আমরা সামাজিক জীব। জন্মের পর থেকেই আমরা নানা সম্পর্কের মাঝে বড় হই।
আমাদের বেড়ে ওঠার মাঝে নানা সম্পর্কের মানুষের গুরুত্ব রয়েছে। আমরা পরিবার
পরিজন, আত্মীয় স্বজন এমনকি বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছাড়া একটি দিনও চিন্তা করতে
পারি না, ভালোবাসার মানুষটি পাশে না থাকলে খারাপ লাগে। সম্পর্ক এমনই একটি
জিনিস।
কিন্তু আমরা সম্পর্ক সুস্থ ও সঠিক রাখার জন্য কী কী করি? আমরা অনেকেই
ভাবি না আমাদের কিছু কাজে হয়তো আমাদের অতি আপন মানুষগুলো দূরে সরে যাচ্ছে,
কষ্ট পাচ্ছে, সম্পর্কে দূরত্ব আসছে। আমরা আসলেই অনেক কাজ না ভেবেই করে
থাকি। আজকে চলুন দেখে নেয়া যাক এমনই কিছু কাজ যা আপনার যে কোনো সম্পর্ককে
নষ্ট করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
রাগের মাথায় আজেবাজে কথা বলা
রাগ মানুষের অনুভূতিগুলোর মধ্যে সব চাইতে ক্ষতিকর অনুভূতি যা সম্পর্কের
জন্য অনেক বেশিই খারাপ। সাধারণত রাগ উঠলে আমরা সাধারণ ভদ্রতা জ্ঞান হারিয়ে
ফেলি এবং রাগের মাথায় এমন অনেক কথা বলি যা সামনের মানুষটির মনে গভীর দাগ
কাটে। আপনি পরবর্তীতে নিজের ভুল বুঝে ক্ষমা চাইলেও তার মনের দাগ দূর হয় না।
রাগের মাথায় বলা এই ধরণের অযথা কথা আপনার জীবনের যে কোনো ধরণের সম্পর্ক
নষ্ট করে দিতে পারে। তাই নিজের রাগটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।
খুব বেশি লোভ করা
লোভ অনেক ধরণের পাপ কাজের জন্ম দেয়। মানুষের মনকে পুরোপুরি কলুষিত করে
দিতে পারে লোভ। এই জিনিসটি আপনার সকল সম্পর্কের জন্যও অনেক খারাপ। একজন
লোভী মানুষ নিজের সম্পর্কগুলোকে কখনোই মূল্যায়ন করতে পারেন না। লোভ লালসা
তাকে অন্ধ করে দেয়। কোনটি ঠিক কাজ কোনটি বেঠিক কাজ তা বোঝার ক্ষমতা মানুষ
হারিয়ে ফেলেন। কাছের মানুষগুলোকে কষ্ট দিতে বাঁধে না একেবারেই। এতে করেই
সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় ধীরে ধীরে।
ঈর্ষা ও হিংসা করা
কারো উন্নতি দেখলে মনের মধ্যে কিছুটা ঈর্ষার জন্ম হতেই পারে। কিন্তু এই
কাজটি যদি আপনি আপনার কাছের কোনো মানুষের সাথে করেন তবে আপনাদের সম্পর্ক
একেবারেই টিকে থাকবে না। তা সে যিনিই হোন না কেন। যদি আপনার নিজের পরিবারের
কাউকে আপনি ঈর্ষা করা শুরু করেন তবে এই ঈর্ষার আঘাতে পুরো পরিবারটিই ভেঙে
পড়তে পারে। নষ্ট হতে পারে আপনার স্বাভাবিক সম্পর্কের গতি।
অতিরিক্ত সন্দেহ করা
ভালোবাসার মানুষটিকে অনেক বেশি সন্দেহ করলে আপনাদের মধ্যে বিশ্বাসের
অভাব। এতে করে বোঝাই যায় আপনি তাকে কতোটা ভালোবাসেন। বিশ্বাস না থাকলে
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা অনেক যন্ত্রণার। এতে করে দুপক্ষই থাকেন অশান্তির
মধ্যে। এই কথাটি অন্যান্য সম্পর্কের জন্যও প্রযোজ্য। একজন অভিভাবকের উচিৎ
তার সন্তানের ওপর বিশ্বাস রাখা এবং তাকে সন্দেহ না করা। যদি কখনো মনে হয় সে
ভুল পথে পা বাড়াচ্ছে প্রথমে তা ভালো করে নিশ্চিত হয়ে নিয়ে তার সাথে কথা
বলুন। তাকে সন্দেহ করেন তা তাকে বুঝিয়ে দেবেন না। এতে হয়তো উল্টো
প্রতিক্রিয়া হবে। সুতরাং সাবধান।
সম্মান না দেয়া
একটি সম্পর্কের মধ্যে সম্মান থাকা সব চাইতে বেশি জরুরি। সম্মান না থাকলে
সেখানে ভালোবাসা, মায়া মমতাও থাকে না। আপনি বড় হয়ে যদি ছোটজনকে সম্মান
করতে না পারেন, সম্মান না দেন তবে সেও আপনাকে সম্মান করবে না। মনে রাখবেন
আপনি অন্যের প্রতি যে মনোভাব দেখাবেন সে তাই আপনাকে ফেরত দেবে। বিশেষ করে
ছোটরা তো বড়দের দেখেই শিখে থাকেন। আপনি সম্মান না করলে সেও আপনাকে সম্মান
করবে না এতে নষ্ট হবে আপনাদের সম্পর্কটি। আপনি যদি আপনার ভালোবাসার
মানুষটিকে সম্মানই না করতে পারলেন তবে আপনাদের মধ্যে ভালোবাসার কমতি রয়েছে।
সব সময় মনে রাখবেন আপনি সম্মান করতে পারলে সামনের মানুষটিও আপনাকে সম্মান
দেবেন।
কানিজ দিয়া
0 comments:
Post a Comment