১২ জুলাই (প্রাইম নিউজ বিডি ডটকম) : পৃথিবীর সবচাইতে সাহসী ছেলেটি, যে কিনা রোমাঞ্চের আশায় এমনকি এভারেস্টের চূড়োয় উঠে সেখান থেকে সোজা নিচে লাফ দিতেও দ্বিধা করবে না; তাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘তোমার সবচেয়ে বড় ভয় কোনটি?’ তবে ওর উত্তরটা যদি হয় ‘Premature Ejaculation’ তবে কি সবাই খুব অবাক হবেন? না হওয়ারই কথা। কারন আজকালকার অনেক ছেলেরও তাই; তা সে অন্য দিক দিয়ে যতই সাহসী হোক না কেন।
আদ্যিকালে চরম পুরুষ শাষিত সমাজে পুরুষদের আধিপত্য এতটাই বেশি ছিল যে তখনকার দিনে মেয়েদেরকে মানুষ বলেই গন্য করা হতো না। সমাজে তাদের অবস্থান ছিল ‘সন্তান উৎপাদনের মেশিন’ রূপে। মেয়েদের এ অবস্থা শুধু আমাদের এই উপমহাদেশেই নয়, আমেরিকা-ইউরোপের প্রাচীন ইতিহাস ঘাটলে সেখানেও এর ছায়া খুজে পাওয়া যাবে। সে সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌনমিলন ঘটতো হয় পুরুষ মানুষটির সাময়িক কাম লালসা চরিতার্থ করার জন্যে অথবা শুধুই মেয়েটির গর্ভে সন্তানের বীজ বপনের উদ্দেশ্যে। তখনকার দিনে যৌনমিলনকে দেখা হতো জীবনের একটা বাহুল্য হিসেবে। নারীদের আনন্দ দেয়া তো বহু দুরের কথা, আদ্যিকালের বহু পুরুষ (সবাই নয় যদিও) যৌনমিলন থেকে নিজেও আনন্দ লাভের চেষ্টা করত না, এটা যেন শুধুই নিজের বংশের প্রদীপ উৎপাদনের জন্য একটা অবশ্য করনীয় কাজ।
তাই যত দ্রুত সম্ভব এটা শেষ করে ফেলাই তাদের লক্ষ্য থাকত। আর যারা যৌনমিলন থেকে আনন্দ লাভের চেষ্টা কিছুটা হলেও করত, তারাও ছোটকাল থেকে শিক্ষা পেয়ে এসেছে যৌনমিলনকে ঘৃন্য ও নোংরা একটা কিছু মনে করার; তাই এক্ষেত্রেও ‘এত নোংরা একটা কাজ’ খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হতো না। আর যৌনমিলন মানেই যেহেতু বীর্যপাত (Foreplay) এটা আবার কি জিনিস? খায় না মাথায় দেয়? তাই এটা দ্রুত করলেই তো হলো, তাই না? আরো অনেক পূর্বে মধ্যযুগে, এমনকি তারও পূর্বে প্রাচীন যুগে যদি ফিরে দেখা যায় সেখানেও পুরুষদের মাঝে দ্রুত বীর্যস্খলনের তাগিদ কাজ করত। কারন সেসব দিন থাকত যুদ্ধবিগ্রহে সরগরম। আর একজন যোদ্ধা যদি নারীকে আনন্দ দিতেই এতটা সময় ‘নস্ট’ করে তবে সে যুদ্ধ করবে কখন?
আধুনিক যুগে যৌনমিলনের সংজ্ঞা ও ধরন পরিবর্তিত হয়ে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও আনন্দময় মিলনের তথা বিলম্বিত বীর্যস্খলনের জন্য এক বিশেষ ধরনের অভিযোজন হলেও পূর্বপুরুষের কাছ থেকে বংশ পরম্পরায় আমাদের মধ্যে অনেকেই এই দ্রুত বীর্যপাতের প্রবনতা (Premature ejaculatory tendency) পেয়ে আসছে। এই প্রবনতাকে আধুনিক সময়ের ‘Give & Take’ ও ভালোবাসাময় যৌন জীবনে অভ্যস্ত মানুষের জীবনে একপ্রকার অভিশাপ রূপে দেখা দিয়েছে। কিন্ত এর সমাধান কি করে করা যায় কিংবা আদৌ কোন সমাধান আছে কিনা তা অনেকেরই জানা নেই। ছেলেদের যৌনতার সেই অজানা পরিসরটি নিয়েই আজ আমাদের আলোচনা।Premature Ejaculation বা দ্রুত বীর্যপাত
প্রথমেই জেনে নেওয়া দরকার যে Premature Ejaculation বা দ্রুত বীর্যপাত আসলে কি। যৌনমিলনের সময় যোনিতে মৈথুন করা শুরু করার সামান্য কিছুক্ষন পরেই এবং কিছু ক্ষেত্রে যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশের পূর্বেই Foreplay এর মাঝে ছেলেদের বীর্যস্খলন হয়ে যাওয়াকে দ্রুত বীর্যপাত বলে। যাদের এ প্রবনতা আছে বলে ধরা হয় তাদের মূলত যৌনমিলনের মৈথুন বা হস্তমৈথুন করার সময় ১-৫ মিনিট এর মধ্যেই বীর্যস্খলন ঘটে যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় এ সময় সাধারনত ১৫ থেকে ২৫-৩০ মিনিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেহেতু কমবেশি সব মেয়েরই Foreplay’র মাধ্যমে মোটামুটিভাবে যৌনত্তেজিত হওয়ার পরও, যোনি মৈথুনে অর্গাজম হতে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে তাই ১-৫ মিনিটের এত সংক্ষিপ্ত মিলনে তার তৃপ্তি হয়না বলাই বাহুল্য। তাছাড়া ছেলেদেরও সামান্য সময়ের এই মিলনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্গাজম হয়না।
এপ্রসঙ্গে অনেকেরই একটা ভুল ধারনা এই যে ছেলেদের বীর্যপাত মানেই অর্গাজম। কিন্ত প্রকৃতপক্ষে, বীর্যপাত আর অর্গাজম সম্পূর্ন আলাদা দুটি অবস্থা। এটা ঠিক যে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ছেলেদের যখনই অর্গাজম হয় তাদের বীর্যপাত ঘটে। কিন্ত অনেক সময় ছেলেটি পরিপূর্ন উত্তেজিত না থাকলে, তার বীর্যস্খলন হলেও অর্গাজম নাও হতে পারে। এরকমটা যারা নিয়মিত হস্তমৈথুন করেন বা করতেন তাদের অনেকেই লক্ষ্য করে থাকবেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত একটু পরে বলছি। তার আগে Premature Ejaculation সমস্যা সৃষ্টির কারনগুলো দেখে নেওয়া যাক।
0 comments:
Post a Comment