ফিকির নয় ফোনে


দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগেই। সামনে এই সংখ্যা আরো বাড়বে। সেই সঙ্গে মোবাইল হাতে রাস্তাঘাটে চিৎকার করে কথা বলা মানুষের সংখ্যা কতটা বাড়বে? কতটা বাড়বে মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি বা ট্রেনের তলায় যাওয়া মানুষের সংখ্যা? শুধু মোবাইল কিনলেই তো আর হবে না, তার সঙ্গে শিখে ফেলতে হবে কিছু ম্যানার্সও। না-হলে আপনার সাজ-পোশাক-চেহারার সঙ্গে রুচির তফাতটা কিন্তু প্রকট হয়ে উঠবে। আপনি বেশ সুপুরুষ অথবা সুন্দরী, কোনো গুরুত্বপূর্ণ পেশার সঙ্গেও যুক্ত, অথচ দামী সুদৃশ্য মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে এমন ভঙ্গিতে কথা বলেন যে, লোকে আপনাকে দেখেই ভুরু কুঁচকে ফেলে! এ বিষয়ে একটু সতর্ত তো সবারই হওয়া উচিত, তাই না? আর কী কী করলে সতর্ক হবেন?
 
ধরুন কারও সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। বা কেউ আপনার কাছে এলো। আপনি যদি সারাক্ষণ মোবাইলটা নিয়ে টেক্সট করে যান বা বেশিরভাগ সময়টা অন্যের সঙ্গে ফোনেই কাটিয়ে দেন, তাহলে সঙ্গীটি অসম্মানিত বোধ করবেন। তিনি আপনার ফোন কলের নিষ্ক্রিয় শ্রোতা হয়ে বসে থাকতে আসেননি। আর যদি একান্তই ফোন রিসিভ করতেই হয়, তাহলে তাকে ‘মাফ করবেন’ বলার সৌজন্যটুকু অন্তত দেখান। অথবা ফোনের ভয়েসমেল অ্যাকটিভেট করে রাখতে পারেন। মাথায় রাখুন, নিখুঁত ভদ্রতাই কিন্তু সমাজে মানুষের জনপ্রিয়তা বাড়ায়।

যতটা সম্ভব আস্তে নম্র স্বরে কথা বলার চেষ্টা করুন ফোনে। ফোনে জোরে কথা বলার বদ-অভ্যাস বেশির ভাগের মধ্যেই লক্ষ্য করা যায়। আপনি যত খুশি কথা বলুন না, অযথা আশপাশের লোকের কান ঝালাপালা করবেন কেন?

থিয়েটার, লাইব্রেরি, ক্লাসরুম, অফিস বা ধর্মস্থানের মতো সাইলেন্স-জোনগুলোতে মোবাইল সাইলেন্ট মোডে অবশ্যই রাখবেন। অন্যের বিরক্তির পাত্র হতে বোধহয় আমরা কেউই চাই না, তাই না?

কারো ওপর রাগ-অভিমান আপনার হতেই পারে। তবে ফোন কানে দিয়ে অথবা হেডফোন কানে গুঁজে হাত-পা নাড়িয়ে রাস্তায় চিৎকার করবেন না। আশপাশের লোকেরা তো আর ফোনের অপর পারের ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছেন না, তারা আপনাকেই অভদ্র মনে করবেন। তাছাড়া প্রায় সবার জীবনেই আজকাল এত সমস্যা যে বন্ধু-বন্ধুনি বা শত্রু-শত্রুনির সঙ্গে আপনার ঝগড়া শুনতে পথচারীরা আগ্রহী নন। গোপন, স্পর্শকাতর বিষয়গুলি নিয়ে রাস্তায় আলোচনা না-ই বা করলেন!

‘নিজের জীবন নিজের হাতে/প্রাণ দিও না (নিওনা) অপঘাতে’- এই উপদেশটা পড়েছেন কি? তাই গাড়ি চালাতে চালাতে বা রাস্তা ক্রস করতে করতে ফোনে একদমই কথা বলবেন না। কোনো এসএমএস বা ফোন জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তো আর হতে পারে না।

আসলে মোবাই ম্যানার্সের গোড়ার কথাটাই হলো, অন্যের ব্যক্তিগত জায়গাটাকে সম্মান করতে হবে। তাই প্রয়োজনে ফোন যদি রিসিভ করতেই হয়, চেষ্টা করুন, দু-তিন মিটার দূরত্বে গিয়ে তাড়াতাড়ি কথাটা সেরে আসতে। আর জেন-ওয়াইয়ের জন্য আরেকটা ছোট কথা বলে রাখি। এসএমএস কার্ড বা নেট কার্ড ভরানোর টাকাটা উসুল করতে হবে, ঠিক কথা! তাই বলে কারুর বাড়ি গেলে কিম্বা বাড়িতে গেস্ট এলে যদি কেবল ফেসবুকের আপডেটস দেখতে থাকো বা অন্যকে মুহুর্মুহু এসএমএস পাঠাতে থাকো, সেটা কি ভালো দেখায়? নিজেদের অজান্তেই খুব কাছের মানুষটার সঙ্গে এই ভাবেই তো বেড়ে যাচ্ছে দূরত্ব!
মোবাইল ফোনে এত ফিচার থাকে আসলে ফোনটাকে কন্ট্রোল করার জন্য! তার বদলে সেই ফোন যদি আপনাকে কন্ট্রোল করে, ভালো দেখাবে কি? সূত্র: ওয়েবসাইট।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!