প্রথম পাতা |
ফটো স্টুডিও |
আমার প্রতিদিন |
অনুভুতি |
উপদেশ |
স্বাস্থ্য |
তোমাদের ছবি |
শাড়ীতেই নারী |
আজকের বার্ত |
তোমার রুপ |
বাবা তোমায় ছালাম |
কবিতা |
সাহিত্য |
কর্মস্থলে সেক্স করেন ১৭ শতাংশ আমেরিকান
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, ১৭ শতাংশ আমেরিকান কর্মস্থলে সঙ্গমে
লিপ্ত হচ্ছে। ৩ শতাংশ সঙ্গমে লিপ্ত হয় চার্চ অথবা অন্য কোন উপাসনালয়ে। ৬৯
শতাংশ ব্যক্তি সেক্স করে নিজ নিজ গাড়ির পেছনের সিটে। সেনসিস কনডম নামক একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পরিচালিত জরিপে এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। জরিপ রিপোর্টটি মার্কিন মিডিয়াতেও ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে।
জরিপে
আরও জানা গেছে,
বিমান চলার সময়েও ৩ শতাংশ আমেরিকান সেক্স করেন। ৪ শতাংশ
সেক্স করছেন বাস ও অথবা ট্রেনে। স্কুলে সেক্স করেন ৮ শতাংশ। ২৮ শতাংশ
আমেরিকান অত্যন্ত উত্তেজক সেক্স
করেন বিভিন্ন পার্কে। জরিপে আরও প্রকাশিত হয়েছে যে, ৮৯ শতাংশ আমেরিকান এখন
কনডমের চেয়ে অন্য পদ্ধতিতে অভ্যস্ত। কনডম ব্যবহারে তৃপ্তি আসে না বলে
জরিপে অংশগ্রহণকারীরা মনে করছেন। ৩৮ ভাগ মানুষ মনে করেন কনডম ব্যবহারে
সেক্সে আবেদন হ্রাস পায়।
ঘর সাজবে উৎসব আমেজে
যেমনটা সাজবে বসার ঘর: বসার ঘর হলো অতিথি আপ্যায়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
জায়গা। আপনার পছন্দ এবং রুচিবোধ প্রাধান্য দিয়ে দেশীয়, ভিক্টোরিয়ান,
মডার্ন— এ তিন ধরনের স্টাইলে সাজাতে পারেন লিভিংরুম বা বসার ঘর। যদি কাঠের
কারুকার্যময় আসবাব আপনার পছন্দের তালিকায় থাকে, তবে নিঃসন্দেহে সেটা
ভিক্টোরিয়ান স্টাইল। তাই আরেকটু গর্জিয়াস করতে চাইলে ফার্নিচারের পাশাপাশি
ঘরের পর্দায়ও নিয়ে আসুন ভিক্টোরিয়ান স্টাইল। বিভিন্ন ড্রেপিংয়ের মাধ্যমে
তৈরি করে নিন জানালার পেলমেট, সঙ্গে ম্যাচিং ঝালর অথবা লেস। দুই লেয়ারে
তৈরি করুন পর্দা। পেলমেটের সঙ্গে মিল রেখে ভারী পর্দা নির্বাচন
করুন আর সঙ্গে ম্যাচিং অথবা কন্ট্রাসটিং নেট অথবা মসলিনের শেয়ার দেবে
ভিন্ন মাত্রা। সেন্টার টেবিলে একটি বড় ক্রিস্টালের পাত্রে পানি দিয়ে রেখে
দিন তাজা ফুলের
পাপড়ি, সঙ্গে ফ্লোটিং ক্যান্ডেল। ঝুলন্ত লাইটের ব্যবস্থা থাকলে সেগুলোকে
পরিবর্তন করে নতুন ডেকোরেটিভ লাইট ঝুলিয়ে দিন। সেন্টার টেবিলের নিচের
অংশজুড়ে বিছিয়ে দিন সিনথেটিক কার্পেট। কেউ যদি ইকেবানা শৌখিন হন, তাহলে
বিদেশী ফুল, গোলাপ, লিলি, জারবেরা দিয়ে তৈরি করুন নান্দনিক সাজ।
পরিপাটি-প্রশান্তির শোয়ার ঘর: বেডরুম মেকওভারের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে
ঘরের আসবাব একটু এদিক-ওদিক সরিয়ে নতুনভাবে সাজিয়ে ফেলা। নতুন পোশাক কেনার
পাশাপাশি নতুন বিছানা চাদর, পর্দা, কুশন কভার ইত্যাদি পরিবর্তনে আপনার
শোয়ার ঘরটি হয়ে উঠবে আকর্ষণীয়। যেহেতু ঈদ, তাই প্রতিটি ঘরকে সাজাতে পারেন
আপনার পছন্দের রঙটিকে বেছে নিয়ে থিমবেইজ আয়োজনে। শোয়ার ঘরের বিছানার চাদরটি
হওয়া চাই একটু গর্জিয়াস, সঙ্গে ম্যাচিং পর্দা ও নানা রঙের কুশন দেবে বাড়তি
সৌন্দর্য। তবে লক্ষ রাখবেন, একঘেয়েমি দূর করতে কন্ট্রাস্ট রঙ বিশেষ ভূমিকা
পালন করে। নতুন শতরঞ্জি কিংবা রাগ ফ্লোরে বিছিয়ে দিন। বিছানার পাশের সাইড
টেবিলে রেখে দিন কিছু তাজা ফুল। যার ম-ম গন্ধে অতিথির মনকে ভরিয়ে তুলবে।
সম্ভব হলে দেয়ালের রঙ পরিবর্তন করুন। একটু ভিন্ন মাত্রা দিতে বেডের মাথার
কাছে দেয়ালে লাগিয়ে দিন ওয়ালপেপার। তবে লক্ষ রাখবেন, যে ফ্যাব্রিকসই বেছে
নেন না কেন, তা যেন ঘরের রঙ এবং আসবাবের সঙ্গে মানানসই হয়। খাটের সঙ্গে
জুড়ে থাকা বেডসাইড টেবিলের ল্যাম্প দুটিতে আনুন নতুনত্ব।
বেডরুমের জন্য পর্দা নির্বাচন করুন ঘরের পজিশন অনুযায়ী। রাস্তার
কাছাকাছি হলে একটু ভারী ফ্যাব্রিকের পর্দা বেছে নিন, যাতে বাইরের আলো ও
শব্দ ভালোভাবে চাপা পড়ে। যদি বেডরুমে বাইরের আলো তেমন না আসে, তাহলে
ট্রান্সপারেন্ট নেট, মসলিন বা জর্জেটের পর্দা বেছে নিন, যাতে কিছুটা আলো
ঢুকতে পারে।
পুরো ঘরের ফার্নিচার নির্বাচন করুন সিম্পল ও জ্যামিতিক ফর্মের। মডার্ন
কনসেপ্টের জন্য বেশি গর্জিয়াস পর্দা নয় বরং সিম্পল ডিজাইনের পর্দা বেছে
নিন। শোপিস অথবা সেন্টার পিস যা-ই বলুন না কেন, লক্ষ রাখুন সেটা যেন মানিয়ে
যায় পুরো ঘরের সঙ্গে। মডার্ন ফার্নিচারের ক্ষেত্রে সোফার কভারে ফ্লোরাল
ডিজাইনের ফ্যাব্রিকস এড়িয়ে চলুন। দেশীয় আমেজ আনতে বাঁশ, বেত, রড-আয়রনের
ফার্নিচারের সঙ্গে খাদি কাপড়ের পর্দা ও কুশন কভার ব্যবহার করুন। ব্লক,
বাটিক টাইডাই অথবা কাতান পাড় লাগিয়ে তৈরি করে নিন আপনার পছন্দসই পর্দা।
ঘরের এক কর্নারে মাটির চাড়িতে পানি দিয়ে রেখে দিন কিছু ফুল এবং ফুলের পাপড়ি
সঙ্গে মোমবাতি।
খাবার ঘরটি হচ্ছে অতিথিদের মন জয়
করার জায়গা। তাই ঘরটিতে শুধু সুন্দর করে খাবার পরিবেশনই নয়, আশপাশের
আয়োজনও হওয়া চাই খাবারের মতো আকর্ষণীয়। খাবার ঘরের পর্দা হালকা সবুজ রঙের
হলে ভালো, এতে ফ্রেশ একটা ভাব থাকে। টেবিলে নতুন টেবিলক্লথ বিছিয়ে দিন। যদি
কাপড়ের টেবিলক্লথ হয়, তাহলে এর ওপর পাতলা ট্রান্সপারেন্ট পলিথিন ব্যবহার
করুন খাবার পরিবেশনের আগে। কাচের গ্লাস টপ টেবিল হলে বিছিয়ে দিন টেবিল
রানার, টেবিল ম্যাট এবং ম্যাচিং ন্যাপকিন। টেবিলের মাঝখানে রেখে দিন
আকর্ষণীয় ফলের ঝুড়ি, তাতে তাজা কিছু ফল।
আনন্দ উপভোগ করুনঃ সংসার সুখের হয় যে ৫ গুণে
ঢাকা: সংসার মানেই স্বামী-স্ত্রী, সন্তান, পরিবার
পরিজনের যৌথ জীবন। এই যৌথ জীবনে খুঁটিনাটি অনেক বিষয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে
