মেয়েদের জীবন

মাঝে মাঝে ভাবতে অবাক লাগে, মেয়েদের জীবনটা খুবই অদ্ভুদ আজকাল অনেক মেয়ের ছাত্রী জীবনের রঙিন বিকেলটা শেষ হওয়ার আগেই  কেউ একজন এসে সান্ধ্য প্রদিপ জ্বেলে দিয়ে বলেচল খেলা শেষ কর, আমি তোমাকে নিতে এসেছি ভাবতে ভালই লাগে অপেক্ষার সময়গুলো বেশী দিন ফেলে রেখে বকেয়া ঋনের মত তামাদী করতে হয়নি আবার যখন সংসার জীবনে ছোট্ট ছোট্ট বিরহগুলি উকি ঝুকি দেবে তখন হয়ত মন খারাপ লাগে কারন ছাত্রীজীবনটা পরিপূর্নভাবে উপভোগ করা হলনা কিংবা মানসিকভাবে নিজেকে সাজানো হলোনা, কারো পরিপুর্ণ জীবন সঙ্গি হিসাবে পরিপূর্নভাবে প্রস্পুঠিত হওয়ার আগেই  কেউ একজন এসে জীবনের ফুলটা ছিড়ে নিল যখন খুশি সুগন্ধ নিচ্ছে, যখন খুশি ফুলদানীতে তুলে রাখছে মনে হবে পরাধীনতার বন্ধনে  কেউ একজন তোমাকে বেধে ফেলল, স্বাধীনতা বলে কিছু রইলনা তবে স্বাধীনতাই বলো, পরাধীনতাই বলো এটাই মেয়েদের আসল জীবন  

এইসব সংসারে বেশী ভাগ সুখি হওয়ার প্রবনতা খুব কম লক্ষ করা যায় কারন যে ফুল নিজের ইচ্ছায় না ফুঠে, তার পাপড়িগুলোকে জোর করে টেনে  কেউ ফুঠিয়ে দিল, তার কাছ থেকে পরিপূর্ন সুগন্ধ কিভাবে আসা করা যায় সেচ্ছায় বিলিয়ে দেওয়া, আর জোর করে নেওয়া অনেকটা ব্যবধান  সেচ্ছায় বিলিয়ে দেওয়ার মাঝে একটা ভাললাগা, আগ্রহ কাজ করে আর জোর করার মাঝে বাধ্যবাধকতা পরাধীনতা কাজ করে  বাধ্যবাধকতা পরাধীনতার মধ্য থেকে নিজেকে প্রস্ফুটিত করা যায়না। তাই সকল সংসারে (যেসব মধ্যা বয়সী পুরুষগন সদ্য যুবতী মেয়েদের নিয়ে সংসার শুরু করেন) অর্ন্তরনিহিত সুখ ধরা দেয়না। কারণ মেয়েটি কি করে বয়সী একটা লোককে তুমি দিয়ে সংসার জীবন শুরু করতে পারে ? রাস্তায় বেড়ুলে যাকে বাবার বয়সি মনে হয় তার সাথে কিভাবে মনের কথা শেয়ার করা যায় কিভাবে তার সাথে কিশোরী বয়সের দুষ্টামী ভড়া জীবন প্রকাশ করা যায় তারসাথে কিভাবে বলা যায়ওগো তুমি শুনছো কি ? “ 

এক্ষেত্রে আমাদের মধ্য বয়সী পুরুষদেরও ভাবতে হবে যে, আমরা যদি একটি  কিশোরী মেয়ের সাথে জীবনটা জড়াই, তাহলে তার সাথে যে বয়সের ব্যবধানটা আছে, তা আমাদের সংসার জীবনে প্রভাব ফেলবে দৈহিকভাবে হয়ত অধিকারের মাধ্যমে তার কাছাকাছি আমরা যেতে পারব, কিন্তু মানসিকভাবে ভালবেসে তাকে পরিপূর্নভাবে পাবনা কারন দেহটাইতো সব হতে পারেনা আর এই জন্য পরকীয়া প্রেমের জন্ম নেয়  তাছাড়া সংসার জীবনে দৈহিক সম্পর্কটাইতো সব নয়, তার বাইরেও আমাদের জীবন আছে একটা পচিশ বছরের মেয়ে যেকথা অতি সহজে বুঝবে, তা ষোল বা আঠার বছর বয়সের একটি মেয়ে পারবেনা বোঝা সম্ভব নয় তাহলে জীবনটা হবে রবীন্দ্রনাথে অপুর জীবনের মত  

এক্ষেত্রে আমাদের মেয়ের মা-বাবাকেও সচেতন হতে হবে সব মা-বাবাই মেয়ে ক্লাস নাইন/টেন উঠলেই বা  একটু বড় হলেই পাড়ার ছেলেদের অত্যাচারের ভয়ে বিয়ে দিয়ে দিতে চান একটা অজানা ভয় তাদের মধ্যে সব সময় কাজ করে, এই বুঝি আমার মেয়েটা বিপদে পড়ল, কিংবা তার কোন ক্ষতি হলো। তাই তখনই তারা পাত্র খুজতে শুরু করেন। মেয়েদের জীবনের কথা একবারও ভাবেনা, ওর একটা জীবন আছে, থাকতে পারে কোন ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া  কিংবা নিজেকে কারো ঘরনী হওয়ার জন্য তৈরি করার অপেক্ষা আর পাত্র খোজার সময় প্রথমই যে বিষয়টা ভাবেন, যে ছেলেকে প্রতিষ্টিত হতে হবে কালো হোক, বুড়ো হোক, তাতে অসুবিধা নেই। ছেলের টাকা থাকলেই হলো আর এখনকার সময় একজন ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে, কমপক্ষে তার বয়স ত্রিশের উপরে বা পয়ত্রিশ হতে হয় অসুবিধা নেই। ষোল বয়সের একটা মেয়েকে তুলে দিল, পয়ত্রিশ বছরের একটা বুড়ো মানুষের হাতে  এই মেয়েটি কি করে এই লোকটার সাথে স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে পারে ? কিভাবে তার কিশোরি তারুন্য মনের আচরনগুলোকে এই বুড়ো লোকটার সাথে প্রকাশ করে  

