- আমার বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে আর
তুমি পইড়া আছো কফি নিয়া !
বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে । ক্যাফের
রাস্তামূখী কাঁচেরদেয়ালটাতে
বৃষ্টির ছাঁট এসে লাগছে ।
-চুলটা মোছ ,ঠান্ডা লেগে যাবে ।
-মুছতে হবে না চুল ।
যেটা বলতে এসেছ বল ।
-আমার না তোমার কিছু বলার কথা ।
তুমি আসতে বলস্ ।
-যা বলব সেটা তো জানই,নাকি?
আজকের কথা তো আর না ।এখন বল
ডিসিশান কি ।
বিয়া করতে পারবা কি না । হুম ?
এক মিনিটের নীরবতা । কিন্তু যেন
এক যুগের মনে হয় ছেলেটার কাছে ।
মনে হয় এই নীরবতা যেন আর
না ফুরায় । আর মেয়েটার ? অসহ্য
লাগে । অধ্যৈর্য প্রশ্ন মেয়েটার ,
- কি !! কথা বল না কেন ? তখন তো খুব
বলসিলা হেন করবা ,
পালায়া যাবা , তেন করবা । এখন !!!!
মেয়েটার উঁচু গলায় ক্যাফের সবাই
বিরক্ত চোখে তাকায় ।
-কিছু করতে পারবা না , এই তো?
আরেক মিনিটের নীরবতা সেশন ।
কফির মগ থেকে মৃদু ধোঁয়া উঠতেই
থাকে ।
- জানতাম । তোমার মত ছেলেদের
কাছে এটাই আশা করা যায় ।
জানতাম আমি ।
ক্ষোভে চোখে জল
চলে আসে মেয়েটার । ছেলেটার
মাথা নীচু ,যেমনটা শুরু থেকেই
ছিল । একবারের জন্যও মেয়াটার
চোখে তাকাতে পারেনা সে । এমন
সময় আসবে এটা দুজনেরই জানা ছিল
অনেক আগে থেকেই । তবু কেন এত কষ্ট
হচ্ছে বুঝতে পারেনা কেউই ।।
-আমারই ভূল
হয়েছে তোমাকে বিশ্বাস করা ।
ক্যাফে থেকে ছুটে বেরিয়ে যায়
মেয়েটা ।
এরকমই এক বর্ষার
দিনে দেখা হয়েছিল ওদের ।শুরু
হয়েছিল ভালোবাসার এই গল্প ।
চার বছর আগে সেটা । প্রথম প্রেমের
তীব্রতায় জাত-পাত
টাকাপয়সাকে ফিকে মনে হয়েছিল
তখন । কিন্তু চার বছর চোখ ফোটার
জন্য যথেষ্ট সময় । এই বর্ষায়
গল্পটা শেষ হল ।
কিছুক্ষন কফির মগ
নাড়াচাড়া করে ছেলেটাও
বেরিয়ে পড়ে বৃষ্টির মধ্যে । ভয় কি !
আজ রাতে কেউ বৃষ্টিতে ভেজার
অপরাধে ন্যাকা সূরে বকবে না।
২।
আধঘন্টা পর ।
একই ক্যাফে ।
একই টেবিল ।
দু’মগ কফি ।
আর সদ্য
কৈশোরে পা দেয়া দুটো ছেলেমেয়ে।
-আমার ভীষন ভয় করতেসে ।
মাসীমা জানতে পারলে আমাকে খুনই
করে ফেলবে ।
-এত ভয় পাও ক্যান ? আমি আছি না !
দরকার হলে পালায়া যাব । তোমার
জন্য আমি জাহান্নামে পুড়তেও
রাজি ।
দু’জনের ঠোঁটে হাসির আভা ।
মেয়েটার হাতে হাত
রাখে ছেলেটা । নিরাপত্তার
উষ্ণতা ঢেকে দেয় সব ভবিষ্যতের
দুশ্চিন্তা ।
বৃষ্টির ছাঁট পড়তেই
থাকে রাস্তামূখী কাঁচের
দেয়ালটায় । কফির ধোঁয়া ।
কে জানে , কোন বর্ষায় এই গল্পটাও
শেষ হয়ে যাবে হয়তো ।
0 comments:
Post a Comment