বিরোধ ও অমিল দেখা দেয়। আর এই অমিলের কারণে অনেক সময় ভেঙে যায় সুখের
সংসার। তবে পাঁচটি বিষয়ে সচেতন থাকলে হয়তো এড়ানো যেতে পারে এই সমস্যা।
তাহলে ঝটপট জেনে নেয়া যাক-
সুখস্মৃতির সন্ধান
সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অনেক স্মৃতি থাকে। সেসব স্মৃতির
কিছু যেন আনন্দের তেমনি আবার কিছু স্মৃতি বিষাদের। তবে বিষাদের স্মৃতি যত
দ্রুত ভুলে যাওয়া যায় ততই ভালো। বরং জীবনের সুখস্মৃতিগুলো বারবার রোমন্থন
করুন। হাস্যরসাত্মক স্মৃতি খুঁজে বেড়ান। ভালোলাগা কোনো হারানো স্মৃতি খুঁজে
পেলে দেখবেন ঠিকই ভালো লাগবে। প্রসারিত করতে হবে দাম্পত্য জীবন।
কৃতজ্ঞতা বোধ
কৃতজ্ঞতাবোধ এমন একটি গুণ যা প্রতিটি মানুষেরই থাকতে হয়। তবে সংসার
জীবনে এটি অত্যন্ত জরুরি। সংসারে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই দুজনের প্রতি
কৃতজ্ঞ হতে হবে। সব সময় মনে রাখতে হবে, আপনার এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ একতরফা
ছিল না। আপনার জীবনসঙ্গী যদি কোনো কারণে মনে কষ্ট পায়, তাহলে যথাসম্ভব
চেষ্টা করুন সেই কষ্ট দূর করতে। জীবন সঙ্গী যখন আপনাকে বুঝবে তখন আপনি তাকে
একটু হলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন এবং তার প্রসংশা করুন, ধন্যবাদ দিন।
আবেগী জীবন
অনেকেই প্রতিনিয়ত ছুটে চলার নামই জীবন বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। অনেকে
কেবল মাত্র অর্থ, যশ, খ্যাতি প্রভৃতির পেছনে ছুটে নিজেকে এবং আপনজনকে
বঞ্চিত করেন সান্নিধ্য থেকে। যা একদমই ঠিক নয়। বরং জীবনটা ছুটে চলার
পাশাপাশি উপভোগেরও। অর্থ, যশ, খ্যাতি সবার জীবনেই প্রয়োজন আছে। তবে এর জন্য
প্রিয়জনকে আপনার সান্নিধ্য বঞ্চিত করবেন না।
জাগতিক প্রয়োজনেই মানুষকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত হতে হয়। তবে কাজের
ফাঁকে কিছুটা হলেও সময় বাঁচিয়ে রাখুন পরিবারের জন্য। একটু অবসর পেলে
স্ত্রী/স্বামী, সন্তানকে ফোন করতে পারেন। আর ছুটির দিনগুলো পুরোটাই বরাদ্ধ
রাখুন পরিবারের মানুষগুলোর জন্য।
সম্পর্কের সেতুবন্ধন
মনে রাখতে হবে, কারো জীবনই নিখুত নয়। জীবনসঙ্গীকে নিয়ে হয়তো অনেক
প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকবে এবং জীবনে কিছু বিষয়ে মতের অমিল থাকবে। আপনার
প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়তো সবকিছু পাবেন না। তারপরও আপোশ করবেন, তাহলে আপনি
নতুন জীবন খুঁজে পাবেন।
বিয়ে
হচ্ছে একটা পবিত্র সম্পর্ক। এই পবিত্র সম্পর্ক বজায় রাখতে নিজেদের সচেষ্ট
হতে হবে। পরস্পরের ভালোলাগা-মন্দলাগা বুঝতে হবে। দুজনের বোঝাপড়া ভালো হলে
আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক হবে স্বর্গময়।
আনন্দ উপভোগ করুন
বিবাহিত
জীবন মানে বিলাসবহুল জীবন নয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে জীবনটা ভালোবাসায়
ভরিয়ে তুলতে হবে। জীবনটা ভালোবাসায় ভরিয়ে তুলতে দুজনকে ভূমিকা রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে একে অপরকে না বুঝলে জীবন সুন্দরভাবে সাজানো সম্ভব না। নিজেদের
মধ্যে বোঝাপড়া ভালো হলে জীবন সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব।
বোঝাপড়া ঠিক করতে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই সবকিছুতে আনন্দ উপভোগ করতে
হবে। একসঙ্গে কাজের মধ্যেও আনন্দ খুঁজে নিতে পারেন। দুজনে মিলে সপ্তাহে
একদিন রান্না করুন কিংবা ঘর গোছানোর কাজ করতে পারেন। ছুটির দিনে বাইরে
ঘুরতে যাওয়া, সিনেমা দেখলেও আপনাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
আপনি কেন মিথ্যা বলেন!!!
মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময় মিথ্যা কথা বলে। জীবনে মিথ্যা বলেননি
এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। নিজের স্বার্তে মানুষ যেমন মিথ্যা কথা বলে,
তেমনি অন্যকে খুশি করতেও অনেকে মিথ্যা বলেন থাকেন। আবার মানুষের জীবনে এমন
অনেক সময় আসে যখন মিথ্যা না বলে উপায় থাকে না। অর্থাৎ মানুষ নিরুপায় হয়েও
মিথ্যা কথা বলে।
মানুষ কেন মিথ্যা বলে তার সাতটি কারণ-
১. পরীক্ষা করার জন্য
কাউকে পরীক্ষা করার জন্য অনেক সময় অনেকে নিজের অতীত বানিয়ে বলে। যেমন-
সে তার অতীত সম্পর্ক নিয়ে রসালো গল্প তৈরি করে আপনার সামনে পরিবেশন করবে
আর দেখবে এ ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন।
এতে করে সে জানার চেষ্টা করে ভবিষ্যতে তার সামনে কী বলা যাবে আর কী বলা থেকে দূরে থাকতে হবে।
২. প্রভাবিত করতে
অনেক সময় অন্যকে প্রভাবিত করতে নারী-পুরুষ
উভয়েই মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে। নিজের প্রতি প্রভাবিত করার জন্য অনেকে
নিপূণভাবে মিথ্যে বলে। মিথ্যাবাদী চেষ্টা করে অন্যের চিন্তা ও ভাবনার
স্টিয়ারিংটা নিজের হাতে নিতে। এতে সফল হতে উপযুক্ত সময় ও উপায় বুঝে সে
ছলনার আশ্রয় নেয়।
৩. অতীত লুকাতে
কেউ অনেক সময় অতীতে খারাপ কিছু করে থাকলে তা লুকানোর জন্য মিথ্যার
আশ্রয় নেয়। অবশ্য এটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন: সে তার অতীত সর্ম্পক
নিয়ে নিজেই লজ্জিত কিংবা ভীত।
৪. বন্ধুকে উদ্বেগ থেকে দূরে রাখতে
বন্ধু বা ভালোবাসার মানুষকে অনেক সময় উদ্বেগ থেকে দূরে রাখতে মানুষ
মিথ্যে বলে। সঙ্গী,বন্ধু বা সহকর্মী কোনো ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকলে তার
মানসিক শান্তির জন্য অনেক সময় অনেকে নানা কথা বাড়িয়ে বলে।
৫. নিজেকে রক্ষা করতে
মানুষ সবচেয়ে বেশি মিথ্যা কথা বলে বিভিন্ন অপরাধ ঢাকার জন্য। সব
