টিনএজ বয়সে ছেলেদের বড় মেয়েদের প্রতি আকর্ষণ বেশী!


ঢাকা : আরো অনেক টিনএজ ছেলের মত আমিও বয়সে বড় মেয়েদের দিকে খুব আকর্ষন বোধ করতাম। বিশেষ করে যাদের বয়স পচিশের কাছাকাছি। অথচ বেশীরভাগ মেয়েরাই জিনিশটা জানে না, বা জানলেও বিশ্বাস করতে চায় না। ইউনিতে থাকতে আমি ক্লাসমেটদের অনেককেই বলেছি, জানিস তোদের যে সব ছোট ভাগ্নে ভাতিজা আছে ওরা তোদেরকে ভেবে ট্যাংক খালি করে। সিলভী আপু যখন আমাদের এখানে ফ্ল্যাট ভাড়া নিল সেসময় আমি মাত্র নাইনে উঠেছি। ওনার বাবা আব্বার সাথে পরিচিত। সিলভী আপু ইউএন এ কিসে যেন জব করতেন। এখন মনে করার চেষ্টা করি ওনার বয়স তখন কত ছিল। পচিশের চেয়ে বেশী হবে। হয়তো ত্রিশের কাছাকাছি। আফ্রিকাতে কোন দেশে যেনছিলেন, পরে হাজবেন্ডের সাথে ডিভোর্স হয়ে ঢাকায় বদলী হয়ে চলে আসেন। বাবা মার বাসায় না উঠে স্নিগ্ধাদের সাইডে ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতেন। প্রথমদিকে সিড়িতে দেখা হলে খুব লজ্জা লাগতো। উনি অবশ্য বরাবর জানতে চাইতেন, কি খবর তানিম, পড়াশোনা কেমন চলছে। আমি কোনমতে বলতাম, এই তো।

আর তখন একটা সময় ছিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট হাই এচিভার মেয়ে দেখলে ফ্যাটালী এ্যাট্রাক্টেড হয়ে যেতাম। সিলভী আপু না টের পেয়ে যায় সেই ভয়ে আরো কুকড়ে যেতাম ওনার সামনে। আর পেছনে ওনাকে ভেবে যে কত শত লিটার মাল ফেলেছি, জড়াজড়ি ধস্তাধস্তি করেছি তার হিসেব নেই। এভাই চলে যাচ্ছিল। একদিন ওনার বাসার সার্কিট ব্রেকারটা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আম্মা বললেন, তানিম, যাও তো সিলভীর পুরো বাসা অন্ধকার হয়ে আছে, ঠিক করে দিয়ে আসো। টুকটাক ইলেকট্রিক্যাল কাজে অনেকেই ডাকে। সন্ধ্যায় একটা টর্চ নিয়ে সিলভী আপুর বাসায় গিয়ে হাজির হলাম। ওনার এসিস্ট্যান্ট মেয়েটা দরজা খুলে দিল। সার্কিট ব্রেকার সাড়াতে হয়তো মিনিট দশেক লেগেছিল। আমি বললাম, যাই

- দাড়াও, কয়েকটা চকলেট দেই তোমাকে, ভাইয়া এনেছে

উনি একমুঠো থ্রী মাস্কেটিয়ার্স ধরিয়ে দিলেন।

- পড়াশোনা কেমন চলছে?

- মোটামুটি, মাত্র তো ক্লাস শুরু হলো, এখনো চাপ নেই

- নাইন টেন, বিগ ইনভেস্টমেন্ট, জানো তো

- উ

- ফাউন্ডেশন দুর্বল থেকে গেলে পরে সেভেরাল টাইমস এফোর্ট দিয়েও পোষানো যায় না

- তাই হয়তো

ওনার টেবিলে একটা বড় ছাই রঙা মুর্তি, মাথার পেছনে হাত বেধে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে, আমি বললাম, এটা কি ঈস্টার আইল্যান্ডের

- মোয়াই? ইয়েপ। তুমি ঈস্টার আইল্যান্ড চেন দেখি

- নাম শুনেছি, এর বেশী কিছু না। আপনি গিয়েছিলেন?

- ও না না। আমি যাই নি। এটা আসলে, এটা আসলে আমার ফ্রেন্ড সুমনের। ওয়েল, সুমন, মানে আমার এক্স হাজবেন্ড ও গিয়েছিল

- সাউথ এমেরিকাতে তাই না

- হু, চিলিতে

উনি একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললেন, সুমন খুব ট্রাভেল ক্রেইজি ছিল। কত জায়গায় যে ও ঘুরেছে। এখনও ঘুরছে

- আপনিও নিশ্চয়ই ঘুরেছেন?

