ভালোবাসার সম্পর্ক যে ১০টি চমৎকার প্রভাব ফেলে জীবনে!

মাঝে মাঝে হয়তো ভাবেন যে একা থাকাই ভালো। একটা সম্পর্কে নিজেকে জড়ালে শুধু শুধু ঝামেলাটাই বাড়ে। নিজের ঝামেলা নিজেই বাড়িয়ে লাভ কী- এই ভেবে একা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ ভাবেন প্রেম করা কিংবা বিয়ে করার কি দরকার। আপনার সাথে তো বন্ধুরা আর পরিবার আছেই। কী দরকার আর ভালোবাসায় জড়ানোর, বেশ ভালোই তো আছেন!
ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ালে ঝামেলা বাড়ে না বরং বেশ কিছু ঝামেলা কমে যায় আপনার। একটা সুন্দর ভালোবাসার সম্পর্ক আপনার জীবনটাকে আরো সুন্দর ও সহজ করে দিতে পারে। ভালোবাসায় জড়ানোর অনেক গুলো ভালো দিক আছে। জেনে নিন এমনই কিছু ভালো দিকের কথা।

সব সময় সঙ্গ পাওয়া যায়

গত বছর ফাল্গুনের প্রথম দিনে কিংবা ঘুড়ি উৎসবে আপনার বন্ধুদেরকে হাজার বার বলেও ঘুরতে বের হতে রাজী করাতে পারেননি। আপনি বলছেন মজা হবে, কিন্তু তাঁরা বলছে তাঁরা এতো ভীড়ে কোথাও যাবে না। দ্বিমতের কারণে শেষ পর্যন্ত মন খারাপ করে কোথাও যাওয়া হলো না। কিন্তু আপনি যখন একটি সম্পর্কে আছেন তখন আপনার ইচ্ছাগুলো পূরণ করে মন ভালো করে দেয়ার জন্য সবসময়েই একজন থাকবে পাশে। আপনি যেখানে যেতে চাইবেন প্রিয় মানুষটির সামর্থ্য থাকলে আপনাকে নিয়ে যাবেন সেখানে। তাঁর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এই ব্যাপারে। কেবল মাত্র আপনার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এবং আপনাকে খুশি করার জন্যই তাঁর চেষ্টা থাকবে আপনার সব ইচ্ছে পূরণ করার।

একজন মানুষ সবসময়েই আপনার পাশে আছে- এই নিশ্চয়তা

অফিসের ঝামেলা, বন্ধুদের সাথে ঝগড়া কিংবা পারিবারিক কোনো সমস্যায় আমরা অনেক সময়েই ভেঙ্গে পরি। এই সময়ে আমাদের পাশে একজন থাকে সবসময়েই। আর সে হলো আমাদের প্রিয় সঙ্গীটি। মাঝে মাঝে এমন কিছু কথা থাকে যেগুলো সবচেয়ে কাছের বন্ধুটিকেও বলা যায় না। তাছাড়া জীবনের নানান ব্যস্ততায় ধীরে ধীরে বন্ধুদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়। তখন আমাদের ভালোবাসার মানুষটিই সুখে দুঃখে আমাদের পাশে থাকে এবং আমাদেরকে সাহস দেয়। তাঁর সাথেই তখন সমস্যা গুলো বলা যায় এবং সেগুলোর সমাধান বের করা যায়।

আত্মবিশ্বাস বাড়ে

সবসময়ে একটি মানুষের থেকে ভালোবাসা এবং সমর্থন পাওয়ার ফলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে ভালোবাসা এবং প্রশংসা পেয়ে নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা হয় এবং আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। সবসময় আপনার সব কিছুতে প্রশংসা করে এমন সঙ্গী পেলে জীবনের চলার পথে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

নৈকট্য

আপনি যখন একটি সম্পর্কে আছেন তখন আপনার সঙ্গীর সাথে আপনার শারীরিক ও মানসিক নৈকট্য বাড়ে। সারাদিন অনেক ধকল এবং ঝামেলার পড়ে একটা মানুষের হাত ধরে কাঁধে মাথাটা রাখতে নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগবে? কিংবা খুব খারাপ কোনো স্বপ্ন দেখার পর ঘুম থেকে উঠে বিছানায় পাশে কেউ থাকলে নিশ্চয়ই বেশ সাহস পাবেন তাই না? আপনার সঙ্গীর সাথে আপনার নৈকট্য জীবনটাকে অনেকখানি সহজ করে দেয়।

