আপত্তি ঢুকে যায় তখন তোমরা বকে ধমকেও ওদের আমার কাছে পাঠাতে পারবেনা,এমনকি ওরা আমার কাছে পড়তেও আসতে চাইবেনা।

 ওমা ডলুদি, আমরা তো এসব চিন্তাই করিনি। সত্যিই, তুমি একজন ডাক্তার বলেই কত কিছু তোমাকে মাথায়ে রাখতে হয়। আমি তো কখনো ভাবিইনি যে একজন ডাক্তার হয়ে তোমাকে শুধু তোমার রোগীদের শরীরটা দেখলেই চলে না,তাদের মনের উপরেও প্রভাব বিস্তার করতে হয়।



ঠিকই ধরেছ তুমি। বিশেষ করে আমরা মানে মহিলা ডাক্তাররা যখন পুরুষ বা ছেলে রোগীদের চিকিত্সা করি তখন এই ব্যাপারটার দিকে বেশি নজর দিতে হয়।

তো ডলু দি, আমাদের তিন বীরপুরুষের জন্য তোমাকে কি কি করতে হলো বলনাগো

শুনলে অবাকই হবে একটু, অন্য পুরুষ বা ছেলে রোগীদের প্রথম দেখার সময়ে আমি যে ধরনের প্রস্তুতি নিই ওদের জন্যও ঠিক সেটাই করতে হয়েছে আমাকে। কারণ একজন লেডিডাক্তার হিসেবে সব পুরুষ বা ছেলেদেরই আমাকে সমান চোখে দেখতে হয়, সেই সময়ে আমার সাথে তাদের একটাই সম্পর্ক - সেটা হলো আমি তাদের ডাক্তার আর তারা আমার রোগী। তখন আমাকে ভাবলে চলবেনা যে আজকে আমি আমার ভাগ্নেদের উপর ডাক্তারি করব।

আরেকটু খুলে বলনা ডলুদি, আমার এত কৌতুহল হচ্ছে

বলছি। প্রস্তুতি হিসেবে প্রথমেই যেটার দিকে আমাদের নজর দিতে হয় সেটা হলো আমাদের পোশাক আর সাজগোজ।অন্যদিন আমি ওদের পড়াবার সময়ে যেমন তেমন করে কিছু একটা পরেই বসেযেতাম কিন্তু আজ একজন লেডিডাক্তার হিসেবে আমাকে একটু অন্যরকম ভাবে ওদের সামনে আসতে হবে, নিজের ডাক্তারি ব্যক্তিত্বের সাথে সাথে তুলে ধরতে হবে নিজের নারীত্বের সৌন্দর্য্যও। হ্যা ওরা আমার ভাগ্নে হওয়া সত্ত্বেও।

সত্যিই ডলুদি? আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছিনা!

বলেছিলামনা তুমি একটু অবাক হবে। ওই যে বললাম ওই সময়ে ওরা আমার কাছে আমার ভাগ্নে নয়,শুধুমাত্র আমার ছেলে রোগী। দেখো একজন রোগীর কাছে তার ডাক্তার হচ্ছেন এক ধরনের নির্ভরতা,এক ধরনের সমর্পনের জায়গা,যার কাছে নিজের যাবতীয় শারীরিক,মানসিক সমস্যা,যাবতীয় গোপনীয়তা খুলে ধরা যায়।আর সেই ডাক্তার যদি হন একজন মহিলা,স্বাভাবিক ভাবেই তার নারীত্বের সৌন্দর্য,নম্রতা আর ব্যক্তিত্ব যে কোনো রোগীর মনেই বিশেষ করে পুরুষ রোগীর মনে ব্যাপক প্রভাববিস্তার করে।তখন সেই পুরুষ রোগীটি খুব সহজেই সেই মহিলাডাক্তারটির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দেয় আর মহিলাডাক্তারটি মনের মত করে তাকে পরীক্ষা করতে পারেন।

সেই জন্যই পুরুষ রোগীর উপর ডাক্তারি করার সময়ে আমাদের পোশাক আর সাজগোজের মাধ্যমে নিজেকে যতটা সম্ভব আকর্ষনীয় করে তুলতে হয়।আর ব্যবহারটাও খুবই নম্র,আন্তরিক করে তুলতেহয়।পড়াবার সময়ে আমি তিন ভাগ্নের উপরই যেরকম স্ট্রিক্ট থাকি সেরকম ব্যবহার লেডিডাক্তার হিসেবে একেবারেই করলে চলবেনা।তার বদলে মুখে নিয়ে আসতে হবে মিষ্টি হাসি,শরীরের ভাষায়ে নিয়ে আসতেই হবে নমনীয়তা, তবেইতো ওরা ওদের ডাক্তারমাসির প্রতি আকর্ষিত হবে।

1 comments:

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!