মানুষই কমবেশি অপরাধ করে। আর এই অপরাধের দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে অনেকে
মিথ্যা কথা বলে।
৬. পরিতৃপ্তির জন্য
অনেক সময় আত্ম পরিতৃপ্তির জন্যও অনেকে মিথ্যার আশ্রয় নেয়। তবে বিষয়টি
পুরোপুরি মানসিক। যেমন সে তার সাফল্য বা অর্জন সম্পর্কে বলার সময় একটু রঙ
ঢেলে দিয়ে বাড়িয়ে বলবে। এটা অবশ্য ভাবা হয় কেউ নিজেকে সামনে আলোচিতভাবে
তুলে ধরতে বলছে তবে নিজের অনিরাপত্তা থেকেও বলে থাকতে পারে।
৭. দুঃখ ঢাকতে
অনেক মানুষের মনেই অনেক ধরনের দুঃখ লুকিয়ে থাকে, যা কেউ অন্যকে বলতে
চায় না। সেই সময় কেউ ওই কষ্টের কথা জিজ্ঞেস করলে অনেকে মিথ্যে কথা বলে
থাকে। এছাড়া এমন অনেক পরিস্থিতি আসে যখন সত্যি কথা বল্লে প্রিয় মানুষটি
কষ্ট পাবে। তেমন সময়েও মানুষ মিথ্যে বলে।
চুড়ির রিনিক ঝিনিক ও ‘যাও পাখি বলো তারে, সে যেন ভোলে না মোরে’
চুড়িবন্দনা: শরতচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায় তার ‘অরক্ষণীয়া’ উপন্যাসে নারীর চুড়িপ্রেম ফুটিয়ে তুলেছেন
বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যে। বুড়ো মেসতুতো ভাই জ্ঞানদার হবু বউয়ের জন্য মাসিমা
দুর্গামণির হাতে অতুল যেই আকর্ষণীয় চুড়ি তুলে দিয়ে ছিলেন, তার বর্ণনা এসেছে
এভাবে :
‘তাহার রং এবং কারুকার্য দেখিয়া দুর্গামণি অত্যন্ত পুলকিতচিত্তে দাতার
ভূয়োঃ ভূয়োঃ যশোগান করিতে লাগিলেন। চুড়ি দুগাছি কাচের বটে, কিন্তু সেরূপ
মূল্যবান বাহারে চুড়ি পাড়াগাঁয়ে কেন, কলিকাতাতেও তখনো আমদানি হয় নাই।
বস্তুত তাহার গঠন, চাকচিক্য এবং সৌন্দর্য দেখিয়া মায়ের নাম করিয়া অতুল নিজের টাকাতেই বোম্বাই হইতে ক্রয় করিয়া আনিয়াছিল।’
আর বাংলা গানে এসেছে :
‘আমার চুড়ির রিনিক ঝিনিক রে
তার কাছে লাগত বড় বেশ।’
হ্যাঁ, চুড়ির আবেদন সব সময়ই ছিল। হয়তো থাকবে নানা আঙ্গিকে। তবে এক সময়
শুধু শাড়ির সঙ্গেই পরত ললনারা। তারা সোনা আর কাচের চুড়ি পছন্দ করতেন। এখন
সময়ের নিয়মে ‘সময়’ বদলে গেছে। তারপরও চুড়ির আবেদন কমেনি। বরং হাল ফ্যাশনের
অনুষঙ্গ হয়ে উঠছে চুড়ি নানান ফরমেটে-ডিজাইনে। যে কোনো পোশাকের সঙ্গে
ম্যাচিং করে পরা যায়Ñ এমন চুড়ি উদ্ভাবন হচ্ছে দিনকে দিন। বয়স দিয়েও এখন
চুড়িকে বাঁধার সুযোগ নেই। বিশ্বায়ন সব বয়সী নারীর জন্য চুড়ির দরজা খুলে দিয়েছে। তাই কাচের চুড়ির পাশাপাশি ফ্যাশন শোকেসে জায়গা করে নিচ্ছে নানা উপাদানের চুড়ি।
তবে কাচের চুড়ির রিনিঝিনি আওয়াজ আর বাহারি রঙের মিশেলে জড়িয়ে আছে
বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য। শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ, পোশাক যাই হোক না কেন এখনো
অনেক আধুনিক তর”ণীর পছন্দের এক বিশেষ অনুষঙ্গ হচ্ছে কাচের চুড়ি।
অবশ্য
আজকাল সব কিছুতেই লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। প্রচলিত ধারার বাইরে আধুনিক
মানুষের আগ্রহ বেড়েছে নান্দনিকতার দিকে। তাই অতীতের সাদামাটা এক রঙের কাচের
চুড়িতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে শিল্পের বাহারি ডিজাইনের ছোঁয়া। কাচের চুড়ির
পাশাপাশি এখন কাচের চুড়ির ওপর নানা রঙের পাথর, চুমকি, জরিসহ বিভিন্ন উপাদান
ব্যবহার করে আনা হচ্ছে নতুনত্ব।
আবার কাচের চুড়ির আধিপত্যে ধীরে ধীরে ভাগ বসাচ্ছে চৌকো, ত্রিকোণ,
ডিম্বাকৃতির প্লাস্টিক ও মেটাল চুড়ি। বস্তুত বাঙালি নারীদের এক অনন্য
অলঙ্কার হচ্ছে চুড়ি। এমন অনেক নারীই আছে যারা যে কোনো পোশাকেই চুড়ি পরেন।
চুড়ি ছাড়া তাদের দিনই কাটে না।
তবে আধুনিকতার কল্যাণে মেটাল, সুতা, চামড়া, ব্যাকেলাইট, রবার, কাঠ, মাটি, বিডস, পুঁতি, সিটি গোল্ডসহ নানা ধরনের চুড়ির ব্যবহার বাড়ছে।
এক সময় চুড়ি প্রধানত কাচ থেকে তৈরি হতো। তবে শামুকের খোল, তামা, ব্রোঞ্জ, সোনা ও হাতির দাঁতের চুরিও তখন ছিল।
অন্যসব উপাদান দিয়ে চুড়ি তৈরির কারণ এবং হাল ফ্যাশনের চুড়ির উপযোগিতার
কথা ফ্যাশনবিদদের ঠোঁটের ডগায় লাফায়, ‘আসলে কাচের চুড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা
থাকে। তাই অন্যান্য টেকসই উপাদানে তৈরি চুড়ির চিš—া আসছে। পরিবর্তনের ঢেউ
লেগেছে রুচিবোধেও। কারণ পার্বতীর মতো হাত ভর্তি চুড়ি এখন সবাই পরতে চান না।
আবার হাতে মাত্র বালা ধারণ করে অনেকে এখন তৃপ্তি পাচ্ছেন। আসলে কসমোপলিটন
পণ্য হয়ে যাওয়ার কারণে সব বয়সের নারীই চুড়ি পরছেন।’
বাঙালি নারীর সঙ্গে চুড়ির গভীর সখ্য ঠিক কবে সৃষ্টি হয়েছে, তার কোনো
প্রামাণ্য রেকর্ড আমাদের হাতে নেই। তবে চুড়ি পরতে ভালবাসেন সব বয়সী নারী।
উৎসবের দিন জমকালো সাজের সঙ্গে চুড়ি এখন অপরিহার্য হয়ে গেছে। বলা হচ্ছে,
হাতে চুড়ি না থাকলে সাজ ঠিক পরিপূর্ণতা পায় না। পত্রিকার বিশেষ পাতায়
বিভিন্ন উৎসবের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে পছন্দসই চুড়ি পরার প্রেসক্রিপশন
হামেশাই চোখে পড়ে।
চুড়ির
রিনিঝিনি ছন্দ মনেও দোলা দেয়। হালে ফ্যাশনের নতুন প্রবণতা হচ্ছে সুতোর
চুড়ি। প্লাস্টিকের বালার ওপর নানা রঙের সুতো পেঁচিয়ে তৈরি হচ্ছে চমৎকার সব
সুতো-চুড়ি। সুতো ছাড়াও কাতান কাপড়ের লেস পেঁচিয়ে বানানো হচ্ছে রং-বেরঙের
চুড়ি। শাড়ি, কামিজ, ফতুয়া সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে এ ধরনের চুড়ি মানানসই বলে
দাবি করা হয়।
আবার কপার, তামা, দস্তাসহ বিভিন্ন ধাতু দিয়ে তৈরি হচ্ছে বৈচিত্র্যময়
ডিজাইনের চুড়ি আর বালা। মাটি বা সিরামিকের নানা রং ও নকশা করা চুড়িও পাওয়া
যাচ্ছে। এসব চুড়ি নাকি দেশি সুতি বা ঁতাঁত কাপড়ের সঙ্গে বেশ মানায়।
কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ডিজাইনের চুড়ি ধীরে ধীরে জায়গা
