দাম্পত্যে দূরত্ব কমাতে


যেকোনো সম্পর্ক গতানুগতিক হয়ে গেলে তা একঘেয়ে হয়ে যায়। এমনকি জীবনসঙ্গীর সাথে যদি শুধু জীবনযাপন করেন, তাঁকে আপন সঙ্গী মনে না করেন, তাহলেও ভেস্তে যেতে পারে দাম্পত্যের সম্পর্ক! বিয়ের আগে বা বিয়ের প্রথমদিকে সঙ্গীর জন্য যতটা চিন্তা করতেন, তাও হয়তো কমে যেতে পারে দাম্পত্যের মনান্তরে। কথায় কথায় লেগে যেতে পারে খিটিমিটি। অতঃপর অশান্তি। একসময় নিজেদের গন্ডি থেকে বেরিয়ে আসাটাই দায় হয় যায়। তাই দাম্পত্যের কোনো সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করার আগেই তার নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।

দুজন মানুষের মধ্যে অমিল থাকতেই পারে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই বলে এসব বিষয় নিয়ে অনবরত ঝামেলা করাটাও কোনো কাজের কথা নয়। এতে দূরত্ব বাড়বেই, সাথে সম্পর্কেও ধরতে পারে ফাটল।

নতুন করে ভাবুন :
ঘরেবাইরে অসংখ্য কাজ থাকবেই। তাই বলে জীবনসঙ্গীকে তাঁর প্রাপ্য সময় দেবেন না, এটা মোটেও ঠিক নয়। নিজেই ভেবে দেখুন তো, বিয়ে তো একজন মানুষকে করেছেন, কাজকে তো আর নয়? নিজের সমস্ত সময়টা কাজের পেছনে ব্যয় করলে দাম্পত্যজীবনে সমস্যা আসবেই!

নিজেদের মধ্যে রোমান্সটা শেষ হয়ে যেতে দেবেন না। দাম্পত্যকে সময় দিন। আগে যেভাবে সঙ্গীকে যেভাবে সম্বোধন করতেন, যেভাবে সময় কাটাতেন, যা যা উপহার দিতেন সেসব একেবারেই ভুলে যাবেন না। অল্প হলেও এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি করুন।

মতামতের গুরুত্ব :

দুজন মানুষ একসাথে থাকলে মতবিরোধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যাপারটা কীভাবে সামলাবেন তার উপরেই নির্ভর করবে আপনাদের মানসিক এবং পারিবারিক শান্তি।

যতই মতভেদ হোক মেজাজ গরম না করে নিজেকে সংযত রাখুন। ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে যুক্তি দিয়ে সমস্যা সমাধান করুন। ঝগড়া করে, কথা বন্ধ করে আলাদা বিছানা করে নেওয়া কোনো সমাধানের উপায় নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসুন। নিজের ভুল হলে তা স্বীকার করুন।

মতের মিল না হলেও সঙ্গীকে তাঁর যোগ্য সম্মানটুকু দিন। ছেলেমেয়ের সামনে তাঁকে ব্যঙ্গ করে কোনো কথা বলবেন না। সম্মান দিলে অবশ্যই সম্মান ফেরত পাবেন।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি :

খুঁত ধরতে তো সবাই পারে! সঙ্গীর ইতিবাচক বিষয়গুলোর দিকে নজর দিন। ছোট ছোট ব্যাপারগুলোকেও উড়িয়ে দেবেন না। সবার মধ্যে সব গুণ থাকে না, কিন্তু যেগুলো থাকে সেগুলোকে অবজ্ঞা করাটা অন্যায়। সঙ্গীর প্রশংসা করুন।

করণীয় :

সঙ্গীর সাথে যতই মনোমালিন্য হোক না কেন, তা নিয়ে অন্যের সাথে আলাপ-আলোচনা করবেন না। আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার অন্যে জানলে তা নিজেদের জন্যই অসম্মানজনক।

আপনার সঙ্গী সবসময় আপনার পছন্দমতো কাজ করবে এমন ভাবাটাই ভুল। তাই তাঁর কোনো কাজ পছন্দ না হলে দুম করে রেগে যাবেন না। তাঁকে যুক্তিসহকারে নিজের কথা বুঝিয়ে বলুন।

দিনের কিছুটা সময় একসাথে কাটান। হতে পারে সেটা রান্নাঘরের কাজ অথবা টিভি দেখা। এই একসাথে সময় কাটানোর ফলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগটা বাড়বে এবং সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হবে।

Related Posts:

  • বজায় রাখুন কর্মক্ষেত্র ও সংসারের ভারসাম্য সময়ের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে আমাদের চেনা পরিচিত সমাজ ও সংসার। এক সময় কর্মজীবী বলতে সংসারের পুরুষ মানুষটিকেই বোঝানো হত। কিন্তু এখন স্বামীর পাশ… Read More
  • রক্ষা করুন বন্ধুত্ব যদি জানতে চাই, পৃথিবীর সবচেয়ে নির্মল সম্পর্কের নাম কি? জানি, চোখ বুজে সবাই বলবে বন্ধুত্ব! বন্ধু মানে আত্মার আত্মীয়, যে আত্মীয়তা কখনো কখনো র… Read More
  • বয়ঃসন্ধির বিশেষ ক্ষণে... বয়ঃসন্ধিকাল - খুবই স্পর্শকাতর একটা সময়। শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পদার্পণের এই সময় বেশ অন্যরকমও বটে। এই সময় শরীর এবং মনে আসে নানা রকমের পরিবর্তন… Read More
  • দাম্পত্য কলহ যখন শ্বশুর-শাশুড়ির দীর্ঘদিন একসাথে থাকার পর জীবনসায়াহ্নে এসে অনেককেই দেখা যায় জীবনসাথীর সাথে ঝগড়া করতে! হয়তো তাঁরা আগে কখনোই ঝগড়া করেননি, শেষ বয়সে এসে করছে… Read More
  • পাত্র/পাত্রী নির্বাচনে ভেবে দেখুন বিয়ে... তা নিজের ইচ্ছাতেই হোক কিংবা পরিবারের, জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়েরই কিছু পছন্দ অপছন্দ থাকেই। আর সাথে পারিবারিক চাহ… Read More

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!