বিয়ের পর বন্ধুত্ব রক্ষা জীবনসঙ্গীকে কষ্ট না দিয়েই!

বন্ধুত্ব সম্পর্কটা জীবনের অমূল্য একটা জায়গা দখল করে রাখে আর সেই সাথে আপনার দাম্পত্য জীবনও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু অনেক সময় এ দুটোকে আমরা ঠিক ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারি না। ফলে একটি সম্পর্কের জন্যে অন্যটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিয়ের পর একটা নতুন জীবন শুরু হয়। তাই বন্ধুত্ব ও দাম্পত্যের মাঝে যে সুক্ষ্ম সীমারেখা সেটিকে মেনে চলুন। দুটি সম্পর্কই মজবুত হবে আর এদের মাঝে গড়ে উঠবে চমৎকার এক সেতুবন্ধন।
আপনারই জন্যে রইলো কিছু টিপসঃ

১) সম্পর্কের সীমা বজায় রাখুনঃ

বন্ধুত্ব আর দাম্পত্যকে গুলিয়ে ফেলবেন না। সীমা বজায় রাখুন। বন্ধুদের সামনে সঙ্গীর নিন্দা বা তার নামে অভিযোগ করতে যাবেন না, নিজেদের ভালো দিকগুলো তুলে ধরুন। আপনাদের প্রতি বন্ধুদের যেমন ভালো ধারণা তৈরী হবে তেমনি তাদের প্রতিও আপনার সঙ্গী নমনীয় থাকবেন।

২) উভয়পক্ষের বন্ধুকে গুরুত্ব দিনঃ

শুধু নিজের বন্ধুদেরই নয়, গুরুত্ব দিন আপনার জীবনসঙ্গীর বন্ধুদেরও। তাদের সাথে মেশার চেষ্টা করু্ন, ভালো লাগুক আর নাই লাগুক।আপনার সঙ্গী খুশী হবেন।

৩) নিজেদের জন্যে রাখুন আলাদা সময়ঃ

বন্ধুরা বেড়াতে আসলে কার না ভালো লাগে, তাই বলে নিজেদের জন্যে আলাদা সময় বরাদ্দ রাখতে ভুলবেন না। নিজেদের বিশেষ দিনগুলোয় বন্ধুরা বেড়াতে এলে কিছুটা সময় দিয়ে বুঝিয়ে বলুন আজ আপনারা আলাদা থাকতে চাইছেন কারণ আজ আপনাদের বিশেষ একটা দিন। বন্ধুরা অবশ্যই বুঝতে পারবেন।

৪) জীবনসঙ্গীকে গুরুত্ব দিনঃ

নিজের পার্সোনাল কম্পিউটার, মোবাইলের ওয়ালপেপারে বন্ধুদের সাথে ছবি দিতেই পারেন। কিন্তু মাঝে মাঝে নিজেদের কোন সুন্দর ছবিও দিন। অথবা হতে পারে সঙ্গীর কোন হাসিমুখ। নয়তো তিনি নিজেকে গুরুত্বহীন ভাবতে পারেন।কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় বন্ধুদের আগে সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করুন।সবাই মিলে ছবি তোলার সময় সঙ্গীকে পাশে নিন।

৫) আপনার স্ত্রী/স্বামী খারাপ আচরণের শিকার হচ্ছেন না তো?

খেয়াল রাখুন, আপনার বন্ধুরা আপনার স্বামী/স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করছে কিনা। সেক্ষেত্রে বন্ধুদের কিছু বলতে না পারলেও সঙ্গীকে সরি বলুন তাদের পক্ষ থেকে। আর চেষ্টা করুন তাদের সাথে যাতে আপনার সঙ্গীকে একটু কম মিশতে হয়। এ নিয়ে কথা বলুন বন্ধুদের সাথেও।

৬) সঙ্গীকে অবহেলা করবেন নাঃ

বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে গিয়েছেন দূরে কোথাও, একবার হলেও ফোন করে সঙ্গীর খোঁজ নিন। জীবনসঙ্গীসহ যদি সবাই মিলে কোথাও যান, চেষ্টা করুন দুজন একসাথে থাকতে, পাশাপাশি বসতে। এটা আপনার ভদ্রতা নয়, দায়িত্ব।

৭) বন্ধুদের সাথে ব্যক্তিগত জীবনের আলোচনা নয়ঃ

আপনার জীবনসঙ্গীর সাথে আপনাদের একান্ত জীবনযাপনের বিষয়গুলো আলোচনা করবেন না। এটি কেবল আপনার সঙ্গীর জন্যে বিরক্তিকরই নয় বরং এটি আপনার বন্ধুদের কাছে আপনাকে হাস্যকর করে তোলে এবং এ ধরনের মানসিকতা খুবই কুরুচিপুর্ণ।

৮) বন্ধুদের নিয়ে সন্দেহ নয়ঃ

আপনার সঙ্গীকে নিয়ে বন্ধুদের জড়িয়ে সন্দেহ করবেন না। যদি সেরকম কিছু মনে হয় তাহলে চিৎকার চেঁচামেচি না করে সেই বন্ধুটির সাথে দূরত্ব বজায় রাখুন ও সঙ্গীকে বলে দিন কিছু ব্যক্তিগত কারনে সেই বন্ধুর সাথে আপনি দূরত্ব রাখতে চাচ্ছেন এবং তিনিও যাতে আপনাকে সমর্থন দেন।

৯) জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুনঃ

বিয়ের আগে বন্ধুদের সাথে সারারাত আড্ডা বা ফোনালাপ করতেন সেটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু বিয়ের পর এই সময়টি আপনার সঙ্গীকে দিন। এটি তার প্রাপ্য এবং আপনাদের দাম্পত্য জীবনে এটি খু্বই গুরুত্বপূর্ণ।

১০) বন্ধুদের জন্যে সংসারে বাড়তি চাপ নয়ঃ

খেয়াল রাখুন আপনার অতিরিক্ত বন্ধুবান্ধবের জন্যে যাতে সংসারে চাপ না পড়ে। আপনাদের আড্ডায় যাতে আপনার জীবনসঙ্গী বা সন্তানের কাজ, পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
আপনার ছোট ছোট কিছু ঘটনাই সম্পর্কে ঝড় বয়ে আনে আবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু কৌশলই বন্ধুত্ব, দাম্পত্য, আত্মীয়তার মত সম্পর্কগুলোকে যার যার জায়গায় স্বতন্ত্র ও মজবুত রাখে। একটু খেয়াল রাখুন আর দেখুন সম্পর্কের উদযাপনে জীবন কত রঙ্গীন...।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!