রায়পুর-ফরিদগঞ্জ: কোমল পানীয়ের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে নিজ পুত্রবধূকে পর পর দুই রাত ধর্ষণ করার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে শ্বশুরের। গ্রাম্য শালিসে আদায় করা জরিমানার টাকা কাঁচা সড়ক সংস্কারের কাজে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাতবররা। এ ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে এলাকায়।এছাড়াও শালিস বৈঠকে শ্বশুরের কাছ থেকে ওই পুত্রবধূকে দেনমোহর বাবদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে নগদ ১ লাখ টাকা দেয়া হয় বাকি টাকা ঈদের পর দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় রায়পুর-ফরিদগঞ্জ উপজেলার বর্ডারবাজার সংলগ্ন চরমান্দারি গ্রামে ধর্ষকের বাড়িতে এ শালিস বৈঠক হয়। ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় মাতবররা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬নং রুপসা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন, ইউপি সদস্য মো. হুমায়ুন, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন, মো. হানিফ, মো. আবদুস সাত্তার কালু এবং রায়পুরের সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আওয়ামী লীগ নেতা আব্বাস উদ্দিন, কেরোয়া ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মো. রহমান খান, বাচ্চু ড্রাইভার ও ব্যবসায়ী ইমাম হোসেনসহ উভয় পরিবারের লোকজন।
ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, পুত্রবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় শ্বশুর মকবুল সন্দেহজনকভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। এজন্য তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দেনমোহর বাবদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা তার পুত্রবধূকে দেয়ার জন্য বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরে ওই গৃহবধূর অভিভাবকের হাতে নগদ ১ লাখ টাকা দেয়া হয়। বাকী টাকা ঈদের পর দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
চেয়ারম্যান আরও জানান, জরিমানার ৫০ হাজার টাকা ধর্ষকের বাড়ির সড়ক সংস্কারের কাজে ব্যয় করা হবে। বৈঠকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাসহ উভয় পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
নির্যাতিত গৃহবধূর খালু ইমাম হোসেন বলেন, মেয়েটির ওপর নির্যাতনের ঘটনায় জরিমানার টাকা সড়ক সংস্কারের কাজে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত আমরা মানিনা। আমরা লম্পট শ্বশুরের উপযুক্ত বিচার দাবি করেছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কারণে সুবিচার পেলামনা। আইনগত ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে রায়পুর উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের গাজীনগর এলাকার প্রবাসীর স্ত্রীকে তার শ্বশুর মকবুল হোসেন কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে বিচার চাওয়া হয়। তারা গৃহবধূর মেডিকেল টেস্ট ও মামলা করতে না দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকে। এ কারণে সুবিচার পায়নি নির্যাতিত গৃহবধূ ও তার পরিবার।
রায়পুর থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) নাছিরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের জানা নেই। নির্যাতিত গৃহবধূ বা তার পরিবার অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
0 comments:
Post a Comment