সংসারে সুখের রহস্য!


বিয়ের পড়ে টুকটাক ঝগড়া ঝাঁটি তো হবেই। সেটা সব সম্পর্কেই হয়। কিন্তু অতিরিক্ত ঝগড়া ঝঁটি কখনোই বিবাহিত জীবনের জন্য ভালো না। 

ঝগড়া ঝাঁটি হলে সব দম্পতিই নিজস্ব পদ্ধতিতে সেটা সমাধান করে। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া বারকেলি ও নর্থ ইস্টার্ন গবেষণায় বলা হয়েছে দাম্পত্য জীবনের সুখ নির্ভর করে কে ঝগড়া মেটাতে আগে এগিয়ে আসে তার উপরে।

গবেষকরা ১৩ বছর ধরে দীর্ঘ গবেষনা করে ৮০ জন দম্পতির তর্কা তর্কির ভিডিও টেপ ধারণ করেন। তাদের প্রত্যেকের মুখভঙ্গি, মানসিক ও আবেগের পরিবর্তন, শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন (রক্তচাপ, শরীরের তাপমাত্রার পরিবর্তন, হৃদপিন্ডের গতি, ঘাম) ইত্যাদিকে কোডিং এর মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়। তাঁরা লক্ষ্য রেখেছিলো ঠিক কোন সময়টাতে তাঁরা সবচেয়ে বেশি বিষন্ন থাকে এবং সেটা ঠিক হতে তাদের কতটা সময় লাগে। 

১০ বছর পর গবেষকরা দম্পতিদের জিজ্ঞেস করেছিলো যে তাঁরা তাদের সম্পর্কে কতটুকু সুখী। ‘ইমোশন’ জার্নালে বলা হয়েছে যে দম্পতিদের বিষন্ন থাকার সময়ের উপর তাদের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের সুখের সম্পর্ক আছে। এছাড়াও দম্পতিদের মধ্যে কে আগে শান্ত হয়েছে তাঁর উপরো তাদের সুখ নির্ভর করে। উদাহরণ স্বরূপ সে সব দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়ার সময় স্ত্রীরা আগে শান্ত হয়েছে, সে সব দম্পতিই স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী সুখ পেয়েছে। স্বামীরা আগে শান্ত হওয়ার তেমন কোনো প্রভাব পাওয়া যায় নি।
গবেষনাটির একজন প্রধান গবেষক ও প্যাসিফিক স্কুল অফ সাইকোলজির সহকারী প্রফেসর লিয়ান ব্লোচের মতে প্রতিটি সম্পর্কের ক্ষেত্রেই আশা করা হয় যে নারীদেরই আবেগের নিয়ন্ত্রণটা বেশি থাকবে। তাই দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়ার সময় ইমোশনাল থার্মোমিটারে দেখা যায় যে স্ত্রীরাই আবেগ নিয়ন্ত্রণের দায়ীত্ব নিতে পারছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। 

স্ত্রীরা যখন শান্ত হয়ে যায় তখন তাঁরা বেশি ভালো ভাবে অনুভূতি বোঝাতে পারে এবং স্বামীকে বোঝাতে পারে। ফলে তাঁরা তখন কথাবার্তা বলে সমস্যার একটি সমাধানে এসব ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে পুরুষরা মাথা গরম করে অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে এবং সমস্যা সমাধানের বদলে অনেক সময় পরিস্থিতি বিগড়ে যায়। 

গবেষণায় আরো দেখা গিয়েছে যে যেসব পুরুষরা উপলব্ধি করে যে তাঁরা সাংসারিক সমস্যা সমাধানে খুব বেশি পটু না তাঁরা আশা করে যে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হলে সেটা স্ত্রীই মিটমাট করবে। তাই তাঁরা নিজে থেকে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে যায় না। এক্ষেত্রে যদি স্ত্রী একটি সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান দেয় তাহলে তাঁর দীর্ঘ মেয়াদী ফলাফল পাওয়া যায়।

স্বামী-স্ত্রী দুজনের সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য দুজনেরই ইচ্ছা ও সহযোগীতা প্রয়োজন থাকা জরুরী। তবে এক্ষেত্রে যে কোনো একজন এগিয়ে এলে সমস্যা তাড়াতাড়ি সমাধান হয় এবং দাম্পত্যে সুখ শান্তি বজায় রাখা যায়। তবে গবেষনার ফলাফল অনুসারে প্রথম পদক্ষেপটা স্ত্রী নিলেই সেটা বেশি ফলপ্রসু হয়।

মডেলঃ অন্তু ও শ্রেয়সী
ফটোগ্রাফারঃ সাগর

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!