সাহায্যের হাত পাওয়া যায়

আপনার রুমমেটের থেকে আপনার সঙ্গী নিঃসন্দেহে অনেক বেশি সাহায্য করতে পারে আপনাকে। ধরুন আপনি সারাদিনের সব কাজকে দুই ভাগে ভাগ করে নিয়েছেন দুজন মিলে। কিন্তু আপনি হয়তো খুব ক্লান্ত কিংবা শরীরটা ভালো লাগছেনা আপনার। এই সমস্যায় আপনার রুমমেট আপনার ভাগের কাজটা করতে না চাইলেও আপনার সঙ্গী কিন্তু আপনাকে বিশ্রাম করতে বলে আপনার পুরো কাজটাই সম্ভব হলে করে দিবে।

নিজেকে জানতে পারবেন

একটি সম্পর্কে জড়ালে অন্তত প্রথম কয়েকটি মাস হলেও মানুষ বেশ চিন্তা ভাবনা করে কাজ করে। ছোট ছোট ব্যাপারেও ভালো কাজ করার চেষ্টা করে এবং ধৈর্য্য ধারণ করে। এছাড়াও মানুষ নিজের অনেক দোষ ত্রুটি শুধরে নেয়ার চেষ্টা করে এসময়। কেউ যখন আপনাকে ভালোবাসে তখন আপনার স্বভাব এবং অভ্যাসগুলো দেখেই ভালোবাসে। তাই তাঁর কাছে নিজেকে আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য হলেও মানুষ নিজের দোষ গুণ গুলো জানার চেষ্টা করে এবং ভুল ত্রুটিগুলো শুধরে নেয়।

দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হবে

প্রেমে পড়লে সবার ভেতরেই কোমলতার সৃষ্টি হয়। যা কিছুই দেখা হয় সবই ভালো লাগে এসময়ে। খুব ছোট ছোট বিষয়েও আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় প্রেমে পড়লে। যে পৃথিবীটাকে এতোদিন বিরক্ত লাগতো সেই একই পৃথিবীটাকে হঠাৎ করেই ভালো লাগা শুরু করে। ছোট ছোট বিষয়েই হাসি ফুটে ওঠে আপনার মুখে। জীবন সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হয়ে যায় এসময়ে। এতো সুন্দর অনুভূতি গুলো প্রেমে না পড়লে পাওয়া যায় না সাধারণত।

সব সময় সেজে থাকতে হবে না

আপনি যখন একা কিংবা সঙ্গী খুঁজছেন তখন যে কোনো অনুষ্ঠানে যেতে কিংবা বন্ধুদের সাথে বেড়াতে বের হলে একটু বেশিই সেজে গুজে বের হতে হয় আপনাকে। কারণ স্বীকার করুন আর নাই করুন আপনার অজান্তেই আপনি বিপরীত লিঙ্গের কাছে নিজেকে আকর্ষনীয় করে তুলতে চাইছেন। কিন্তু আপনি যখন একটি সুন্দর সম্পর্কে জড়াবেন তখন একটা সময়ে আপনার আর সারাক্ষণ সাজগোজ নিয়ে ভাবতে হবে না। খুব সাধারণ পোশাক, হালকা সাজেও আপনি বেশ স্বাচ্ছন্দেই আপনার সঙ্গীর সাথে দেখা করতে পারবেন। আপনাকে দেখতে কেমন লাগছে কিংবা আপনাকে দেখে কে কি ভাবছে এতো সব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না আর।

মানসিক চাপ কমবে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে একটি সুন্দর সম্পর্কে জড়ালে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়। হয়তো আপনার সম্পর্কটা অনেকদিনের পুরোনো হয়ে যাওয়াতে বেশ একঘেয়ে হয়ে গিয়েছে। তাও ছোট ছোট ভালো লাগা ভালোবাসা তো আছেই। আপনার সঙ্গীর সাথে সব কথা মন খুলে বলা, কোথাও ঘুরতে যাওয়া কিংবা খুনসুটি করার মধ্যেও আছে মানসিক চাপ কমানোর জাদু। ছোট ছোট রসিকতা কিংবা ভালোবাসার মূহূর্তগুলোও মানসিক চাপ কমিয়ে দেয় একেবারেই।

ভালোবাসা এবং নিরাপত্তা পাবেন

বেঁচে থাকার জন্য দরকার ভালোবাসা, মানসিক সহায়তা, যত্ন এবং নিরাপত্তা। আপনি যখন আপনার পরিবারের সাথে আছেন তখন আপনি এই চারটিই পাচ্ছেন। কিন্তু সারাজীবন তো আর পরিবারের সবাই থাকে না। তখন সাথে থাকে আপনার সঙ্গী। আর বেঁচে থাকার জন্য জরুরী এই চারটি বিষয়ই তখন আপনি আপনার সঙ্গীর কাছ থেকে পেয়ে থাকেন। তাই ভালো থাকার জন্য এবং জীবনটাকে আরো একটু আনন্দময় ও সহজ করার জন্য একটি সুন্দর ভালোবাসার সম্পর্কের কোনো তুলনা নেই।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!