শেষ বিকালে মুন্সিগঞ্জের পথে (১৩.১২.২০১৩)

শেষ বিকালে মুন্সিগঞ্জের পথে (১৩.১২.২০১৩)
(কাজী শামিম, আব্দুস সালাম, জূয়েল ও বেলাল) 



আজ শুক্রবার।  ছুটির দিন।  তাই সকালে একটু দেরী করেই ঘুম থেকে উঠলাম । শরীরটা তেমন ভালো ছিলনা কারণ গত রাতে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিয়াছিলাম তাই ভালো ঘুম হয়নি।  তাই ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়া আছি।  

কোনো শুক্রবারই শামিম ভাইকে রুমে পাওয়া যায়না, পরীক্ষা ও ক্লাস থাকা সত্তেও দেশের অবস্থা ভালো না থাকার কারণে আজ আমরা সবাই রুমে আছি।  তাই শামিম ভাই প্রথম প্লান করলো আজ আমরা শেষ বিকালে কথাও বেড়াতে যাব, তাই তার ইচ্ছাতেই সিদ্দান্ত নিলাম মুন্সিগঞ্জ যাব

দুপুরের ঘুম ও লাঞ্চ করতে অনেকটা সময় চলে গেল। বিকাল ৩ তার পর পর আমরা মুন্সিগঞ্জ এর উদ্দেশে রওনা হলাম।  আমাদের অফ্ফিসের সামনে থেকে অটো নিয়া যখন মোক্তারপুর ব্রিজ এ পৌঁছিলাম তখন বিকাল ৪ টা।  সূর্য পশ্চিম আকাশে চলে গেলেও আলো তখনও শেষ হয়নি।  ব্রিজটা মোটামুটি বড়।  আসে পাশে এটাই বড় ব্রিজ।  

শেষ বিকালের মিষ্টি আলো শরীরে মেখে সঙ্গিনীর হাত ধরে অনেক ছেলেমেয়েকেই ব্রিজের দুপাশে দাড়িয়ে থাকা দেখতে দেখতে সবুজ গাছের মাথার উপর দিয়ে আমরা ব্রিজ পাড় হয়ে গেলাম। যখন আমরা ব্রিজের উপরে উঠলাম দেখলাম ব্রিজের দুপাশে ছোট্ট ছোট্ট ফুসকার দোকানগুলো ব্রিজের শোভা আরো বাড়িয়ে দিয়াছে। নদীর কোল ঘেসে লম্বা বালির মাঠে বাচ্চাদের খেলা করার দৃশ, দীপের মাঝের সিমেন্ট কারখানা, নদীর জলে ভেসে থাকা নৌকাগুলো, আর ব্রিজের দুপাশে হেটে চলা সুন্ধরী মেয়েরা ব্রিজের সুন্ধার্য অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়াছে।  

দেখতে দেখতে ব্রিজ পার হয়ে আমরা কিছুদুর গিয়া নেমে গেলাম।  নতুন অটো নিয়ে আবার লঞ্চ ঘাটের উদ্দেশে যাত্রা করলাম। নদীর পার ঘেসে অটো চলছিল।  হটাত কিছুদুর যাওয়ার পর অটোওয়ালা অটো থামিয়া একটা মেয়েকে তুলতে চাইল, কিন্তু আমি দেখলাম, সামনের ছিটে দুপাশে দুজন, পিছনের ছিটে দুজন, মামাঝখানে আমরা দুজন বসতেই কষ্ট হচ্ছে, তাহলে এই মেয়েটা কোথায় বসবে ? 

এমন সময় ড্রাইভার বলল, ভাই ওনাকে একটু বসতে দেন। আমি বললাম, কোথায় বসবে ? আমরা দুজনে এখানে বসতে কষ্ট হয়, ওনি কোথায় বসবে আর তাছাড়া এখানেতো দুজন বসে ? সাথে সাথে মেয়েটি "আমি এখানে বসতে পারব, আমার কোনো সমস্যা হবেনা, তাছাড়া আপনি হয়ত জানেননা, আগে এখানে দুজন বসত এখন তিনজন বসে"আমি চিন্তা করলাম, মেয়েটাই যেখানে তার শরীরের অর্ধেকটা আমার শরীরের উপরে রেখে বসতে চায়, সেখানে আমার আপত্তি করার কোনো  মানেই নেই। বরং অচেনা পথে সেচ্ছায় কোনো মেয়ে মানুষের সঙ্গ পেলে মন্ধ কি ?

কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা লঞ্চ ঘাটের কাছে পৌছে গেলাম।  আমরা যখন ঘাটে পৌঁছিলাম। তখন আলো  নেই বললেই চলে। আমরা কিছুদুর নদীর তীরে হাটলাম। লঞ্চ ঘাটে পৌছে জূয়েল সাহেব একটা জরুরি কাজে চলে গেলে, আমি ও শামীম ভাই নদীর পাড়ের রাস্তা দিয়া হাটতে শুরু করলাম।  কিছুক্ষণ পর আমাদের সাথে মুন্সিগঞ্জ এর একজন (আমাদেরই সাবেক কলিগ) এসে যোগদিল।  জূয়েল সাহেবও চলে আসলো।  এখন আমরা মোট চারজন নদীর কিনারায় বাসের সাকোর উপরে দরিয়া আছি। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই পুর্বনির্ধারিতভাবে কাজী শামীম ভাই এর তিনজন আত্তীয়া এসে আমাদের সাথে যোগদিল। এখন আমরা সাতজন লঞ্চ টার্মিনালের উপরে দাড়িয়ে আছি। যে যার মত গল্প করে কাটাছি আর মাঝে মাঝে আমি ওদের ছবি তুলে দিচ্ছি।  কিছুক্ষণ এর মধ্যে বেলাল সাহেব এসে আমাদের সাথে যোগ দিল।  এখন আমরা সাত জন।  


আলো আর নেই। এখন গভীর অন্ধকার।  আমরা আড্ডার মাঝে মাঝে অনেক ছবি তুলে হোটেলে আসলাম। নাস্তাটা সেরে প্রায় ঘন্টা খানেক ওখানে কাটালাম । তারপর আমরা আবার অটো নিয়ে "সুইমিং পুল " - 'ফুডল্যান্ড ফাষ্টফুড এন্ড মিনি চাইনিস' এর  সামনে গিয়ে অনেকটা সময় পার করলাম, গল্প আর আড্ডায় কুয়াশা মিশ্রিত জোত্স্নার জলে স্নান করলাম। মুহুর্তগুলো ধরে রাখতে আমরা কিছু ছবি তুললাম।  

কুয়াষার বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কিছুদুর হেটে তারপর রিকশা নিয়ে আমরা শামীম ভাইর আত্তীয়াদের বাসায় পৌছে দিলাম।  একটু অপেক্ষা করলাম, তার গার্ডিয়ানের সাথে কুশল বিনিময় করে আবার রিকশা নিয়ে অন্ধকার আর কুয়াশার বুক চিরে সোজা মোক্তারপুর ব্রিজ।  

রিজার্ভ অটো নিয়ে আমরা বাসায় চলে আসলাম।  



যখন ফ্রি হবো আবার লিখব ............ 

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!