নিউজ
ডেস্ক: প্রেমের সম্পর্কের বিয়ের ক্ষেত্রে আমাদের বর্তমান সমাজে বেশিরভাগ
সময়েই সহজে রাজি হন না বাবা মা। কোনো ভাবেই যখন বাবা মা কে রাজি করানো
যায় না তখন প্রেমের পরিনতি হয় পালিয়ে বিয়ে করা, নতুবা অন্য যায়গায়
বিয়ে করে সারা জীবন মনকষ্টে থাকা। আবার অনেক ক্ষেত্রে আত্মহত্যার মত
দূর্ঘটনাও ঘটতে দেখা যায় বর্তমানে। এতোই কঠিন কাজ কি বাবা মাকে রাজি
করানো?
অবশ্য ক্ষেত্র বিশেষে কঠিন। তবে বিশ্বাস রাখুন মনে, আর একটা কথা মনে
রাখবেন সবার বাবা-মা তাঁর সন্তানকে ভালোবাসেন। আপনার মা বাবা যদি আপনাকে
ভালোবেসে থাকেন আর আপনার সঙ্গীর মধ্যে যদি অপছন্দ করার মতো কোনো বিষয় না
থাকে, তাহলে বাবা মা কে রাজী করাতে খুব বেশি বেগ পোহাতে হবে না আপনাকে। আর
এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পনামাফিক ধাপে ধাপে আগানো। পিতা মাতা জন্ম দিয়েছেন,
পরম মমতায় লালন পালন করেছেন, জীবনের পথে যোগ্য করে তুলেছেন। সেই পিতা
মাতার মনে কষ্ট দিয়ে পালিয়ে বিয়ে করা আসলে ভীষণ অনুচিত একটি কাজ।
সবচাইতে ভালো হয় যদি তাঁদের সম্মতি ও দোয়া সহ নিজের নতুন জীবন শুরু করতে
পারেন। মা বাবার দোয়ার চাইতে মঙ্গলময় জগতে আর কি আছে বলুন? একটা হঠকারী
সিধান্ত নেয়ার আগে তাই অবশ্যই সম্ভাব্য সকল উপায়ে চেষ্টা করে নেয়া উচিত
তাদের সম্মতি আদায়ের।
আসুন দেখে নেয়া যাক ভালোবাসার মানুষটিকে বিয়ে করার জন্য কিভাবে অভিভাবকের সম্মতি পাওয়া সম্ভব।
প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে কথা বলে রাখুন
আপনার ভালোবাসার মানুষটির সাথে আগেই কথা বলে রাখুন আপনার মা-বাবার পছন্দ
ও অপছন্দের ব্যাপারে। তাঁকে আগেই জানিয়ে রাখুন কি রকম পাত্র/পাত্রী আপনার
বাবা মা পছন্দ করেন। কিভাবে বাবা মার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবেন সেই
পরিকল্পনাটাও সঙ্গীকে বলে রাখুন। আগে থেকে বলে রাখলে আপনার সঙ্গীটির মনে
সাহস আসবে এবং সে নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করে নিতে পারবে। ফলে এ ব্যাপারে
তাঁর আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।
আপনার ভাই-বোনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন।
আপনার সঙ্গীটিকে বাবা মার সাথে দেখা করানোর আগে আপনার ভাই কিংবা বোন
থাকলে তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। তাঁকে জানিয়ে দিন কিভাবে আপনার
ভাই-বোনের মন জয় করা যায়। অনেক সময় অভিভাবকরা ভাই বোনকে জিজ্ঞেস করে যে
আপনার সঙ্গীকে তাদের কাছে কেমন লেগেছে। ভাই-বোনের কাছ ইতিবাচক উত্তর পেলে
তারা মনে মনে আপনার সঙ্গীকে মোটামুটি গ্রহণ করে ফেলে।
সবার আগে আপনার মা কে বলুন
সাধারনত সবার বাবার সাথে বেশিরভাগ সন্তানেরই কিছুটা দূরত্ব থাকে। আর
এক্ষেত্রে অস্বস্তি থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই প্রথমে মা কে সবকিছু খুলে বলুন।
সন্তান ও মায়ের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ন হয়। তাই বাবাকে বলার আগে মাকে
বলাটা বেশ সহজ। মাকে বুঝিয়ে বলুন আপনি কেনো আপনার সঙ্গীকে পছন্দ করেছেন।
এছাড়াও তার পরিবার কেমন, তার পড়াশোনা ও চাকরীর খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আপনার
মাকে বলুন। প্রয়োজনে বাবার সাথে দেখা করানোর আগে মায়ের সাথে সঙ্গীর দেখা
করিয়ে দিন। আপনার মায়ের কাছে আপনার সঙ্গীকে ভালো লাগলে বাবা কে রাজী
করানোর দ্বায়িত্ব মায়ের উপর ছেড়ে দিন।
অভিভাবকের সাথে দেখা করিয়ে দিন
সুবিধাজনক কোনো যায়গায় বাবা মার সাথে সঙ্গীকে দেখা করিয়ে দিন। তবে
দেখা করানোর আগে আপনার সঙ্গীকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করে নিন। সম্ভাব্য
কিছু প্রশ্ন যেগুলো আপনার বাবা মা তাঁকে জিজ্ঞেস করতে পারে সেগুলো সম্পর্কে
আগেই ধারণা দিয়ে দিন। সে কি ধরনের পোশাক পরলে আপনার বাবা মা খুশি হবে
সেটাও বলে দিন তাঁকে। দেখা করার দিন তাঁকে একদম সময়মত আসতে বলুন। কারণ
প্রথম দিনই দেরী করে এলে তার সম্পর্কে আপনার বাবা মার ধারণা খারাপ হবে।
বাবা মার মতামত নিন
আপনার সঙ্গীর সাথে দেখা করিয়ে দেয়ার পর বাসায় ফিরে বাবা মার কাছে
তাদের মতামত জেনে নিন তাদের মতামত যদি ইতিবাচক হয় তাহলে তাদেরকে ধন্যবাদ
দিন। আর আপনার বাবা মা যদি আপনার সঙ্গীকে পছন্দ না করে তাহলে তাদের কে
বুঝিয়ে বলুন যে আপনার পছন্দের উপর আপনার বাবা মা বিশ্বাস রাখতে পারে। এটাও
বুঝিয়ে বলুন যে আপনি যাকে ভালোবাসেন তাঁকে ছাড়া অন্য কোথাও বিয়ে করলে
আপনি মন থেকে সেই সম্পর্ক মেনে নিতে পারবেন না।
মনে রাখা জরুরী-
আপনার বাবা মা কে কোনো মিথ্যা কথা বলবেন না আপনার সঙ্গীর সম্পর্কে।
আপনার সঙ্গীকেও মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকতে বলুন। কারণ মিথ্যা বললে
আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং একবার মিথ্যা ধরা পড়লে কোনো ভাবেই আপনার বাবা
মাকে রাজী করাতে পারবেন না। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার
অভিভাবককে রাজি করাতে হলে অধৈর্য্য হলে চলবে না। অধৈর্য্য হয়ে বাবা মার
সাথে খারাপ ব্যবহার কিংবা নিজের কোনো বড় ক্ষতি করে বসবেন না। এতে হিতে
বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। তাই ধৈর্য্য ধরে অভিভাবককে বুঝিয়ে
আপনার প্রেমের সম্পর্ককে একটি সফল পরিণতি দিন।
0 comments:
Post a Comment