ঢাকা : সুইজারল্যাল্ডের জুরিখ নগরীতে এবার যৌনকর্মীদের সুবিধার্থে চালু হয়েছে ‘সেক্স ড্রাইভ-ইন’। কর্তৃপক্ষ বলছে এ পদ্ধতি চালু করার মাধ্যমে তারাও যৌনকর্মীদের গতি-বিধির ওপর সব সময় নজর রাখতে পারবে।
এক বছর আগে এ পরিকল্পনাটি ভোটের মাধ্যমে জনগণের পক্ষ থেকে সমর্থন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার জুরিখে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উদ্বোধন করা হয়েছে। চালু হলেও ২৬শে আগস্ট থেকে কাজ শুরু হবে।
জুরিখ সিটি হলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রচলিতভাবে সেক্সবক্স নামে পরিচিত নয়টি সেক্স ড্রাইভ ইন শহরের পশ্চিমাঞ্চলে সাবেক শিল্প এলাকাতে স্থাপন করা হয়েছে। ওই এলাকাটি কেবল নিঃসঙ্গ গাড়িচালকদের জন্য সন্ধ্যা সাতটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
কেউ সেখানে যেতে ইচ্ছুক হলে তাকে অবশ্যই গাড়ি নিয়ে একা যেতে হবে। কেবল একা হলেই বিশেষ গেট দিয়ে গাড়ি নিয়ে ওই এলাকাতে ঢোকার অনুমতি দেয়া হবে। গেট দিয়ে ঢোকার পর তাদেরকে একটি চিহ্নিত রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে হবে। আর পথে তাদের মনোরঞ্জনের জন্য অপেক্ষায় থাকবে অন্তত ৪০ যৌনকর্মী।
তাদের সঙ্গে অর্থের বিষয়টি আলোচনার পর কারওয়াশ স্টাইলের নয়টি বক্সের যে কোন একটিতে তারা সময় কাটানোর জন্য যেতে পারবে। ওই বক্সগুলোতে অ্যালার্ম দেয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। এর ফলে যৌনকর্মীরা কোন ধরনের সমস্যা বা বিপদে পড়লে সহজেই পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারবে।
১৮ লাখ বাসিন্দার আবাস জুরিখ বেশ আগে থেকেই যৌনকর্মীদের জন্য বিশেষভাবে খ্যাত। তবে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যৌনকর্মীদের সঙ্গে লোকজনের বচসা নিয়ে সেখানকার অধিবাসীরা বিরক্ত। তাই নগর কর্তৃপক্ষ এ আদিম পেশাকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এর পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ যৌনকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে চায়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নারী পাচারকারীদের হাত থেকে যৌনকর্মীদের রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অপরিণত বয়সীদের এ কাজে আসা প্রতিহত করা সম্ভব হবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
২০১২ সালের মার্চে এক নির্বাচনের মাধ্যমে জুরিখের অধিবাসীরা কর্তৃপক্ষের এ পরিকল্পনাটি অনুমোদন করেছিলেন। যৌনকর্মীদের জন্য এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ২১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। আর এটি পরিচালনার জন্য প্রতি বছর ৭০০,০০০ ফ্রাঁ ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নগরের মূল কেন্দ্র থেকে যৌনকর্মী এবং তাদের খদ্দেরদেরকে নতুন জায়গায় সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থাই রেখেছেন। সেখানকার পরিবেশ বেশ মনোরম এবং আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।
পশ্চিম ইউরোপে যৌনবাণিজ্যের প্রতীক বলে বিবেচিত লাল ছাতার প্রতীক দিয়েছে স্পষ্ট করে ওই এলাকাকে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গ্রাহকদের বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে কর্তৃপক্ষ সেখানে কোন ধরনের ভিডিও পর্যবেক্ষণ ক্যামেরা বা স্থায়ী পুলিশ টহলের ব্যবস্থা রাখছে না। তবে সেখানে সমাজকর্মী এবং নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা থাকবে।
পতিতাবৃত্তি বৈধতা পাওয়া সুইজারল্যান্ডের জুরিখে এ বিষয়টিকে মোকাবিলা করতে যেসব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে সেক্সবক্স পরিকল্পনা হচ্ছে সেগুলোর অন্যতম। জানুয়ারি মাস থেকে যৌনকর্মীদেরকে তাদের কাজ নির্বিঘ্নে করার জন্য অনুমতি নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এজন্য তাদের অবশ্যই সুইজাল্যান্ডে কাজ করার অনুমতি এবং স্বাস্থ্যবীমা থাকতে হবে। এর পাশাপাশি প্রতিরাতের কাজের জন্য ট্যাক্স হিসেবে সরকারকে পাঁচ সুইস ফ্রাঁও জমা দিতে হয়। সূত্র: অনলাইন
0 comments:
Post a Comment