দিনে অন্তত একবার, খাবার টেবিলে পুরো পরিবার!

খাবার টেবিলে একসাথে খাওয়ার তো মজাই আলাদা। বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি সবাই মলে একসাথে খাবার টেবিলে বসে কতই না গল্প করা হয় খেতে খেতে। বিশেষ করে সপ্তাহের ছুটির দিন গুলোতে এবং প্রতিদিন রাতের খাবারে তো একসাথে খেতে না বসলেই না। যতই ক্ষুধা লাগুক এক সাথেই খাওয়া চাই। 

কিন্তু বর্তমানে এই দৃশ্য পাল্টে যাচ্ছে। নাগরিক ব্যস্ততায় আর নিজের অবহেলার কারণে খাবার টেবিলে একসঙ্গে সবাইকে পাওয়া বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপার। কারো অফিস, কারো পড়াশোনা কিংবা কেউ বাইরে থেকে খেয়ে আসে। তাই একসঙ্গে সবাইকে একসাথে পাওয়াটা মোটামুটি অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

কেন আজকাল সবাই একসাথে খায় না?

অতি পুরাতন এই পারিবারিক প্রথা পরিবর্তন হওয়ার পেছনে কারণ কি? নানা ধরণের কারণ থাকতে পারে এর পেছনে। পাশ্চাত্যের প্রভাব, সময়ের অভাব, কর্মব্যস্ততা বেড়ে যাওয়া, মাদকাশক্তি, কম্পিউটার গেমের নেশা, টেলিভিশনের নেশা, মোবাইলে অতিরিক্ত কথা বলা ইত্যাদি আরো নানান কারণ থাকতে পারে একসাথে না খাওয়ার পেছনে।

 

পরিবারের সাথে একসাথে খাওয়ার উপকারিতাঃ

পুরো পরিবার অন্তত একবেলা একসাথে বসে খেলে সন্তান তার বাবা মায়ের কাছ থেকে অনেক কিছুর সম্পর্কে গল্পের ছলে জানবে। গবেষণা করে দেখা গেছে যে পরিবারের সাথে একসাথে খাওয়ার বিস্ময়কর উপকারিতা আছে। একজন আরেকজনের সাথে খাবার ভাগাভাগি করে খাওয়া হয়। ফলে পরস্পরের জন্য মায়া ও ভালোবাসা বাড়ে এবং নিজেদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় হয়। বাবা মার সাথে খেলে অনেক বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া হয় ফলে শরীর ভালো থাকে। তাছাড়া দিনে অন্তত একবার পরিবারের সাথে একসাথে হওয়া হয় বলে বিভিন্ন মাদক ও ধূমপান থেকে সন্তান কিছুটা হলেও দূরে থাকে।
পরিবারের সাথে খাওয়ার আরো কিছু উপকারিতা হলো-
  • মানসিক চাপ কমে
  • সন্তানের রেজাল্ট ভালো হয়
  • সবার জবাবদিহিতার একটি জায়গা থাকে বলে কেউ বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে।
  • পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়।
  • ছোটরা বড়দেরকে সম্মান দিতে শিখে।
  • সন্তান অনৈতিক কোনো কাজে জড়াতে ভয় পায়।
  • দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো থাকে।
  • ঘরে খাওয়ার প্রতি আগ্রহ তৈরী হলে বাইরে খাওয়া হয় না সহজে। এ কারনে প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হয়।
  • বাবা মা কে একসঙ্গে পাওয়াতে সন্তানের মধ্যে নিরাপত্তা বোধ তৈরী হয় ইত্যাদি।

 

কিভাবে পরিবারকে খাবার টেবিলে ফেরাবেন?

খাবার টেবিলে প্রতিদিন একসাথে খেতে হয়ে বাসায় কিছু নিয়ম চালু করতে হবে। তাছাড়া ছোট বেলা থেকেই সন্তানদেরকে অভ্যাস করিয়ে ফেলতে হবে বিষয়টিতে। তাহলে বড় হয়েও পরিবার ছাড়া খেতে ভালো লাগবে না তাদের কাছে। দেখে নিন কিভাবে খাবার টেবিলে আবার সবাইকে ফেরানো যায়।
  • প্রতিদিন যে কোনো একবেলার খাবারে একসাথে হবেন সেটা ঠিক করে নিন। সবচেয়ে ভালো হয়ে রাতের খাবারে একসাথে হতে পারলে। কারণ এসময়ে সবাই বাসায় থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • সবার পছন্দের খাবার রাখুন খাবার তালিকায়। তাহলে খাবার টেবিলে একসাথে খেতে আগ্রহী হবে সবাই।
  • খাওয়ার সময়ে টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন দূরে রাখতে বলুন সবাইকে। কারণ এগুলো মনোযোগ নষ্ট করে এবং পরিবারের একে অপরের সাথে মানসিক যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটায়।
  • খাবার টেবিলে কাউকে বকা ঝকা করা ঠিক না। এতে একসাথে খাওয়ার আগ্রহ কমে যায় এবং ভীতির সৃষ্টি হয়।

Related Posts:

  • শেষ বলে কিছু নেই . . . শেষ! এই শব্দটার মধ্যে একটা মায়া আছে। একটা কান্নাও আছে বোধহয়। শেষ বলে কি কিছু হয়? আবার অন্য ভাবে ভাবলে শেষ তো হয়ই। জন্ম শব্দের মধ্যেই তো তা… Read More
  • ভালোবাসার নারীর চোখে হয়ে উঠুন রোমান্টিক পুরুষ! আপনি একজন ব্যক্তিত্ববান কর্মব্যস্ত পুরুষ। সারাদিন এই কাজ ওই কাজের ব্যস্ততায় রোমান্টিকতা অনেকটাই যেন হারিয়ে গেছে আপনার ব্যক্তিসত্ত্বা থেকে। এ… Read More
  • শুভ কাটুক বন্ধু দিবস শুরুটা ছিলো ১৯১৯ সালে। প্রথম বন্ধু দিবসের প্রচলন করেন ‘হলমার্ক কার্ডস’ এর প্রতিষ্ঠাতা জয়সি হল। পরবর্তীতে ১৯৩৫ সালে আমেরিকান সরকার আগস্টের প্র… Read More
  • নতুন বৌমাদের প্রথম ঈদ! আর একটু পরেই গাড়িটা পৌঁছে যাবে সৈকতের গ্রামের বাড়ির গেটে। কিমির খুব ভয় করছে। শ্বশুরবাড়ীতে এটাই তার প্রথম ঈদ। একদিকে খুব মন খারাপ লাগছে মা ব… Read More
  • শাশুড়ি মায়েরা ভেবে দেখুন বউ শ্বাশুড়ির সম্পর্ক চিরন্তন। প্রত্যেক মেয়েকেই একদিন বাবার বাড়ি ছেড়ে শ্বশুড় বাড়ি চলে যেতে হয়, যেখানে শুরু হয় তাদের জীবনের নতুন অধ্যায়… Read More

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!