করে নিচ্ছে। মোটা, চিকন, বাঁকা অবয়বে বিভিন্ন কাঠের চুড়ি চোখে পড়ে। কাঠ
দিয়ে আবার ব্রেসলেটও তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে গোলাকার ছাড়াও ঢেউ খেলানো,
বাঁকা, ত্রিভুজ, ষড়ভুজসহ নানা আকৃতির প্লাস্টিকের চুড়ি পাওয়া যাচ্ছে মোটা
আর চিকন ডিজাইনে। স্কার্ট, টপস, ফতুয়া-জিনসের সঙ্গে ম্যাচিং করে কাঠ ও
প্লাস্টিকের তৈরি এসব চুড়ি তৈরি হচ্ছে। জয়পুরি, মাল্টি, কাসুটিসহ নানা
ধরনের চুড়ির কথাও শোনা যায়। মুক্তার চুড়ির চাহিদাও বাড়ছে। বিভিন্ন ফ্যাশন
হাউসও তৈরি করছে নানা ডিজাইনের ফ্যাশনেবল চুড়ি।
বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে চুড়ির প্রচলন রয়েছে। এটা চেকে naramek,
ডাচে enkelring, ফিনিশে rannerengas, জার্মানে armreif, হাঙ্গেরিয়ানে
karperec, ইন্দোনেশিয়ায় gelang, ইতালিয়ানে braccialette, মালয়ে gelang,
স্পেনিশে brazlete ও তুর্কিতে halhal, তামিলে ভালায়ন, মালয়ালমে ভালা আর
নেপালিতে চুরা নামে পরিচিত।
ভারতীয় উপমহাদেশে চুড়ি ঠিক কবে চালু হয়েছে, তার সঠিক তথ্য কারো কাছে
নেই। তবে বিভিন্ন প্রত্নতাত্তিক খননকালে খোল, তামা, ব্রোঞ্জ, সোনা ও আকিক
পাথরের চুড়ি পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানের মহেঞ্জোদারোতে (যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও ২৬শ বছর আগে) পাওয়া
এক মূর্তিতে দেখা যায়, নৃত্যরত এক বালিকার বাম হাতে চুরি রয়েছে। সম্ভবত তখন
দুহাতে চুড়ি পরার সংস্কৃতি ছিল না। অন্যদিকে মৌর্য সাম্রাজ্যের বিভিন্ন
ডিজাইনের চুড়ি পাওয়া গেছে ভারতের তক্ষশীলায়।
হীরা, মূল্যবান পাথর আর মুক্তো বসানো চুড়ির প্রচলন এখনো ভারতীয়
উপমহাদেশে রয়েছে। এক সময় লাক্ষার তৈরি চুড়িরও বেশ প্রচলন ছিল এখানে। আরব
উপদ্বীপের বিভিন্ন অংশেও চুড়ির প্রচলন রয়েছে।
বিয়ের চুড়ি সাধারণত রঙিন হয়ে থাকে। লাল রঙের চুড়ি হচ্ছে ‘জীবন ও আনন্দের
প্রতীক’ আর সবুজ রঙের চুড়ি হচ্ছে ‘উর্বরতার প্রতীক’। চুড়ি দুই হাতে পরা
যায়। এক হাতে পরতেও বাধা নেই।
আধুনিক
প্রজন্মের তরুণ সমাজের একটি অংশ এখন বেশ আগ্রহ নিয়েই চুড়ি পরছে। তবে তাদের
এই চুড়ি ‘খাড়–’ নামে পরিচিত। এটা রবার অথবা ধাতুর তৈরি হতে পারে। পশ্চিমা
সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের উঠতি তরুণরা এটা পরছে।
গিফট আইটেম হিসাবেও চুড়ি বেশ আদরণীয়। কারণ নারীরা শাড়ি বা জামার সঙ্গে ম্যাচিং করে চুড়ি পরতে এখন বেশ সচেতন।
চুড়ি নিয়ে কুসংস্কারও আছে। বলা হয়, চুড়ির কারণে স্বামীর নিরাপত্তা যেমন
বাড়ে, তেমনি ভাগ্যও ফেরে। আবার চুড়ি অকারণে ভেঙে গেলে স্বামীর বিপদ ঘটে।
আমাদের দেশে বৈশাখে লাল-সাদা বিভিন্ন বর্ণের রেশমি চুড়ি পরে নিজেকে
নানাভাবে সাজানোর প্রবণতা নারীদের মাঝে এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। আবার তারাই
ভিন্ন উৎসবের দৈনন্দিন পথচলায় দেশপ্রেমের বহির্প্রকাশ ঘটাচ্ছেন পতাকার রং
মিলিয়ে লাল-সবুজ রঙের হাত ভরা চুড়ি পরে। প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে প্রতিটি
উৎসবেই বাঙালি নারী চুড়ি সাজের জন্য বেছে নিচ্ছে বিশেষ বিশেষ রংকে
প্রাধান্য দিয়ে তৈরি চুড়ি।
হাতভরা চুড়ি পরা বাঙালি সংস্কৃতির একটি অংশ। ফ্যাশনবিদরা বলেন, হাতের
গড়নের সঙ্গে মিলিয়ে দুহাত ভরা চুড়ি হাতের সৌন্দর্য যেমন বাড়িয়ে দেয়, তেমনি
সাজকেও করে পরিপূর্ণ।
একবার এক মহিলা তার স্বামীর সঙ্গে শপিং করতে গেছে। এক পর্যায়ে ওই উন্নাসিক মহিলা এক সেট চুড়ি পছন্দ করল।
‘তুমি এত চুড়ি কেনো। অথচ কোনদিন পরতে দেখি না’ স্বামী অনুযোগের সুরে বলল।
‘চুড়ি পরলে ভেঙে যাবে। তাই চুড়ি পরি না, শুধু কিনি’ মহিলার চটপট জবাব।
হাতপাখাবন্দনা
হাজার
হাজার বছর ধরে গ্রামবাংলার সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে হাতপাখা।
কবি-সাহিত্যিক, বাউল শিল্পীরা হাতপাখা নিয়ে বিভিন্ন গান, কবিতা ও গীত রচনা
করেছেন এবং তুলে ধরেছেন এটার সৌন্দর্যমণ্ডিত ঐতিহ্য। হাতপাখা নিয়ে মজার
মজার রূপকথা, গল্প-কাহিনীও আমাদের সমাজে প্রচলিত।
আমাদের সমাজে এক সময় হাতপাখা বলতে তালপাখাই বোঝাত। আর সংস্কৃতে তালপাখা
‘তালবৃন্তক’ নামে পরিচিত। পরে কাপড়, বাঁশ ও সুতো দিয়ে হাতপাখা বানানো শুরু
হয়। হাতপাখায় নকশা আর ডিজাইনের নতুন মাত্রা এসেছে। পদ¥, শতফুল, উনিশকাঁটা,
সঙ্কলন, বরফি, শিঙ্গারা, শক্সখ, আয়নাকোটা, শক্সখপদ¥, ঝুরিফুল, চালতা ফুল, পানপাতা, তারাফুল,
চারমাছ, হাতিবান্ধা, মোরগ, চৌখুপি, চক্র নামে হাতপাখার নকশার কথা শোনা
যায়। কোনো কোনো নকশার মধ্যে আয়নার টুকরোও বসানো হয়। হাতলে লাগানো হয় বাঁশের
একটি নল, যাতে হাতপাখা ঘোরাতে কম বেগ পেতে হয়।
অন্যদিকে বাংলা একাডেমীর ‘লোকশিল্প’ গ্রন্থে হাতপাখা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে
‘উষ্ণমণ্ডলে অবস্থিত এদেশে খর বৈশাখের দাবদাহ এবং ভাদ্রের আর্দ্রতা
মিশ্রিত গরমে হাতপাখা মানুষের নিত্যসঙ্গী। সুতা, বাঁশ, চুলের ফিতা, বেত,
খেজুরপাতা, নারকেলপাতা, তালপাতা, কলার শুকনো খোল, পাখির পালক, সুপারির খোল,
শোলা, গমের ডাঁটা, মোটা কাগজ প্রভৃতি পাখার উপাদান। এ নিত্যব্যবহার্য
বস্তুটি বিশেষ করে মেয়েদের হাত পড়ে শিল্পের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। সুতা,
বাঁশ, সরতা বেত ও কলার খোলের শুকনা বেতি দিয়ে পাখা বোনা হয় পাটি বা ম্যাট
বোনার কায়দায়। বিভিন্ন মটিফ বা ডিজাইনে এ পাখা তৈরি হয় এবং এগুলোর বিভিন্ন
নামও রয়েছে। এর মধ্যে পানগুছি, কেচিকাটা, তারাজো, পুকুই রাজো, ধানছড়ি, ফলং
ঠেইঙ্গা, ফড়িংয়ের ঠ্যাং, রাবণকোডা, নবকোডা, কবুতর খোপ, মাকড়ের জাল, পদ¥জো,
