শারদ পোশাকের রকমারি


বাজল পূজার ঢাক। ষষ্ঠী থেকে দশমী—টানা পাঁচ দিনের শারদ উৎসব। পোশাকে ভিন্নতা না থাকলে কী জমে! দিনভেদে থাকবে পোশাক। তবে যে যা-ই বলুক, বাঙালির উৎসব মানে নারীর পরনে শাড়ি আর পুরুষের গায়ে পাঞ্জাবি। এই চিরন্তন পোশাকই আনে উৎসবের আমেজ। অবশ্য তরুণ-তরুণীদের নজর সালোয়ার-কামিজ ও ফতুয়া-জিনসে।

শরতের এই সময়টায় আবহাওয়ার আচরণ থাকে রহস্যময়। ক্ষণে বৃষ্টি, ক্ষণে রোদ। তাই পোশাক বাছাইয়ে প্রত্যেকেরই সচেতন হওয়া চাই। আরামদায়ক হবে বাহারি রঙের সুতির হালকা পোশাক। এতে উৎসবের আমেজ থাকবে, প্রশান্তিও থাকবে ষোলআনা।

শৈল্পিকফ্যাশন ডিজাইনার মণিদীপা দাশ বলেন, ষষ্ঠীতে দেবীর বোধনে পূজা শুরু হলেও জমে ওঠে সপ্তমী থেকে। এ জন্য সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পোশাক হওয়া চাই জমকালো। আর পূজার আয়োজন জমে রাতে তাই মেয়েরা ভারী কাজের সিল্ক ও মসলিনের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। তরুণীরা সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি হাতের কাজের নকশাদার কুর্তা ও ফতুয়ার সঙ্গে লেগিংস বা জিনস পরলে ভালো মানাবে। দিনের পোশাকে হালকা কাজের পোশাকই নজর কাড়বে। তবে বিশেষ আকর্ষণ থাকে দশমীর পোশাকে। তাই ওই দিন গরদের শাড়ির সঙ্গে গাঢ় রঙের ব্লাউজে ফুটে উঠবে আভিজাত্য। ছেলেরা পাঞ্জাবির সঙ্গে ধুতি, চুড়িদার কিংবা জিনস পরে উৎসব উদ্যাপনে শামিল হতে পারেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সুতি, ভয়েল, দোপিয়ান, মসলিন, গরদ ও বিভিন্ন সিল্কের কাপড়ের শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া এবং সালোয়ার কামিজের সমাহার। সবখানে পোশাকের রঙে লাল-সাদার প্রাধান্য। পাশাপাশি রয়েছে উজ্জ্বল রং—গোলাপি, ফিরোজা, বেগুনি, আকাশি, সবুজ, হলুদসহ হালকা রঙের পোশাকও।

শাড়িতে দেখা গেছে, অ্যাপ্লিক, লেইস, বিডস, এমব্রয়ডারি, ওয়াশ, হ্যান্ডপেইন্ট, ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট অর্থাৎ মিশ্র মাধ্যামের কাজ। নকশায় ব্যবহার করা হয়েছে টেরাকোটা, ঐতিহ্যবাহী নানা ফর্ম, ফুল, পাখি, লতাপাতা ও জ্যামিতিক ধরন। এ ছাড়া টারসেল, কারচুপি ও সিকোয়েন্সের ব্যবহারও রয়েছে। তরুণীদের কামিজে পূজায়ও লম্বা ঝুলের চল। ছেলেদের পাঞ্জাবিতে বরাবরের মতো খাটো ও সেমি লং ডিজাইন চলছে বেশি।

শিশুদের পোশাকে রয়েছে মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, টপস, স্কার্ট, ফ্রক, শাড়ি, ছেলেদের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট ইত্যাদি। বাচ্চাদের পোশাকে আরামের দিকটাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রঙের ক্ষেত্রেও প্রাধান্য পেয়েছে উজ্জ্বল ও হালকা রং।

পিণনকেনাকাটা জমজমাট টেরি বাজার, বিপণিবিতান, রিয়াজউদ্দিন বাজার, মিমি সুপার মার্কেট ও স্যানমার ওশান সিটিতে। বিভিন্ন শ্রেণীর সব বয়সী ক্রেতা এসব বিপণিকেন্দ্রে পূজার কেনাকাটা সারছেন। ভিড় বেশি এক ছাদের নিচে সব পোশাকের দোকান মাসুম ক্লথ স্টোর, পরশমণি, অর্ণব, মনে রেখ, জাভেদ, বিগ বাজার প্রভৃতিতে।

টেরি বাজারের পরশমণিতে কেনাকাটা করতে আসা চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রী অঞ্জনা ঘোষ বলেন, ‘মূলত ঈদের সময় যেসব ডিজাইন এসেছে ঘুরেফিরে সেগুলোই। তার পরও দশমীর জন্য জমকালো কাজের সালোয়ার-কামিজ কিনেছি। অন্য দিনের জন্য ফতুয়া দেখছি।’

এদিকে বুটিক হাউস দেশী দশ, আড়ং, শৈল্পিক, নবরূপা পিণন, মিয়াবিবি, সালসাবিল, ডলস হাউস, শ্রেয়া-মুনমুনস, নক্ষত্র, বাঙালি বাবু, রমনীয়া ও চারু চট্টগ্রামেও ঢুঁ মারছেন ক্রেতারা।

আফমি প্লাজার দেশী দশের বুটিক হাউস রঙের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পূজার কেনাকাটা আগের তুলনায় অর্ধেক। আরও কয়েক দিন তো আছে, আশা রাখছি এই সময়টাতে বিক্রি বাড়বে।’

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!