আবেগে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে


অনেকেই রাগ-ক্ষোভ নিজের মধ্যে চাপা দিয়ে রাখেন। চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা বলছেন, যারা রাগ-ক্ষোভ চেপে রাখেন তাদের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল কমে যায়। এমনিক, এমন মানুষের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আশংকাও বেশি।

হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ আর রোচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানিয়েছেন, আবেগ চেপে রাখলে আয়ুষ্কাল কমে যায়। গবেষকেরা দেখান, যারা নিজেদের অবেগ প্রকাশ করতে পারেন না তাদের কম বয়সে মারা যাওয়ার আশঙ্কা ৩৫ ভাগ। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, যারা আবেগ চাপা দিয়ে রাখেন তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৪৭ভাগ। আর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৭০ভাগ।

মনের সাথে শরীরের সম্পর্ক নিয়ে এশিয়া বিশেষত চীন ও ভারতীয় উপমহাদেশের চিকিৎসকেরা আগে থেকেই বলে আসছিলেন। পশ্চিমারাও মনের সাথে শরীরের এই সম্পর্ককে গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন। পশ্চিমা চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও মেনে নিয়েছিলেন মনের সাথে শরীরের নানান রোগের সম্পর্ক আছে। কিন্তু এই সম্পর্ক কতটুকু গভীর তা নিয়ে ধারণা ছিল না পশ্চিমাদের। আবেগ লুকানোর সাথে ক্যান্সার ও আয়ুষ্কাল কমে যাওয়ার এই সম্পর্ক আবিষ্কারের পর বিস্মিত হয়েছেন হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ আর রোচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। এই গবেষণাটি জার্নাল অব সাইকোসোমাটিক রিসার্চ নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। মোট ৭৯৬ জন নারী ও পুরুষকে নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে ১২ বছর ধরে গবেষণাটি চলে। ১৯৯৬ সালে নমুনাভুক্ত নারী-পুরুষদের আবেগ প্রকাশের ক্ষমতা পরিমাপ করে দেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীরা দেখার চেষ্টা করেন, মানুষদের আবেগ প্রকাশের ক্ষমতা কেমন? কারা কারা আবেগ চেপে রাখেন আর কারা কারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আবেগ প্রকাশ করেন। পরে ২০০৮ সালে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান ওই ৭৯৬ জনের মধ্যে ১১১ জন হৃদরোগ আর ক্যান্সারে মারা গেছেন।

পরে বিজ্ঞানীরা মারা যাওয়া মানুষদের আবেগ প্রকাশের ক্ষমতা মিলিয়ে দেখেন। তারা দেখতে পান, বারো বছরের ব্যবধানে যারা মারা গেছেন তারা হয় আবেগ প্রকাশ করতে পারতেন না বা আবেগ প্রকাশ করতে চাইতেন না।

আবেগ প্রকাশ না করতে পারার সাথে হৃদরোগ ও ক্যান্সারের সম্পর্ক খুঁজে পেলেও এর কারণ সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে, তাদের ধারণা যারা আবেগ প্রকাশ করতে পারেন না তারা সিগারেটসহ নানান ক্ষতিকর খাদ্যাভাস গড়ে তোলেন। যার কারণে হৃদরোগ থেকে শুরু করে ক্যান্সার হতে পারে।

এছাড়াও বিজ্ঞানীরা বলছেন, আবেগ ধরে রাখতে গিয়ে স্নায়ুর ওপরে চাপ পড়ে। শরীরের হরমোনের কার্যকলাপের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এতে করে, কোষ ধ্বংস হওয়া, হৃদপিণ্ডের ক্ষতি হওয়া থেকে শুরু করে ক্যান্সারও হতে পারে।

বিজ্ঞানীদের দাবি করছেন, মানসিক চাপের সাথে মৃত্যুর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেছে। কিন্তু এই বিষয়ে আরো গবেষণা দরকার। এর আগে বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, মানসিক চাপ বাড়লে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!