গ্ল্যামার, একশন, লাইট, সেট, কাট এসবই এই জগতের পরিচিত শব্দ। লোক দেখানো লৌকিকতায় নারী এখনো পণ্য। সেই জগতের হাতছানিতেই মডেল হবার স্বপ্ন কাজ করে অনেকের মধ্যে। কারণ আয়নায় নিজের চেহারা দেখতে কার না ভালো লাগে। সেই ভালোলাগাকে পুজি করে ব্যবসা ফেদেছে অনেকে। সেই ব্যবসার খপ্পরে পড়েছিলো এই মেয়েটি। অনেক লোভনীয় প্রস্তাব আর মনভোলানো কথায় পা পিছলে পড়েছিলো সে। তার মুখেই শুনে আসি তার অধপতনের বৃত্তান্ত।
কিভাবে জড়ালেন এখানে। একজন ডিরেক্টরের অন্যরকম প্রস্তাবে ফিরে এলেন এই পথ থেকে। বিভিন্ন পাঠশালায় পার্টিতে পাঠানোর জন্য মডেল হতে ইচ্ছুক মেয়েদের ব্যবহার করা হয়। সংবাদ উপস্থাপক হওয়ার জন্য দুই ধাপে টিকে একটি চ্যানেলের কর্ণধার প্রস্তাব করে.... আমার সাথে বিভিন্ন পার্টিতে যেতে হবে। এজন্য তোমাকে পে করা হবে।
কিছুটা সৌভাগ্য নিয়ে হয়তো জন্মেছিলো এই মেয়েটি তাই ফিরে আসতে পেরেছে অথবা পালিয়ে বেঁচেছে। কিন্তু এই পথে পা বাড়িয়ে অনেক হারিয়ে গেছে চিরতরে, তার উদাহরণ কিন্তু আমার-আপনার কাছে আছে।
খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে, সেই বিপনন বালিকাদের সাথে??? জানতে ইচ্ছে করছে কেনো তারা এই পথে??? আপনাদের নিরাশ করবো না। তাদের সাথে আলাপ তো করাবোই পাশাপাশি, এই জগতের কিছু গডফাদারদের মুখোশ খুলবো, মই দেবো তাদের পাকা ধানে।
গডফাদারদের মুখোশ খোলার আগে, আপনাদের এমন একজন ডিরেক্টরের সাথে আলাপ করাবো যিনি মূলত এস্কর্ট সাপ্লাইয়ের বড় দালাল, কিন্তু তকমা লাগিয়ে আছেন, পরিচালকদের।
আলাপের আদিতে হলো নাম। প্রথমেই সেটা পাকাপোক্তভাবে মনে গেথে নিন। এই পরিচালকের নাম রাশেদ। আসল কিংবা নকল সেই প্রশ্ন করার মত অবকাশ আমরা পাইনি। পেশায় পরিচালক হলেও কবে কি পরিচালনা করেছেন সেটা তিনি নিজেও হয়তো বলতে পারবেন না। কিন্তু এস্কর্ট যোগাড় করে দিতে তার পরিচালনা দক্ষতা অসাধারণ।
নগরীর ৮৫ ভাগ আবাসিক হোটেলে প্রতিদিন সাড়ে ৭ হাজার খদ্দেরের সমাগম হয়। আর এদের যৌনানন্দ দেয়ার জন্য সাড়ে ৫ হাজার ললনা নিজেদের বিলিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর যৌন ব্যবসায় লিপ্ত থাকা হোটেলগুলোতে মাসিক আয় ১২ কোটি টাকা। অভিজাত হোটেলগুলোতে সন্ধ্যার পর থেকেই লম্বা লাইন দেখা যায় উচ্চ শ্রেণীর যৌনকর্মীদের।
এবার তাহলে, আপনাদের দেয়া কথা অনুযায়ী, আলাপ করবো, সেই সব সুখ বিলিয়ে বেড়ানো বালিকাদের সাথে। যারা যাচ্ছেন সেই সব পাঁচতারা হোটেল কিংবা অভিজাত ফ্ল্যাট বাড়িতে আপনার ধূসর সময়গুলো রঙিন করতে।
সাধারণত চারটি ভাগ রাজধানীতে যৌনকর্মী সরবরাহ করা হয়। প্রথমত, যৌনকর্মীকে ভিজিটরের বাসার ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া, দ্বিতীয়ত যৌনকর্মী ও ফ্ল্যাট ভিজিটরকে নিরাপদে নিয়ে আসা, তৃতীয়ত হোটেল কক্ষে যৌন মিলনে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং চতুর্থত প্রাইভেট পরিবহন ও পার্কিং সুবিধা।
অনেক তথ্য-উপাত্তের ফুলঝুরি ছোটানো হয়েছে। এবার, গডফাদার দর্শন। তবে, এমন অনেকের নাম তার কাস্টমার লিস্টের পাকা খাতায় দেখেছি, সামাজিক শৃঙ্খলার কারণেই সেগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ করবো না আমরা। তবে, যেটুকু জানাবো সেটাও কিন্তু কম নয়।
কিভাবে মেয়েদের যোগাড় করা হয়, কেন এই পেশায় আসে, কোন মডেলের কত রেট।
উপাখ্যানের শেষ পৃষ্ঠা পড়ার সময় চলে এসেছে। সেখানে কিন্তু কোনো রোমাঞ্চ নেই, নেই কোনো রগরগে বর্ণনা। আছে বিষাদ কাব্য, যে কাব্যটি পড়া শুরু হয়েছিল, ঢাকা থেকে বেশ কয়েক মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে দৌলতদিয়ার নিষিদ্ধ পল্লীতে। যেখানে শরীর জীবিকা যোগাচ্ছে। মৃত্যু হচ্ছে স্বপ্নের আবার সেখান থেকে পুর্নজন্মও নিচ্ছে নতুন স্বপ্ন। কিন্তু দু:স্বপ্নের রাত শেষ হয়ে ভোর আসছে না তাদের জীবনে।
হুমায়ুন আজাদের কথায় যদি বলি, নারী হয়ে কেউ জন্মায় না তারা ক্রমশ নারী হয়ে উঠে। ঠিক তেমনি, নিষিদ্ধ জীবনের আলো-আধারিতে নাভিশ্বাস ওঠা এইসব যৌনকর্মীরাও প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিতে চায়, মুক্ত বাতাসে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন সস্তা প্রসাধনীর মতই কিছুক্ষণ বাতাসে গন্ধ ছড়িয়েই মিলিয়ে যায়। কারণ, তারা যে, ফেরা যায় না, এমন পথের পথিক।
0 comments:
Post a Comment