কামরাঙ্গা জো, ধাইড়া জো, সুজনি জো, চালতা ফুল, কাগজ কাটা, হাতি, মরিচ ফুল,
আটাসান, শক্সখলতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য’।
কাপড় ও সুতো দিয়ে হাতপাখা বানাতে গেলে প্রথমে বাঁশের কাঠি দিয়ে বৃত্ত
তৈরি করে নিতে হয়। এর ওপরেই সুতো অথবা কাপড়ের নানা বুনন। বৃত্তের পরিধিতে
জুড়ে দেওয়া হয় রঙিন কাপড়ের ঝালর।
গরমে অতিষ্ঠ ইংলিশ বেনিয়ারা এ দেশে ল¤¦া কাঠের সঙ্গে লাল শালুতে কিনার
মোড়ানো পাটি জুড়ে দিয়ে আংটা লাগানো আর ছাদে ঝোলানো বিশেষ পাখা উদ্ভাবন
করেছিলেন। দূরে বসে দড়ি বাঁধা এই পাখা যারা মৃদুলয়ে টা
হাতপাখা
নতেন তাদের বলা হতো ‘পাক্সখাবরদার’। এক সময় আদালতের এজলাসেও এসব পাখা দেখা যেত।
তবে বর্তমানে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণার কারণে হালে হাতপাখা পল্লীজীবন ছাপিয়ে নগরজীবনেও বেশ পোক্ত স্থান করে নিচ্ছে।
নিত্যদিনের ব্যবহারের জন্য এক সময় বাঁশ অথবা তালপাতার ডাঁটিতে বোনা
তালপাখাই ছিল গরমে স্ব¯ি— পাওয়ার সম্বল। তবে বহনে অসুবিধা থাকায় নগরজীবনে
ফোল্ডিং হাতপাখার প্রচলন বাড়ে। কথাটাকে আরো সহজভাবে বললে এভাবে বলা হয়,
দৃষ্টিনন্দন চীনা হাতপাখার কাছে দেশি হাতপাখা টিকে উঠতে পারছে না।
শিক্ষার্থীরাও এখন বইয়ের ঝোলায় ফোল্ডিং হাতপাখা বহন করছে। বিশেষত অসহ্য রোদ
আর ভ্যাপসা গরমে ব্যাগে এই জাতীয় পাখা রাখার ফায়দা অনেক। পাবলিক বাসেও এখন
অনেককে হাতপাখা বুলোতে দেখা যায়।
হাতপাখায় জড়িয়ে আছে আমাদের ঐতিহ্য ও আভিজাত্যও। বৈশাখী মেলা থেকে শুরু
করে যে কোনো বাঙালি উৎসবেই হাতপাখার থাকে আলাদা কদর। গরমে আরাম পাওয়াই
হাতপাখার মৌল উদ্দেশ্য হলেও প্রযুক্তি ও ফ্যাশনের উৎকর্ষে এটি ধারণ করছে
শৈল্পিক রূপ।
এক সময় জমিদার বাড়ির হাতপাখাগুলো হতো ঝালর লাগানো এবং বিশাল আকৃতির।
সেসব পাখা রেশম বা সাটিনের কাপড়ের ওপর সুতা, জরি এমনকি সোনা-রুপা দিয়েও কাজ
করা থাকত। এখন অনেকের ড্রয়িংরুমে নানা ডিজাইনের হাতপাখা শোপিস হিসাবে
ব্যবহৃত হয়।
প্রাচীন কারুশিল্প হাতপাখার যাত্রা কোথায় এবং কাদের মাধ্যমে ঠিক কবে
শুরু হয়েছিল সেটা নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। তবে ভ্যাপসা গরমে হাতপাখা
নাড়িয়ে বাতাসে দোলাচল সৃষ্টি গরম হাওয়া সরিয়ে অপেক্ষাকৃত শীতল হাওয়া
প্রবাহের উদ্দেশ্যেই হাতপাখার ব্যবহার শুরু হয়েছে বলে মনে করা হয়। আর গরমে
এটার উপযোগিতা প্রমাণিত হওয়ার পর সময়ের ব্যবধানে এটা রূপান্তরের পথ বেয়ে
একটি অলঙ্করণময় শিল্পে পরিণত হয়। এখনো ধর্মীয় ও রাজকীয় অনুষ্ঠানে
কারুকাজমণ্ডিত হাতপাখার প্রচলন রয়েছে।
প্রত্নতাত্তিক সাক্ষ্য থেকে ধারণা করা হয় ভারতবর্ষ, চীন, জাপানসহ
প্রাচ্যের কয়েকটি দেশে হাতপাখার ব্যবহার ছিল। আবার প্রাচীনকালে
মধ্যপ্রাচ্যে পশুর চামড়ার তৈরি অলঙ্কৃত হাতপাখার সন্ধান পাওয়া গেছে। এটার
হাতলে গাছের ডালের অংশ অথবা পশুর হাড় লাগানো থাকত।
এক সময় গ্রামের ললনারা হাতপাখা তৈরি করে রঙিন সুতা দিয়ে ‘ভুলো না আমায়’
বা ‘যাও পাখি বলো তারে, সে যেন ভোলে না মোরে’- টাইপের ছন্দ লিখত। আবার
রোদেলা দুপুরে দুরন্ত কিশোর দলের হাতে শোভা পেত কারুকাজের তালপাখা। আর
মধ্যবয়সী ও বৃদ্ধরা গাছের ছায়ায় বসে তালপাখা হাতে বাতাস করতে করতে দূরের
রাখাল ছেলেটির বাঁশির সুর শুনত।
অন্যদিকে ক্লান্তপরিশ্রান্ত কৃষক মাঠ থেকে ফেরার পর কিষাণী ব্যস্ত হয়ে পড়ত হাতপাখার শীতল পরশে তাকে জুড়িয়ে দিত।
আসলে হাতপাখার প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে থাকতে পারে গ্রামীণ নারীর
আনন্দ-বেদনা, সুখ-দুঃখ নাম না জানা কত্ত কাহিনী। হাতপাখা বুনন ছিল আবহমান
গ্রামবাংলার চিরাচরিত অতি পরিচিত দৃশ্য। প্রযুক্তি আর যান্ত্রিকতার দাপটে
নাগরিক জীবনে হাতপাখার প্রচলন এখন কমে গেছে। তারপরও ভয়াবহ লোডশেডিংকালে
বিপর্যস্ত নগরবাসী ক্ষণিকের জন্য হলেও মনে করেন হাতপাখার শীতল পরশ বা
বাতাসের কথা। কেউ কেউ অসহ্য গরমে স্বস্তি পেতে এখনো হাতপাখার দ্বারস্থ হন।
আজকাল হাতপাখা ফ্যাশনের উপাদানে পরিণত হয়েছে। তালপাখার পাশাপাশি বাহারি
রং ও ডিজাইনে প্লাস্টিক, বেত, ব্যাকেলাইট, কাগজ দিয়ে হাতপাখা তৈরি করা হয়।
এছাড়া অধিকাংশ হাতপাখার হাতল হিসাবে জুড়ে দেওয়া হয় বাঁশের চিকন কাঠি, বেত
অথবা লাঠি। তবে আজকাল কাপড় ও সুতার কারুকার্যমণ্ডিত বাহারি ধরনের হাতপাখা
পাওয়া যাচ্ছে। এতে যুক্ত হচ্ছে হরেক রকমের রং ও সুতা, ফলস, শাড়ির পাড় ও
লেস।
‘আমার নাম তালের পাখা শীতকালে দেই না দেখা, গ্রীষ্মকালে প্রাণের সখা’- এটি
আমাদের দেশের গ্রামবাংলার একটি পুরনো প্রবচন। এখনো গরমে আমরা হাতপাখার ওপর
নির্ভরশীল। চাহিদা থাকায় অভিজাত বুটিক বাড়ি কিংবা ফ্যাশন হাউসগুলোও নজর
দিচ্ছে বাহারি হাতপাখার ওপর। এসব হাতের পাখা নানা ঢং আর রঙে চলে আসছে
অভিজাত ড্রইংরুমের সৌন্দর্য বাড়ানোর উপকরণ হয়ে।
একাধিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, বর্তমানে চট্টগ্রামের
চন্দনাইশ উপজেলার দক্ষিণ জোয়ারা গ্রামের হাতপাখা এখন বিদেশেও রফতানি
হচ্ছে। মান ভালো হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান ছাড়াও সৌদি আরব,
জার্মানি, দুবাই, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশে এখানকার পাখার
চাহিদা বাড়ছে।
বোশেখের কাঠফাটা রোদে লোডশেডিং নগর জীবনে উত্তাপ বাড়ায়- দিনে রাতে
সমানে। মাথার ওপর তিন পাখাওয়ালা যন্ত্রটা নিশ্চল ঝুলে থাকে। ঘামভেজা
দেহটাকে এক বিন্দু স্বস্তি দিতে সবার চোখ যায় হাতপাখাটার দিকেÑহোক না তা
তালপাতা, কাপড়, প্লাস্টিক, প্রক্রিয়াজাত কাঠ অথবা কাগজের। অসহ্য গরমে
হাতপাখাই হয়ে গেছে দিনে-রাতের সঙ্গী। হাতপাখা ছাড়া নগরজীবন চলে কী করে?
