ননদ ভাবীর বন্ধুতা

বিয়ে মানেই একটি মেয়ের জীবনে আমূল পরিবর্তন!

চিরচেনা অভ্যাসে ভরা একান্ত আপন বাবার বাড়ি ছেড়ে মেয়েটি যখন স্বামীর বাড়িতে যায়, তখন সে হয়তো একটা রূপকথার রাজ্যে থাকে। কিন্তু সময় গড়িয়ে যেতেই বাস্তবতা সামনে এসে দাড়ায়। একটু একটু করে তিক্ত হয়ে ওঠে সম্পর্কগুলো। তখন না ভালোবাসা থাকে আর না দায়িত্ব পালন করতে ভালো লাগে। তবে একটু চেষ্টা করলেই সহজে নিজেদের সম্পর্কগুলোকে সুন্দর করে তোলা যায়।

এই যেমন ননদ ভাবীর সম্পর্কের কথাই ধরুন। একটু চেষ্টা করলেই এই সম্পর্ককে করে তোলা যায় বন্ধুত্বের। তাহলে দুজনের মধ্যে যেমন ভালো সম্পর্ক বজায় থাকবে তেমনই পরিবারের অন্যরাও কোয়ালিটি টাইম পাবে। সহজ কিছু পদক্ষেপ নিলেই বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে নেওয়া যায় সম্পর্কটাকে।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে ননদ ভাবীর সম্পর্কের সেই চিরাচরিত দৃশ্যপট বদলেছে। এখন ঘরে ঘরে প্রতিটি মেয়েই হয়ে উঠছেন শিক্ষার আলোয় আলোকিত। ফলে সেই চিরায়িত তিক্ততার মাত্রাটা কমে এসেছে অনেকটাই। তবুও এর মধ্যেও যেভাবে নিজেদের সম্পর্ককে আরো সুন্দর করে তোলা যায় সেই বিষয়েই রইলো আলোকপাত।

১. বাড়ির কাজ কিন্তু খুব কম থাকে না। সেই সব কাজ ননদ ভাবী মিলে করতে পারেন। ননদের ওপর রাগ করে সব কাজ একাই করতে যাবেন না। তাহলে দুজনের মধ্যে একসাথে বেশিক্ষণ থাকা হবে বলে সম্পর্কে আরো উন্নতি আসবে।

২. সবার পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব নয়। ঘর গোছানোর মতো হালকা কাজে হলেও ননদের উচিত ভাবীকে সাহায্য করা। ভাবীর রুম পরিস্কার করতে অসঙ্কোচ হলে বা অনেক সময় সেটা না পারলেও নিজের ও মায়ের ঘর পরিস্কার করতে পারেন বাড়ির ননদ। আর আপনি ভাবী হলে মাঝে মাঝে নিজের ঘর গোছানোর সাথে সাথে ননদের ঘরটাও হালকা গুছিয়ে দিতে পারেন। দেখবেন পরে সে নিজেই হয়তো আপনাকে সাহায্য করার কথা বলবে।

৩. মা-বাবার সেবা যতœ করা সবারই উচিত। তা সে মা-বাবাই হোক বা শ্বশুড় শাশুড়ী। কাজগুলো দুজনে মিলেই করতে পারেন। ভাবী হলে ননদকে বলুন সাহায্য করতে। আর আপনি ননদ হলে দেখুন আপনার ভাবীর কষ্ট হয়ে যাচ্ছে না তো! তাকে একটু সাহায্য করলে মা-বাবার যেমন সেবা করা হবে তেমন ভাবীরও ভালো লাগবে।

৪. ননদ হয়ে ভাবীকে পর ভাববেন না। তিনিও তো আপনারই মতো মানুষ। একা সব কাজ তার মাথায় না চাপিয়ে বাড়িতে আত্বীয়-স্বজন বেড়াতে এলে ঘরের কাজে ভাবীকে সাহায্য করুন। আর আপনি ভাবী হলে ননদকে ডেকে নিয়ে আপনার সাহায্য লাগবে সেটা জানান।

৫. ভাবীর সন্তান হোক বা ননদের দুজনের দুজনকে সমানভাবে ভালোবাসা উচিত। তারাতো আপনারও আপনজন। তাই উভয়েই উভয়ের সন্তানদের বেশী বেশী আদর করুন। পারলে তাদের পড়ালেখায় সাহায্য করুন।

৬. সম্পর্ক যদি হয় বন্ধুত্ব তাহলে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আর সেই বন্ধুত্বের সম্পর্কটা গড়ে নিতে হয়। তাই দুজনে দুজনের সাথে ব্যক্তিগত কোন জটিল বিষয় থাকলে সেসবও শেয়ার করুন। একে অপরের পরামর্শ নিন। দেখবেন সম্পর্কটা আরো মধুর হয়ে উঠছে।

৭. সবারই কিছু ভালো গুণ থাকে। সেসব খুজে বের করুন। একে অন্যের ভালো গুণগুলোর প্রশংসা করুন। কারো কাছে একে অন্যের বিরুদ্ধে কথা না বলে একে অন্যের কাজের প্রশংসা করুন। দেখবেন সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য উন্নতি আসবে।

৮. ননদ পড়াশুনা ঠিকমত করছে কি না তদারকি করুন। বিবাহিত ননদ বাপের বাড়ীতে এলে তাকে একটি সুন্দর পরিবেশ দিন। যেমনটা আপনি বাবার বাড়ি গেলে চান।

৯. মাঝে মাঝে নিজের কিছু কাজে ননদকে নিন। যেমন তাকে নিয়ে শপিং করতে যান। একে অন্যকে মাঝে মধ্যে উপহার দিন।

১০. একে অন্যের ছোট ছোট ভুল-ক্রটিগুলো ক্ষমা করার চেষ্টা করুন। সব কথা বড় করে তুলবেন না। ছোট ছোট অন্যায় ক্ষমা করতে পারলে সম্পর্ক আরো সুন্দর হয়ে উঠবে।
একটু চেষ্টা করলেই আপনাদের সম্পর্ক আরো সুন্দর হয়ে উঠবে। এভাবেই একটু একটু করে বাড়িটা হয়ে উঠবে চাঁদের হাট।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!