আপন কেউ করেছে বিশ্বাসঘাতকতা?

কখনোই বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হননি, এমন মানুষ বোধহয় সারা পৃথিবী খুঁজলেও পাওয়া যাবে না! কিন্তু যখন বিশ্বাসঘাতকতা করে কাছের মানুষ, তখন মনে আঘাত লাগে সবচেয়ে বেশি। প্রেমিক প্রেমিকাকে অথবা প্রেমিকা প্রেমিককে ধোঁকা দেয়া বা বিশ্বাসঘাতকতা করার ঘটনা এখন হরহামেশাই শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু ভালোবাসার মানুষই কি শুধু কাছের মানুষ? না, বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে ভাই, বোন, আত্মীয়, বন্ধু - যেকোনো কাছের মানুষ। এই বিশ্বাসঘাতকের রূপ ধারণ করতে পারে যে কেউ!

বিশ্বাসঘাতকতার আঘাত সামলে ওঠা যথেষ্ট কষ্টকর। আর তা যদি হয় কাছের মানুষের কাছ থেকে, তাহলে তো কথাই নেই! কিন্তু কী করবেন তখন? জেনে নিন এমন পরিস্থিতিতে করণীয় কিছু বিষয়।

 প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবেন না :

আপনার সাথে আপনজনের কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করলে ভুলেও প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবেন না। কারণ এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। এতে আপনার সাথে তার শত্রুতা বেড়ে যাবে বহুগুণ। সমস্যা সমাধানের পথও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই রাগের মাথায় কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না বা কাজ করবেন না। ক্ষমা করতে না পারলেও প্রতিশোধের ভাবনা মাথা থেকে বের করে ফেলুন। এতে ক্ষতি আপনারই।

ক্ষমা করুন, কিন্তু নজরও রাখুন :

ক্ষমা মহত্‍ গুণ। কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করার পর ক্ষমা চাইলে কাছের মানুষ ভেবে আমরা সহজেই হয়তো ক্ষমা করে দেই। এটাই ভাবি, মানুষ মাত্রই পরিবর্তনশীল, সে হয়তো অনুশোচনা করছে। একজন খারাপ মানুষের বোধোদয় হলে সে ভালো হতে চাইতেই পারে, কিন্তু তারপরও সাবধানে থাকা ভালো। আপনি তাকে ক্ষমা করে দিলেও তার গতিবিধি ওপর নজর রাখুন। এতে বুঝতে পারবেন আসলেই সে অপরাধবোধ করে কি না!

 সাবধানতা অবলম্বন করুন :

একবার যে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে, সে বারবার করতে পারে। তাই বিশ্বাসঘাতক আপনার যতই আপনজন হোক না কেন, সাবধানে থাকুন। একই পরিবারের সদস্য হলে বা একই সাথে থাকলে তার সামনে এমন কোনো কথা বলবেন না যাতে আপনার গোপনীয়তা প্রকাশ পায়। তার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাপারেও সাবধানে থাকুন। আপনার ব্যাপারে যতটা সম্ভব কম তথ্য লোকজনকে বলুন।

মন শক্ত করুন :

কাছের মানুষ যখন বিশ্বাসঘাতকতা করে, তখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে তো আপনারই ক্ষতি! তাই মন শক্ত করার চেষ্টা করুন। আপনি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে আপনার কপট শুভাকাঙ্খীরা আপনাকে আরো পেয়ে বসবে। আপনি যে বিশ্বাসঘাতককে তোয়াক্কা করেন না, এমন আচরণ করুন।

 নিজেকে ব্যস্ত রাখুন :

মন খারাপ করে চুপচাপ থাকলে কষ্ট আরো বেড়ে যাবে। তাই নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখুন। ব্যস্ততার কারণে আপনার মনোযোগ অন্যদিকে থাকলে আপনার মনোকষ্টও ধীরে ধীরে কমে যাবে। আর আপনার ব্যস্ততা দেখে শত্রুপক্ষের আশাভঙ্গ হবে যে, সে বা তারা আপনাকে খুব বেশি কষ্ট দিতে পারেনি।

দূরে থাকুন :

যদি সম্ভব হয় তাহলে বিশ্বাসঘাতকের সাথে যোগাযোগ একেবারেই বন্ধ করে দিন। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে তার সাথে দূরত্ব বজায় রাখুন। সে যদি আপনারই পরিবারের লোক হয়, তাহলে আচার-আচরণে বুঝিয়ে দিন যে, আপনি তার ব্যাপারে আগ্রহী নন।

সবাইকে অবিশ্বাস করবেন না :

বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হওয়ার সবচেয়ে নেতিবাচক দিকটি হলো, সবার প্রতি অবিশ্বাস চলে আসা। একজন আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে সবাইকে অবিশ্বাস করবেন না। সব মানুষ এক রকম হয় না, শুধু আপনার মানুষ চিনতে পারার দৃষ্টিটা থাকতে হবে। তাহলেই বারবার ঠকবেন না। কাউকে বিশ্বাস না করে জীবনে চলা অসম্ভব। তাই অন্যদের প্রতি আস্থা রাখুন।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!