২০১১ সালের নববর্ষের একটি বাড়তি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বিনে পয়সায় কাগজের
হাতপাখা বিতরণ। এটার মানবিক দিক থাকলেও পণ্যের বিজ্ঞাপনই ছিল মুখ্য। রমনা,
চারুকলা, টিএসসি, শিল্পকলা প্রান্তর ঘুরে দেখা গেছে, সিঙ্গার, ইমাম
টেলিকমসহ কমপক্ষে ১৫টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বিনে পয়সায় কাগজের হাতপাখা
বিলিয়েছে। এক সময় এ দেশে তালপাখার ব্যাপক প্রচলন ছিল। বাঁশ, বেত ও কাপড়
দিয়েও তা তৈরি হতো। কিন্তু ঠিক কবে এ দেশে হাতপাখার প্রচলন হয়েছিল, তার
কোনো লিপিবদ্ধ বা প্রত্নতাত্তিক প্রমাণ আমাদের হাতে নেই। মুঘল আমলে
হাত-টানা পাখার প্রচলন দেখে এটা অনুমান করা যেতে পারে, পরবর্তীকালে জমিদার ও
উচ্চবিত্ত পরিবারগুলোতে হাতটানা পাখার প্রচলন ঘটে।
পশ্চিমা বিশ্বসহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে হাতপাখা ফ্যাশন সামগ্রী হলেও
আমাদের দেশে তা নয়। বিদ্যুতের কল্যাণে নগরজীবন থেকে হাতপাখা বিদায় নিয়েছে।
কিন্তু লোডশেডিংই হাতপাখাকে নগরজীবনে ফিরিয়ে আনছে। হাতপাখা মূলত কুটির
শিল্প হলেও হালে প্লাস্টিকের হাতপাখা চোখে পড়ে। তারপরও এটা সুসংঘবদ্ধ
শিল্পে পরিণত হতে পারেনি। তাই দেশে এ পণ্যটির চাহিদার প্রকৃত পরিসংখ্যান
জানার উপায় নেই। তবে লোডশেডিং এ শিল্পের পুনরুজ্জীবনে ভ‚মিকা রাখছেÑ এমন
দাবি একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। লোডশেডিং অভিশাপ কাটানো গেলে হাতপাখা
আমাদের ফ্যাশন পণ্য হয়ে যেতে পারে।
বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশিদের জীবনে হাতপাখার প্রচলন বাড়ছে।
লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা আর কাঁহাতক সহ্য করা যায়? তপ্তদেহে এক চিলতে শাšি—র
পরশ বুলাতে হাতপাখার বিকল্প নেই।
বিশ্বে শিল্প, হাতির দাঁত, পশুর হাড়, মাইক, চন্দনকাঠ, মুক্তো এমনকি কচ্ছপের খোল দিয়েও হাতপাখা তৈরির প্রমাণ রয়েছে।
জাপানে হাতপাখার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্য অনেক। ওখানে এটা বন্ধুত্ব,
শ্রদ্ধা ও শুভ কামনার প্রতীক। জাপানি নাচেও হাতপাখার উপস্থিতি চোখে পড়ে।
ইতিহাসে রয়েছে, ১৫শ শতকে পর্তুগিজ বণিকরা চীন ও জাপান থেকে হাতপাখা
আমদানি করে পশ্চিমা বিশ্বে তা ছড়িয়ে দিয়েছে। ১৬শ শতকে চীনা ভাঁজ করা
হাতপাখা ইউরোপে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফোল্ডিং ফ্যান হাতে ব্রিটেনের রানী প্রথম
এলিজাবেথের একটি প্রোর্ট্রেট এখনো রাজপরিবারে সংরক্ষিত রয়েছে। এ কারণে বলা
হয়, হাতের মুঠোয় ঠাঁই পাওয়া হাতপাখাই একটি জাতির ইতিহাস, ভূগোল ইতিহাসের
গল্প বলে। মিসর, ব্যবলিন, আজটেক, ইনকা, পারস্য, গ্রিক ও রোমান সভ্যতায়
হাতপাখার প্রচলন ছিল। তবে এটার আবিষ্কারক কারা, তা জানা যায়নি।
রেশম, পাখির পালক, হালকা ধাতু পাত দিয়েও হাতপাখা তৈরি হয়। এটাতে হ্যাড পেইন্টিংয়ের পাশাপাশি পুতি, ক্রিস্টাল ও ফিতা লাগানো হয়।
হাতপাখা নিয়ে প্রচলিত কৌতুক এ রকম :
একদিন এক সর্দারজি ট্রেনে চেপে কোথাও যাচ্ছিলেন। সেদিন ছিল প্রচণ্ড গরম।
তাই সর্দারজিসহ অনেকেই ফেরিওয়ালার কাছ থেকে হাতপাখা কিনে বাতাস করতে
লাগলেন। অথচ এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যেতে না যেতেই সবার হাতপাখা খুলে
নষ্ট হয়ে গেল।
কিন্তু সর্দারজির হাতপাখাটা একদম নতুনের মতোই আছে। এটা দেখে অবাক হয়ে
একজন জিজ্ঞেস করলেন, ‘সর্দারজি, আপনার হাতপাখাটি এখনো নতুনের মতো আছে কী
করে?’ সর্দারজি বললেন, ‘আরে মশাই, আমি আপনাদের মতো বোকা নাকি? টাকা দিয়ে
হাতপাখা কিনেছি কি নষ্ট করার জন্য? আমি তো হাতপাখা মুখের কাছে ধরে শুধু
মাথাটা নড়াচড়া করেছি।’
বিদেশি পণ্যের চেয়ে আমাদের দেশি পণ্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি
ঢাকা:
ব্র্যান্ডিং, ডিজাইনিং ও কমিউনিকেশন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্রিল্যান্সারস
ব্র্যান্ডিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন লিমিটেড আয়োজন করতে যাচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী
ফ্যাশন প্রোডাক্টের ইভেন্ট ‘বাংলাদেশ ফ্যাশন কার্নিভ্যাল-২০১৩’।
আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানী গুলশানে অবস্থিত
স্যাফ্রন রেস্তোরাঁ- দ্যা গার্ডেন রেস্টুরেন্টে এ ফ্যাশন কার্নিভ্যাল
অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য
মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
দেশ ও বিদেশের উন্নত পোশাক ও ফ্যাশন দ্রব্য দর্শকদের সামনে উপস্থাপনের
জন্য এই আয়োজন। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় থেকে আগ্রহী যে কেউ নিজ পণ্য এ
ফ্যাশন কার্নিভালের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ক্রেতার সামনে উপস্থাপন করতে
পারবে।
এছাড়াও এ আয়োজনের মাধ্যমে বিদেশি অংশগ্রহণকারীরা তাদের পণ্য ও ঐতিহ্য
বাংলাদেশি ক্রেতার সামনে তুলে ধরতে পারবে। পাশাপাশি ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে
ব্যবসায়িক যোগাযোগ বৃদ্ধির সুযোগও রয়েছে এই মেলায়।
আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আরাফাত হাসান মালিক বাংলামেইলকে বলেন,
‘আমাদের দেশে অনেক সৃষ্টিশীল মানুষ রয়েছেন। যারা ঘরে বসে তৈরি করছেন সুন্দর
ও নান্দনিক ডিজাইনের পোশাকসহ হাতের কাজের অনেক কিছু। কিন্তু উপযুক্ত
সুযোগের অভাবে তারা নিজেদের এ কর্ম অনেকের মাঝে তুলে ধরতে পারছেন না। আমরা এ
আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের একটা প্লাটর্ফম করে দিতে চাই। আমরা চাই বিদেশি
পণ্যের চেয়ে আমাদের দেশি পণ্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি থাকুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ উৎসবে অংশ নিয়ে যে কেউ তার ব্যবসা ও কর্মকে অন্যের
সামনে তুলে ধরতে পারবেন এবং প্রসার ঘটাতে পারবেন। মেলা শুরুর আগের দিন থেকে
মেলা চলাকালীন সময়ে আগ্রহী অংশগ্রহণকারীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে
পারবেন।’
এ উৎসবে আয়োজক কোম্পানির সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানসহ দেশি প্রায় ৪০টি
কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে। এখানে প্রদর্শনের জন্য থাকছে- ফ্যাশন ওয়্যার,
ফতুয়া, গৃহাস্থালী টেক্সটাইল, নিটওয়্যার, কুর্তা, লঅন, প্রিমিয়াম ক্লথ,
রেডিমেড পোশাক, সালোয়ার কামিজ, থ্রিপিস, শাল, শেরওয়ানি ও বিয়ের পোশাক,
প্রসাধনি, সৌন্দর্য চর্চার উপকরণ, ফ্যাশন হাউস, উপহার সামগ্রী, আধুনিক
বোরখা, হিজাব, চামড়াজাত পোশাক ও ব্যবহার্য দ্রব্য, ঘড়ি, সৌন্দর্য সেবায়
সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও বাচ্চাদের পোশাক।
ভারতীয়দের কালো চামড়ায় স্বর্ণালঙ্কার বেশি ঝলক দেয়!
