ঝগড়া
হলো বুঝি প্রিয় মানুষটির সাথে? কিংবা প্রিয় বন্ধুটির সাথে? হতেই পারে।
মানুষ মাত্রই প্রত্যেকেরই নিজের একটা আলাদা চিন্তা থাকে, অনুভুতি থাকে, তা
প্রকাশেরও থাকে একেবারেই নিজস্ব ধরন। কেউ নিজের মনের কথা বলে ফেলে সহজে,
কেউ বা না বলে চেপে রাখে চুপচাপ। কেউ তীব্র বিরোধিতা করে তার অপছন্দের যে
কোন কিছুর বিরুদ্ধে, কেউবা থাকে একেবারে নিশ্চুপ। কিন্তু তবুও কখনও কখনও
নিজের খুব কাছের কারো সাথেই ঝগড়াটা হয়েই। কথা কাটাকাটি, মান-অভিমান,কখনো
বা পরিস্থিতি সত্যিই সীমা ছাড়িয়ে যায়। তবুও একটা কথা কি জানেন, ঝগড়া
করাটাই ভালো! মনের ভেতর কষ্ট আর অভিমান চেপে রাখার চাইতে মন খুলে ঝগড়া
করে সম্পর্ক গুলো পরিষ্কার আর ভালোবাসাটা আরও মজবুত করে নেয়াটাই ভালো।
কেন
এমন বলছি, তাই ভাবছেন তো? একটু মনে করে দেখুনতো আপনি শেষ কবে আর কার সাথে
তুমুল ঝগড়া করেছিলেন? সে কি আপনার ভালবাসার কেউ, খুব প্রিয় কোন বন্ধু
কিংবা আদরের ভাই-বোনটি? মানে হলো আমরা তাদের সাথেই ঝগড়া করি যারা আমাদের
খুব আপন কেউ, খুব কাছের আর যাদের আমরা ভীষণ ভালোবাসি। ভাবুনতো একবার, যাকে
আপনি চেনেন না জানেন না, তার সাথে কি ঝগড়া চলে?একদম না! তার মানে হচ্ছে
এই যে ভালবাসার বিপরীতে কখনও কখনও নিজেদের মধ্যে আমরা ঝগড়াটা করেই ফেলি।
হয়ত খুব সামান্য কারনে, কিংবা সত্যিই কোন সিরিয়াস ইস্যুতে।
ঝগড়া
হলো মানে কিন্তু এই নয় যে ভালোবাসায় কোনও কমতি আছে। তাকে ভালোবাসেন
বলেই তো আপনি চান সে আপনাকে বুঝুক, আপনার চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিক।
যদি মনে হয় আপনি যা চাইছেন সে তা করছে না , কিংবা অনেকসময় সে হয়তো আসলে
বুঝতেই পারছে না... চট করে মেজাজটা খারাপ হয়ে হয়ে যায়। রাগ অভিমান বহু
কিছু বাসা বাঁধে মনের মাঝে। তারপর এক কথা দু’কথায় কথা বাড়ে আর বারতেই
থাকে। হয়তো অন্যদিন আপনার সঙ্গী/সঙ্গিনী মন দিয়ে আপনার কথা শোনেন,বোঝার
চেষ্টা করেন,আজ তারও মেজাজটা খারাপ ....ব্যাস, শুরু হয়ে গেল তুমুল কথা
কাটাকাটি। এক সময় তা রূপ নিল সিরিয়াস ঝগড়ায়।কি হয় না এমন? খুব হয়!
ঝগড়া
তো হয়ে গেল এবার তবে উপায়? এটাই হল আসল কথা। এমন হলে সবারই মনটা খারাপ
হয়ে যায়। কেউ কেউ কথা বন্ধ রাখেন দুই-এক দিন,কেউ বা এটা নিয়েই পরে
থাকেন সপ্তাহজুড়ে। কিন্তু তাই যদি হয়, একবার ভাবুন তো ব্যাপারটা খুব
ছেলেমানুষি হয়ে যাচ্ছে না? একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর সব মানুষের একটা
ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠে। অবশ্যই লজিক, বুদ্ধিমত্তা, সহনশীলতা এসব তারই একেকটি
অংশ। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যদি এসবের ব্যবহার নাই করলেন ,তবে এসব
প্র্যাকটিসের প্রয়োজনই নেই।
আগে
ভাবতে চেষ্টা করুন ভুলটা আসলে কার ছিল। যদি আপনার হয়, অবশ্যই নিজ থেকে
দুঃখপ্রকাশ করুন। আর যদি ভাবেন দোষটা তারই বেশি, হতেই পারে,কিন্তু তাই
বলে আপনি একটু আগ বাড়িয়ে গেলে কি আর এমন ক্ষতি হবে। বরং এখানেই কিন্তু
মজাটা বেশি। শুধু মুখে বললেই কি সরি বলা হয়? আপনিই ভালো জানেন ভালোবাসার
মানুষটিকে ঠিক কি দিয়ে সরি বলা যায়, তাই না? একই কথা আপনার অপর
ক্ষেত্রেও খাটবে। যাকে ভালবাসেন, তার পছন্দটা আপনারই ভালো জানা আছে।
তবে
আর দেরি কেন? মনে রাখবেন আপনার মনটা যেমন খারাপ লাগছে, তারও কিন্তু একই
দশা। কফির স্বাদে হোক, কিংবা সিনেমার টিকিটে, অথবা ঘরে বসে প্রিয় হাতের
গরম গরম স্নাক্স- যেটাই হোক না কেন, শুরুটা আপনি করলে শেষটা হবে কিন্তু
তার হাসিমাখা মুখ দিয়েই। তখন দেখবেন, ঝগড়াও কত মধুর লাগে। তাই সবসময়
এগিয়ে থাকুন এক ধাপ, ভালোবাসাতে আর ভালোবাসতে।
0 comments:
Post a Comment