বিভিন্ন সময় জ্যামে অলস বসে থাকতে থাকতে চলতি পথে কিছু কিছু মানুষ আমাদের নজরে পরে, অনেক সময় ভালও লেগে যায় । হয়ত গাড়ী ছেড়ে দিল কিংবা সাহস না হওয়ার কারণে আমাদের ভাললাগাগুলো বলতে পারিনা । হতাশ হই ।
পৃথিবী অনেক ছোট আর গোল, হতাশ হওয়ার কিছু নেই । শুধু চেহারাটা মনে রাখুন কিংবা তার মাঝে যদি কোন পরিচিতি চিহ্ন থাকে সেটা মনে রাখুন, যাতে দ্বিতীয় বার দেখা হলে যেনো মনে রাখা যায় । আর মনে মনে ভাবুন সেদিন দেখা হলে কি বলবেন? কিভাবে জানাবেন আপনার মনের গোপন কথাগুলো ! যদি সেও বুঝতে পারে আপনার মনের কথা আর কোন একদিন কুয়াশার শিশির ভেজা পায়ে আপনার সামনে এসে হাজির হয়, তখন কি বলবেন তাকে, আজই তা ভেবে রাখুন । কারণ সময়মতো বলতে না পারার কারণে জীবনে অনেক কিছু হারিয়ে যায় ।
যদি কখনো দ্বিতীয়বার দেখা হয় সেই মানুষটার সাথে, সেদিন চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। চোখের ভাষা অনেক কিছু বলে দেয় । চোখের ভাষাই বলে দিবে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন, আর সে আপনার প্রতি দুর্বল কিনা। আন্তরিকতার সাথে মিথ্যা আর অপ্রসাঙ্গকি বিষয়গুলো এড়িয়ে নিজিস্ব স্টাইলে বোঝান আপনার মনে কথাগুলো । তবে খবরদার, অন্য কোনো দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন না । আপনার প্রতি তার আগ্রহ জন্মাবে এমনভাবে যতটা সম্ভব হেসে কথা বলার চেষ্টা করুন। যাতে সে আপনাকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে এবং আপনার সঙ্গে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে। পছন্দের মানুষটি কথা বলার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিন তার দিকে । সে যাতে বুঝতে পারে যে, আপনি তাকে সত্যিই খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন । এটা তার মনে দাগ কাটবে, তার পরিবার বা অন্যরা যখন তাকে অবহেলা করবে, সে তখন আপনাকে নিয়ে আলাদাভাবে ভাবতে শুরু করবে । তার মস্তিস্ক মনের কাছে আপনার সম্পর্কে ভাল বার্তা পাঠাবে, যা তাকে আপনার প্রতি ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেবে ।
কথার মধ্যে প্রাণখোলা মনের পরিচয় দিন। কারণ মনে রাখবেন প্রাণখোলা মানুষদের সবাই পছন্দ করে। পছন্দের মানুষটিকে আপনার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা খুলে বলুন। তাকে বোঝান, “অন্যরা হয়ত তোমাকে সাথে নিয়ে তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছাইতে চায়, আর আমার একমাত্র লক্ষই তুমি।” তার ভবিষ্যতের পরিকল্পনাগুলো গুরুত্বসহকারে শুনুন । আনুষ্ঠানিকতা বাদ দিয়ে তার সঙ্গে ঘন ঘন ফোনে কথা বলুন, তাকেও বলতে ও শুনতে দিন । দেখা করুন। তার ভালোলাগা মন্দলাগা বিষয়গুলো জানুন । জানুন তার জন্মদিন, প্রথম স্কুলে পা রাখার দিন, প্রথম শাড়ী পরার দিন এবং হটাত করে সেই দিনগুলিতে তাকে শুভেচ্ছা জানান । যদি তার বয়স বিশের নিচে হয় তাহলে- ফুল, কার্ড, চকলেট, আইসক্রিম, কলম, ডায়রী, প্যাড, উপহার দিন, আর সারাদিন ঘুরে বাইরে লাঞ্চ করুন । আর যদি তার বয়স বিশের উপরে হয় তাহলে- ফুল, দামী একটা জামা, শাড়ী, মোবাইল, হ্যান্ড ব্যাগ, কিছু বই । আর সারাদিন ঘুরে বাইরে তার পছন্দের মেন্যু দিয়ে লাঞ্চ করুন ।
আর এভাবেই- না বলে, বরং বুঝিয়ে দিন আপনার মনে কথাগুলো । কারণ অনেক সময় অনেক কথা বলা যায়না, আবার বললে হয়ত উত্তর দেওয়া যায়না, সেটা লজ্জা কিংবা জড়তার কারণেই হোক । কিন্তু বোঝানো যায় নিজের মতো করে । কিংবা না বললেও বোঝা যায় অনেক কিছু । ধরুন, কেউ যদি আপনাকে বলে “আমি তোমাকে ভালবাসি” আপনি অনায়াসে হাসতে হাসতে ‘না’ বলে দিতে পারবেন । কিন্তু কেউ যদি তার আচার-আচরন, কথাবার্তা, চলাফেরা, কিংবা গুরুত্ব দিয়ে আপনাকে বোঝায় “আমি তোমাকে ভালবাসি” আপনি তাকে ফেরাতে পারবেন না । কারণ কাউকে একদিনে বোঝানো যায়না, আর এই আস্তে আস্তে বোঝানোটাই মানুষকে দুর্বল করে তোলে । আর সেই বোঝানোটা যেদিন বুঝতে পারা যায়, সেদিন আর ফেরানো যায়না । সেদিন বাধ্য হয়েই আগুনে ঝাফ দিতে হয়, দেওয়া উচিতও । কারণ - পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে, যাদের কথা বা অনুরোধ উপেক্ষা করা যায়না । কারণ তারা হয়ত উপেক্ষা না করার মতো পরিবেশ তৈরি করেই উপস্থাপন করে কিংবা মানুষের মনকে পরিচালনা করার মতো ক্ষমতা নিয়েই তারা জন্মেছে ।
0 comments:
Post a Comment