ভারতীয়দের কালো চামড়ায় সোনার গয়না বেশি ঝকমক করে‘, সম্প্রতি চীনের একটি
পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকায় এ সংক্রান্ত
তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘এমনকি রাস্তার পাশে যে সব
মেয়ে শিশু ভিক্ষা করে, তাদের নাকেও সোনার নোলক দেখা যায়।‘
এছাড়া ‘ভারতীয় নারীরা সোনার নাকফুল পরা ছাড়া কোথাও বের হয় না‘ বলেও
উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। ‘ইন্ডিয়ান বিউটি অয়্যারিং গোল্ড
জুয়েলারি‘ শিরোনামে
চীনের পিপলস ডেইলি অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর উদ্ধৃতি দিয়ে
টাইমস অব ইন্ডিয়ায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়,
ভারতে সোনার গহনা পরিধান না করে কোনো নারী কোথাও গেলে তাকে ভালো চোখে দেখা
হয় না।
পৃথিবীর সব গহনার মধ্যে ভারতীয়রা সোনাকেই বেশি পছন্দ করে বলেও
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এর কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে যুক্তি দেওয়া হয়,
ভারতীয়দের কালো চামড়ায় সোনার গহনা উজ্জ্বলভাবে দৃশ্যমান হয়, এ কারণেই
তারা অলঙ্কার হিসেবে সোনার প্রতি এত আসক্ত। প্রতিবেদনে বলা হয়, এমনকি যেসব
ছোট মেয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করে, তাদের নাকেও সোনার নোলক
দেখা যায়। পাশাপাশি ভারতীয় অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার সময়
যৌতুক হিসেবে সোনা দেওয়াই পছন্দ করে। সোনার প্রতি ভারতীয়দের অতি আগ্রহের
কারণে সেখানে সর্বত্রই সোনার দোকান চোখে পড়ে, সেটা বড় শহরই হোক আর
প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনো জনপদই হোক।
ঈদ ফ্যাশন: বাহারি নকশার পাঞ্জাবি ২০১৩
ছেলেদের নতুন পাঞ্জাবি না হলে যেন অপূর্ণ থেকে যায় ঈদ আয়োজন। ঈদের নামাজ ছাড়াও এখন পাঞ্জাবি ফ্যাশন অনুষঙ্গ। সেজন্যই বাহারি রঙ ও নকশার পাঞ্জাবিতে সাজানো হয়েছে
ঈদে নানা বয়সী মানুষের রুচি ও পছন্দের কথা মাথায় রেখেই বিপণিবিতানগুলো
সেজেছে বাহারি সব চোখজুড়ানো রঙ আর বিচিত্র ডিজাইনের পাঞ্জাবিতে। ঈদের
কেনাকাটায় নগরীর নামিদামি বুটিক হাউস ও পাঞ্জাবি তৈরির দোকানে ভিড় করছেন
ক্রেতারা।
বিক্রেতারা জানালেন, গরমের কারণে এবারে সুতি কাপড়ে হালকা ডিজাইনের
পাঞ্জাবির প্রতিই ক্রেতার আকর্ষণ বেশি। সে সঙ্গে প্রতিবারের মতো জরি আর
চুমকির কাজে জমকালো পাঞ্জাবিও রয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর গাউসিয়া, নিউমার্কেট, সাইন্স ল্যাব, মৌচাক মার্কেটের
পাঞ্জাবির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, পাঞ্জাবির ঈদ বাজার এবারও বিভিন্ন নামের
পাঞ্জাবির দখলে। মেয়েদের পোশাকে যেমন ভারতীয় সিনেমা-সিরিয়ালের ছোঁয়া,
পাঞ্জাবিতেও তার প্রভাব রয়েছে।
দেশি-বিদেশি বাহারি সব পাঞ্জাবির মধ্যে ক্রেতারা খুঁজছে ফিরছেন তাদের
পছন্দের পাঞ্জাবি। ফ্যাশন হাউস ওটুর কর্মকর্তা আসিফ ইবনে মান্নান বলেন,
“এবারের ঈদ পড়েছে গরমে। তাই পাঞ্জাবিটা হওয়া চাই আরামদায়ক। আমাদের ঈদ
কালেকশনে সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবির ডিজাইনে
গলা, কলার, হাতা বা বুকের সামনে থাকছে নানা ধরনের নকশা।”
ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স থেকে পাঞ্জাবি কিনতে প্রতি বছরের মতো এবারও এসেছেন
খোন্দকার মারুফ নামে এক ক্রেতা। অঞ্জন’সের পাঞ্জাবি পছন্দের কারণ হিসেবে
তিনি বলেন, নতুন ফ্যাশনের কথা মাথায় রেখেই তারা কালেকশন করে।
এবারের ঈদে ফ্যাশন হাউস কে ক্র্যাফট, প্রবর্তনা, অঞ্জন’স, ক্যাটস আই,
মনসুন রেইন, রঙ, লুবনান, সোলড্যান্স, রিচম্যান, নোঙর লম্বা ও খাটো দুই
আইটেমের পাঞ্জাবিই এনেছে। নতুন ডিজাইন ও বাহারি রঙের পাঞ্জাবির পসরা নিয়ে
এসেছে আড়ং।
নিজের পছন্দমতো পাঞ্জাবি অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। বিভিন্ন মার্কেটের পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে চলছে পাঞ্জাবি সেলাইয়ের কাজ।
পাঞ্জাবি তৈরির জন্য চকবাজার এলাকার প্রসিদ্ধ তরণী টেইলারের
স্বত্বাধিকারী মোরশেদুল ইসলাম রোকন বলেন, “সারা বছর পাঞ্জাবির যে অর্ডার
পাওয়া যায়, ঈদ এলে তার দ্বিগুণ অর্ডার পাই। নির্দিষ্ট সংখ্যক অর্ডার নেওয়ার
পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারণ অতিরিক্ত অর্ডার নেওয়া হলে কাজের গুণ ও মান
ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। আমাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ যেমন আছে, তেমনি ক্রেতার
চাহিদাকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকি।”
রাজধানীর অন্যতম বড় পাঞ্জাবির বাজার পীর ইয়ামেনি মার্কেট। এ মার্কেটের
তিনতলাজুড়ে পাঞ্জাবির বিশাল সমাহার। এখানে বিদেশি কাপড়ে দেশি কাজ ও
ডিজাইনের গড়া পাঞ্জাবি বেশি চোখে পড়ে।
দোকানিরা বলছেন, এখন চলছে ‘উইন্ডো শপিং’। অর্থাৎ কেনার চেয়ে পছন্দ করতেই বেশি আসছেন ক্রেতারা।
এ মার্কেটের ঈদ ফ্যাশন নাহিদ গার্মেন্টস, মৃত্তিকা পাঞ্জাবি ফ্যাশন, দুর্জয়
পাঞ্জাবি ফ্যাশন, নিউ আঁখি পাঞ্জাবি ফ্যাশন, মোহাম্মদী পাঞ্জাবি, রেড রোজ
গার্মেন্টস, গ্রামীণ আড়ং, কলিকাতা পাঞ্জাবি কালেকশন, মা পাঞ্জাবি ফ্যাশন,
শুভেচ্ছা পাঞ্জাবি ফ্যাশনসহ কয়েকটি দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা
বলে এমনটিই জানা গেছে, এবারের বেচাকেনা ভালোই। ক্রমেই ভিড় বাড়ছে।
পাঞ্জাবির সমাহার আছে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটেও। ঈদ বাজারে শপিংমলগুলোতে সব বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় দেখতে পাওয়া গেলেও আজিজ সুপার মার্কেটে তরুণ-তরুণীর ভিড় যেন একটু বেশি।
আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আমিনুল বন্ধুদের নিয়ে এসেছিলেন তার
পছন্দের দোকান ‘ফোর ডাইমেনশনে’। তিনি জানান, কয়েক বছর ধরে এ দোকান থেকে
ঈদের পাঞ্জাবি কিনে আসছেন। তার মতে, নির্দিষ্ট এ ব্র্যান্ডের পাঞ্জাবির
কাপড়ের মান ভালো, ডিজাইনও বৈচিত্র্যময় এবং দামে সাশ্রয়ী।
এই মার্কেটের লাল সাদা নীল হলুদ, কৃষ্ণকলি, স্বপ্নবাজ, ঐতিহ্য, মেঘসহ অন্যান্য ফ্যাশন হাউসে ক্রেতার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ঈদের গয়নাঃ লম্বা মালা
উদাসীন কবির কাব্যমালায় থাকেন তিনি। নারী
সাজায় তাকে আপন ভালোবাসায়। তিনি আমাদের কণ্ঠের কাজ করেন ভেতর থেকে। আর
বাইরে তাকে জড়িয়ে থাকে মালার আদর। তার অন্তরঙ্গে থাকে কণ্ঠের কারুকাজ। আর
বাহিরটা জুড়ে নিজেকে প্রকাশ করার ভঙ্গি। বিশেষ করে নারীর সৌন্দর্যে তার
ভূমিকা কম নয়।
আলংকারিক সৌন্দর্য প্রকাশে নারীর কাছে তার যেমন আছে ভাবগাম্ভির্য তেমনি
আছে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা। সম্ভবত সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই অনাদি কালের সেই