- কিছু কিছু, সুমনের সাথে যখন ছিলাম। এখন যাই না। গত একবছর ঢাকা থেকে বের হই নি।

আমি আর না ঘাটিয়ে বললাম, আজকে চলে যাই

- ওহ শিওর শিওর। স্যরি তোমাকে আটকে রেখেছি। কখনো ইচ্ছে হলে চলে এসো, আই হ্যাভ মোর আর্কিওলজি স্টাফ, আরেকদিন সময় করে দেখাবো

- আচ্ছা ঠিক আছে

বাসায় এসে ভাবতে বসলাম, সিলভী দেখছি এখনও এক্স সুমনের জন্য কান্নাকাটি করে যাচ্ছে। আরেকবার সুযোগ পেয়ে কথা বলতে পারলে মন্দ হয় না। যাস্ট সুমনের প্রসঙ্গটা না তুললেই হয়। এরপর মনে হয় মাসখানেক গেল ঘটনাবিহীন। সিড়িতে দেখা হয়েছে। ওনাকে অবশ্য বেশ পরিশ্রান্ত মনে হয়। এ্যাসিস্ট্যান্ট মেয়েটা একগাদা কাগজ বগলে করে বয়ে নিয়ে আসে। ওনার জব টা কি কে জানে। একদিন শুক্রবার ছাদে হাওয়া খেতে গিয়েছি, ওনারাও সেখানে, যথারীতি উনি বললেন, তানিম হাউ’জ গোয়িং

- এই তো, পড়াশোনা করে যাচ্ছি

- গুড গুড। তুমি তো বাসায় এলে না, তোমাকে কিছু স্টাফ দেখাবো বলেছিলাম

- বিজি ছিলাম, স্কুল, স্যারের বাসায় পড়তে যাওয়া, এসব নিয়ে

- গুড ইনভেস্টমেন্ট। এখন ফ্রি আছো?

- হু

- চলো তোমাকে কিছু মজার জিনিশ দেখাই

উনি নামতে নামতে বললেন, তুমি ছোট ছেলে, কি বলব, কথা বলার লোক পাই না, তাই তোমাকে ধরে বেধে নিয়ে যাচ্ছি, খেপছো না তো আবার?

- আরে ধুর, প্রশ্নই আসে না। আমার কাছে প্রত্নতাত্ত্বিক ম্যাটেরিয়ালস দেখতে ভালো লাগে, টিভিতে প্রচুর দেখি

- রিয়েলী?

- সত্যি বলছি

- ইউ উইল হ্যাভ গুড টাইম দেন

ওনার বেড রুমে নিয়ে এসে একটা বড় ভল্ট খুললেন। সারি সারি করে রাখা জিনিশপত্র। একটা বড় নকশা করা ঢাল। আমি বললাম, এটা কিসের?

- এটা? মাসাইদের ঢাল। আমরা কেনিয়াতে ছিলাম দুবছর তখন কিনেছি

উনি ছোট ছোট কাঠের পুতুলের মত নামিয়ে বললেন, এগুলোও কেনিয়া থেকে

- কেনিয়াতে বেশীদিন ছিলেন

- হু, তা ছিলাম। তবে তানজানিয়া আর মোজাম্বিকেও ছিলাম। বেশ কিছু কাঠের পাত্র বের করে বললেন, হাতের কাজ দেখেছ? এমেইজিং তাই না

- কষ্ট হয়েছে অনেক বানাতে

- শুধু কষ্ট, দেয়ার্স মোর টু ইট, মোজাম্বিকের ট্রাইবগুলো শুধু বছরের একটা বিশেষ সময়ে এগুলো বানায়

- কেন?

- ওদের ধারনা ঐ সময়ে স্পিরিট এবং দেবতা এসে সাহায্য করে

- ভুয়া

- আহ, ভুয়া হবে কেন? এটা ওদের ধর্ম?

- দেবতা বলতে কিছু আছে নাকি?

- হাউ ডু ইয়্যু নো?

- থাকলে দেখতাম না এতদিনে

- আল্লাহকে দেখেছ

- আল্লাহ তো নিরাকার

- ওদের দেবতাও অদৃশ্য, জীবন্ত মানুষ দেখতে পায় না। সী, দেয়ার্স টু থিংস ইউ শ্যুড অলওয়েজ রিমেম্বার, নেভার নেভার আন্ডারএস্টিমেট সামওয়ান এলসেস রিলিজিওন। এবং তোমার ধর্ম তোমার কাছে যতটুকু সত্য, অন্যের ধর্মও তারকাছে ততটুকু সত্য। তুমি তোমার আল্লাহর অস্তিত্ব যতটুকু প্রমান করতে পারবে, একজন মাসাই তাদের ডেইটীর অস্তিত্ব ততটুকু প্রমান করতে পারবে। ধর্মের প্রমানের অংশটুকু খুবই ট্রিকী। বি মাইন্ডফুল, ডোন্ট বি ডিসমিসিভ।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!