বর্ষাকাল ঝুম বৃষ্টির সঙ্গে নিয়ে আসে বেশ কিছু অসুখ-বিসুখ। কারণ বর্ষার
স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। একটুখানি
সতর্কতা আপনাকে দিতে পারে অনেক রোগ থেকে মুক্তি। বর্ষাকালে বেশি হয় এমন
কিছু রোগের ব্যাপারে থাকুন সতর্ক।
ম্যালেরিয়া
ম্যালেরিয়ার অন্যতম লক্ষণ হলো কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, শরীর ব্যথা এবং ঠাণ্ডা
লাগা। ম্যালেরিয়ার ভয়াবহ পর্যায়ের লক্ষণগুলো হলো খিঁচুনি, জ্ঞান হারানো,
তন্দ্রাচ্ছন্নতা, গুলিয়ে ফেলা, হাঁটতে, বসতে, কথা বলতে বা আশেপাশের লোকজন
চিনতে না পারা। এর সঙ্গে থাকে বারবার বমি, মুখে ওষুধ খেতে না পারা, খাবার
বা পানি খেতে না পারা, গাঢ় রঙের প্রস্রাব বা প্রস্রাব না হওয়া, ডায়রিয়া,
ব্যাখ্যাতীতভাবে নাক বা মাঢ়ি দিয়ে রক্ত পড়া, খুব জ্বর, পানিশূন্যতা,
রক্তশূন্যতা এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া।
প্রতিরোধের উপায়
- -মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করুন
- -রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন
- -বাড়িতে মশার ওষুধ স্প্রে করুন
- -শরীরে মশারোধক ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন
- -মশার কয়েল ব্যবহার করুন
- -মশার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করুন
লেপটোসপাইরোসিস
এ রোগের লক্ষণ হলো অতিরিক্ত জ্বর, প্রচন্ড মাথাব্যথা, পেশি এবং তলপেট
ব্যথা, ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জণ্ডিস, ত্বক ও শ্লৈষ্মিক
ঝিল্লি থেকে রক্তপাত, বমি, ডায়রিয়া এবং দানা ওঠা।
প্রতিরোধের উপায়
- -আশেপাশের পশুশ্রেণীর বংশবৃদ্ধির দিকে খেয়াল রাখুন।
- -আক্রান্ত প্রাণী বা দূষিত পানিতে সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকুন এবং ফুটানো পানি পান করুন।
- -প্রদাহ থেকে রক্ষা পেতে ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন।
ডেঙ্গু
এর অন্যতম লক্ষণ হলো মাথাব্যথা, জ্বর, অবসাদ, পেশি এবং জোড়ে প্রচণ্ড
ব্যথা, স্ফীত গ্রন্থি এবং শরীরে দানা ওঠা। অন্যান্য লক্ষণগুলো হলো মাঢ়ি
থেকে রক্তপাত, চোখের মাঝে ভীষণ ব্যথা, হাত ও পায়ের তালু লাল হওয়া।
প্রতিরোধের উপায়
- -এ রোগের বাহক মশার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ বা ধ্বংস করুন।
- -পুরনো টায়ার, ফেলে দেওয়া ক্যান এবং ফুলের টবে জমে থাকা পানি ফেলে দিন।
- -সূর্য ওঠার দু ঘণ্টার আগে এবং সূর্য ডোবার দু ঘণ্টা আগে ঘরের ভেতর থাকুন। কারণ এ রোগের বাহক এডিস ঈজিপ্টি মশা দিনের এ সময়টাতেই বেশি কামড়ায়।
- -এ মশা দিনের যেকোনো সময় কামড়াতে পারে। এগুলো ঘরের কোনায় বা যেকোনো জায়গায় থাকতে পারে।
জণ্ডিস
জণ্ডিসের লক্ষণ হলো চোখ, ত্বক, জিহ্বা এবং প্রস্রাব হলুদ হয়ে যাওয়া,
খাবারে রুচি হারানো, যকৃতে চাপা ব্যথা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, মুখে
তিতা স্বাদ, প্রচন্ড দুর্বলতা, জ্বর এবং অযৌক্তিক ক্লান্তি।
প্রতিরোধের উপায়
- -লক্ষণগুলো দূর না হওয়া পর্যন্ত পর্যাপ্ত বিশ্রাম করুন।
- -কয়েক সপ্তাহের জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ফলের রস রাখুন এবং প্রতিদিন গরম পানিতে ডুশ করুন।
- -যকৃতের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে ঠিক করে তুলতে প্রচুর পরিমাণে লেবুর শরবত পান করুন।
- -তলপেটে ঠাণ্ডা ও গরম পানির চাপ পরপর দিতে থাকুন।
- -দিনে অন্তত দশ মিনিট গরম পানিতে ডুবে থাকুন। এতে ত্বক ও কিডনি থেকে পিত্তের রং দূর হয়ে যাবে।
ছবি- সংগৃহীত / নুসরাত জাহান চম্পা
0 comments:
Post a Comment