জেনে নিন ডালের পুষ্টিগুণ


ডালকে বলা হয় গরিবের মাংস। ডাল উদ্ভিজ্জ আমিষের প্রধান উৎস। যদিও গুণগত মানের দিক থেকে প্রাণিজ আমিষ উদ্ভিজ্জ আমিষের তুলনায় ভালো, কিন্তু সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করলে ডালের আমিষ গরুর মাংস বা খাসির মাংসের চেয়ে অনেক গুণে ভালো। কারণ ডালে ক্ষতিকর সম্পৃক্ত ফ্যাট নেই বললেই চলে। আমাদের দেশে নানা রকমের ডাল পাওয়া গেলেও মসুর, মুগ, কলাই ও ছোলা বেশি জনপ্রিয়। বাঙালির খাদ্যাভ্যাসের ভালো দিক হচ্ছে ডালের ব্যবহার। মানুষ ভাতের সঙ্গে ডাল খায়।

মজার বিষয় হলো, ভাত ও ডাল একসঙ্গে খেলে ডালের আমিষের গুণগত যে ঘাটতি থাকে তা পূরণ হয়ে যায়। সে জন্যই ছোট শিশুদের ডাল-চালের খিচুড়ি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। ডাল ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের জন্য সমান উপযোগী ও স্বাস্থ্যকর একটি খাবার।


স্বাস্থ্য তথ্য


ডাল আমাদের শরীরে আমিষের চাহিদা পূরণ করে দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধনে সহায়তা করে।


খাদ্য আঁশের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস হলো ডাল। সব রকমের ডালেই বেশ ভালো পরিমাণে খাদ্য আঁশ আছে। ফলে ডাল হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের জন্য আদর্শ খাবার। সেই সঙ্গে খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে বাড়িয়ে দেয় ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ।


ডালের শর্করা জটিল প্রকৃতির, তাই এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অন্যান্য খাদ্যশস্যের তুলনায় কম। ফলে এটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে।


ডালে একসঙ্গে আয়রন ও ফলেট দুটিই পাওয়া যায়। গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই দুটি উপাদান বেশ প্রয়োজনীয়। সেই সঙ্গে আয়রন রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।


যাঁরা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে চান তাঁরা ভাতের পরিমাণ কমিয়ে তার বদলে নিয়মিত ডাল খেতে পারেন। এতে ক্ষুধা হ্রাস পাওয়াসহ ভরাপেটের অনুভূতি থাকবে দীর্ঘক্ষণ।


শিশুদের জন্য ভাত-ডাল-সবজি-তেলের খিচুড়ির জুড়ি নেই। তাই দিনে কমপক্ষে একবার শিশুকে খিচুড়ি খাওয়ানো দরকার। এ ক্ষেত্রে সঙ্গে এক টুকরা লেবু চিপে দিয়ে বাড়াতে পারেন আয়রনের শোষণ ক্ষমতা। কলাই ও ছোলার ডালে নানা রকমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট আছে, যা কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।


প্রায় সব রকমের ডালেই প্রোটিয়েজ ইনহিবিটর নামের এক ধরনের উপাদান আছে, যা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।


সতর্কতাযাদের ডায়াবেটিস আছে ও ওজন বেশি তাদের পরিমাণের প্রতি দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।


ডালে পিউরিন নামের এক ধরনের উপাদান আছে, যাদের গাউট অথবা কিডনিতে পাথর আছে তাদের সতর্কতার সঙ্গে ডাল খাওয়া উচিত।


এ ছাড়া ডাল খেলে অনেকের অ্যালার্জি বা বদহজম হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রান্না করার আগে ডালকে ছয় থেকে আট ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!