একটা মেয়েকে বিয়ের জন্য বা সংসার করার জন্য পরিপূর্ন হতে কমপক্ষে বিশ থেকে বাইশ বছর সময় লাগে সেক্ষেত্রে একটা ষোল বা সতের বছরের মেয়ে কি প্রথম দিন থেকেই এই ধরনের একটা বুড়ো লোককে নিজের জীবন সঙ্গী হিসাবে মেনে নিতে পারে ? আর বিয়ের পর কি বুড়ো লোকটা তাকে ভোগ করার জন্য এই পাচ বছর অপেক্ষা করতে পারবে ? তারমানে কি দাড়াল, সে তার জীবন যৌবন সম্পর্কে পরিপুর্নতা পাবার আগেই একজনের বুকের তলে পিষ্ট হয়ে গেল তার অঙ্গ প্রতঙ্গগুলি ধুমরে মুছরে গেল বিয়ের প্রথম রাতেই স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দেয়া আর হলোনা্ আর এই পাচ বছর ধরেই সবার সম্মতিতেই প্রতিদিন ধর্ষিত  হতে হয় এই কিশোরী মেয়েটিকে, যার চিৎকার চারদেয়ালের বাইরে পৌছায়না্  

অনেকদিন আগে একটা বইয়ে পড়েছিলাম, “ জীবনের প্রথমবার যার সাথে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় নীজের কুমারিত্ব বির্সজন কিংবা বিলিয়ে দেওয়া হয়, তাকে চাইলেও সারা জীবনে আর ভোলা যায়না। তার মুখটা অন্তরের মধ্যে খোদাই হয়ে থাকে তারপর যখনই সে কারো সাথে এই ধরনের দৈহিক সম্পর্কে জরান, তখনই তার প্রথম জীবনের সেই মানুষটা কিংবা তার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠে তাই জীবনের কুমারিত্ব বির্সজন দেবার মুহুর্তটি প্রতিটি মেয়ের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ন মানসিক শারীরিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া, তাকে ভালবাসার স্থানে বসানো, তাকে চেনা-জানা, তার শরীরের ঘন্ধ, তার আচার-আচরন, তার ব্যাহ্যিক ব্যবহার, তাকে আপন করে নেওয়ার চেষ্টা, এই সব বিষয় যখন তার মধ্যে একটা ভাললাগা সৃষ্টি হয়, তখনই মেয়েটি স্বেচ্ছায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে কারপন্য করেনা। এতদিন কি বুড়ো মানুষটার পক্ষে অপেক্ষা করা সম্ভব ? কিন্তু সেখানে এই পদক্ষেপগুলি না পেড়িয়ে অনেকটা জোর করেই,  কেউ যখন তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তা অনেকটা ধর্ষনের মত তখন মেয়েটা এই স্বামী রুপী মানুষটাকে  একটা হিংস্র আক্রমনাত্নক প্রানী হিসাবে তার অন্তরে ছবি তুলে রাখে যে ছবি তার পরবর্তী জীবনে সম্পর্কে বাধা হয়ে দাড়ায় তারপর মেয়েটি ধীরে ধীরে প্রতিরাতেই নিজেকে ধর্ষিতা ভাবতে শুরু করে তারপর যতই ভালবাসুক, কিংবা ভাল আচরন করুক সেই হিংস্র ছবিটা চোখের সামনে ভেসে উঠে যা সম্পকের মধ্যে ফাটল ধরায়, কিংবা ভেঙ্গে দেয়  যা আমাদের মা-বাবারা কোনদিন জানতেও পারেনা। এভাবেই অনেক সংসারে অশান্তির আগুন তীল তীল করে জ্বলে একদিন সংসারের অস্তিত্বটাকেই বিলিন করে দেয়  

প্রতিটি মেয়েরই ছাত্রী জীবন থেকে একটা স্বপ্ন থাকে, যে আমার স্বামী হবে আমার খুব ভাল বন্ধু, যে আমাকে বুঝবে, চিনবে আমার ইচ্ছাগুলোকে যথার্ত মুল্য দেবে আমার এতদিনের স্বপ্নগুলো তার হাত ধরেই পূরণ হবে তাকে পাশ নিয়েই এগিয়ে যাবো সুন্দর আগামীর পথে আর যখন এগুলো সত্যি হয়না, তখন মেয়েটি ভাবতে শুরু করে আমার জীবনটাই ব্যর্থ  হয়ে গেল তখন এলপাথারী চিন্তা তার মাথায় বাসা বাধতে শুরু করে আর তখন সংসারের বন্ধনটা নড়বড়ে হতে থাকে তাই অন্তত পক্ষে যেকোন মেয়ের ছাত্রী জীবনটা সফলভাবে রেড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া উচিত, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত হতে, সে সংসার করার জন্য হোক আর চাকুরী করার জন্য হোক হ্যা অজানা ভয় থাকবেই, তাই পারিবারিক শাসনের মধ্যেই মেয়েদের বড় করতে হবে  



লেখা চলছে ..................! 

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!