পাতার অলংকারে যেমন সে ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী, এই আধুনিক যুগে পশ্চিমা আর
পূর্বের মিশেলে এখনো তার দাপট সমানতালে। মূলত যেকোনো মালাই তার গলে শোভা
পায়। আর ভাবনার সেই দুয়ার থেকেই আমাদের কাছে তার গুরুত্ব বেড়ে গেছে আরো
খানিকটা। একটা সময় ছিল যখন আঁটসাঁট গয়নাতে তার অভিরুচি প্রকাশ পেতো। যার
ফলে কামিজে বড় পরিসরে ব্যাসার্ধ রাখার যেমন প্রবণতা ছিল তেমনটি ছিল
ব্লাউজেও। সেই যুগের অবসান হয়েছে, আধুনিকার গলে এখন শোভা পাচ্ছে লম্বা
ঝুলের মালা।
একটা সময় ছিল যখন লম্বা মালার জন্য পাথরের বিকল্প কিছুই ছিল না। এখন
অবশ্য আদরের সেই ঢংয়ে পুঁতির মালার পাশাপাশি পুরোনো কয়েন, তামার পাত,
কড়ি কিংবা ঝিনুকও প্রাধান্য পায়। আবার পাথরের ভাঁজে ভাঁজে ঢুকে যায়
রুপার নানা উপকরণ। কখনো তা বার্ন করে খানিকটা পুরোনো আদল দেয়া হয়। মালার
উচ্চতা ভেদে এসব উপকরণের পাশাপাশি কাঠ বা মাটিও ব্যবহৃত হয় বৈচিত্র্য
আনতে। পাহাড়ি অঞ্চলের মালাগুলোতে আবার দেখা যায় বড় বড় রঙিন পাথরের
ব্যবহার। সঙ্গে থাকে হাতির দাঁত কিংবা কৃত্রিম শিং থেকে তৈরি নানা মোটিভ।
দেশে যেমন এ ধরনের মালার প্রচলন বেড়েছে তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তার
কদর বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে স্টাইল স্টেটমেন্টে অনেক আগেই স্থান
করে নিয়েছে এই মালাটি। তাই সেসব দেশে নানা আকৃতির পাথরের পাশাপাশি ফলস
সিরামিকেও এ মালার জনপ্রিয়তা রয়েছে। ২০ থেকে ৩২ ইঞ্চি লম্বার মধ্যে এ
মালাগুলো গলার ব্যাপ্তিতে জড়িয়ে থাকে। কখনো কখনো তা দুই-তিন ধাপে
প্যাঁচানো যেতে পারে। যার ফলে গলার একটি বড় অংশজুড়ে এই মালাটির অস্তিত্ব
থাকে।
শার্ট
কিংবা টপসের সঙ্গে মানানসই এ মালাটি দুর্দান্ত মনে হয় ফতুয়ার সঙ্গেও।
কখনো এসব মালায় অসম আকৃতির পাথর যেমন থাকে কখনো তা শুকনো ফুল আর পাথরের ফুলের
কম্বিনেশনেও হয়। পাশাপাশি কানের দুল, পায়ের পায়েল, খাড়–, ব্রেস্টলেট-ও
কম নয় ফ্যাশন স্টেটমেন্টে। ডিজাইনারদের কাছেও এ ধরনের গয়নার কদর কম নয়।
তাই স্টাইল শপগুলোতে এ মালাগুলোর চাহিদা বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। বুটিক
হাউসগুলোতে এ ধরনের মালা পাওয়া যায় অপেক্ষাকৃত বেশি। অঞ্জন’স, প্রাইড,
নগরদোলাসহ জনপ্রিয় সব বুটিক হাউসেই এই মালা যেমন আছে তেমনি ভিন্ন কিছু
ডিজাইন পাওয়া যাবে আড়ং ও মায়াসীরে। আর দামের দিক থেকেও গলার এই আদরের
জন্যও খুব বেশি বাড়তি পয়সা গুনতে হয় না। বরং স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি
করতে খুব সহজেই একটি মাধ্যম বিবেচিত হতে পারে গলার লম্বা মালা।৬০ দশকের
লম্বা পুঁতির মালা নবরূপে ফিরে এসেছে ফ্যাশনের ট্রেন্ড হিসেবে। পুঁতির
সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে রুপা, অক্সিডাইজসহ নানা ধরনের ধাতব পদার্থ। ২৫ থেকে ৩০
ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এসব মালা ফতুয়া, স্কার্ট-টপস ও ওয়েস্টার্ন পোশাকের
সঙ্গেই বেশি মানায়। আজকাল তরুণীদের ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়েছে এই
লম্বা মালা।
একসময় কেবল শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে মানিয়ে লম্বা মালা পরা
হতো। তবে সময়ের পালাবদলে তরুণীরা শাড়ি, সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি ফতুয়া
বা টপসের সঙ্গেও পরছে লম্বা মালা। লম্বা মালা হচ্ছে এমন এক অলংকার, যা
কখনো পুরোনো হয় না। তা ছাড়া লম্বা মালা মানে না বয়সের হেরফের। যেকোনো
বয়সের নারী তাঁর পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে লম্বা মালা পরতে পারেন।
মালা তৈরির উপাদান
হাড়গোড়, মাটি, সুতা, কাঠ, পুঁতি, নানা ধাতুর চাকতি মালা তৈরির উপাদান এগুলোই। দাম কম, দেখতে বড় আর নজরকাড়া। পোশাকের সঙ্গে রং মেলানোর বালাই নেই, যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই পরা যায় মালা। কিশোরী আর তরুণীদের কাছে এর কদর পেতে তাই দেরি হয়নি।
তবে মালা তৈরির উপাদানগুলোর মধ্যে এসেছে খানিকটা পরিবর্তন। এখন লম্বা
মালা তৈরির উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে মাটি, ঝিনুক, কাঠ, কাপড়, পুঁতি। আবার
হাতির দাঁত বা হাড়ের লম্বা মালা একটু ব্যতিক্রমী ফ্যাশনের অনুষঙ্গ। আর
আভিজাত্য এবং ক্লাসিক উভয়ের মেলবন্ধন ঘটে মুক্তার মালায়। ধাতব পদার্থের
মধ্যে তামা আর পিতলের সঙ্গে পুঁতির মালাও বেশ চলছে ।
কোন মালা কিসে মানানসই
প্যান্ট ও শার্টের সঙ্গে ২২-৩০ ইঞ্চি লম্বা মালা ভালো মানায়। টপসে বা শার্টে কলার থাকলে মালাটা একধাপ পরাই ভালো। আর কলার ছাড়া হলে কয়েক লহরে পরলে বেশি মানাবে । শাড়ির সঙ্গে বড় মালা খুব মানানসই। তবে তাঁতের শাড়ির সঙ্গে লম্বা মালাটা ক্লাসিক ফ্যাশনের উদাহরণ। পোশাক যেমনই হোক লম্বা বা বড় মালার সঙ্গে একটু হালকা রঙের বড় গলার পোশাক পরাই ভালো। এতে করে মালাটা পোশাকের ওপর ফুটে ওঠে। যাঁদের উচ্চতা কম, তাঁদের ক্ষেত্রে বড় মালা খুব একটা মানাবে না।
কোথায় পাবেন
বিভিন্ন বুটিক বা ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যাবে হাতে তৈরি বাহারি এবং হাল ফ্যাশনের লম্বা মালা। আবার বিভিন্ন গয়নার দোকানেও মিলবে নানা ধরনের ধাতব ও পাথরের তৈরি বড় মালা। অঞ্জনস, কে ক্র্যাফট, কুমুদিনি, রঙ, বাংলার মেলাসহ জনপ্রিয় সব বুটিক হাউজেই এই মালা পাওয়া যাবে আর ভিন্ন ধরনের ডিজাইন চাইলে আড়ং কিংবা মায়াসিরে ঘুরে আসতে পারেন। দাম পড়বে ২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। মালার সঙ্গে মেলানো কানের দুলও থাকে।
বুটিক হাউজ ছাড়াও জেনেটিক প্লাজা (দ্বিতীয় তলায়), আনাম র্যাং০গস
প্লাজা, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি (দ্বিতীয় তলায়), মৌচাক, আজিজ সুপার
মার্কেটের আইডিয়াস, বসুন্ধরা সিটির মম, মোহাম্মদপুরের আইডিয়া ক্র্যাফটে
পাবেন নানা রং ও নকশার বিভিন্ন দামের মালা।
সাজসজ্জাটা যেমন
বিভিন্ন আকৃতি ও উপাদানের মালা বাজারে পাওয়া যায়। ফতুয়ার সঙ্গে পরার জন্য পিতল, কাঠ, কড়ি, সুতার মালা বেশি মানানসই। শাড়ির সাথে পড়ার জন্য গলায় অক্সিডাইজ ও পিতলের মালা বেশি জনপ্রিয়। গলায় কম ঝুলের মালা পরলে মালাটা ভারী আর মোটা হলেই ভালো। আর বড় মালার ক্ষেত্রে মালাটা ছেড়ে কিংবা পেঁচিয়ে কয়েক লহরে পরা যেতে পারে। গলায় ভারী কোনো মালা পরলে কানে ছোট দুল পরুন। সঙ্গে পায়েল তো রয়েছেই। পায়ে পরার জন্য খাড়ুও এখন বেশ জনপ্রিয়। অ্যান্টিক সোনালি রঙের চলই এখন বেশি।
এ ধরনের লম্বা মালা পরলে মেকআপের তেমন প্রয়োজন নেই, মালাটাই যেন নজর
কাড়ে। ফলে মুখের সাজ হালকা হলেই ভালো। তবে আইশ্যাডোর ক্ষেত্রে গাঢ় নীল,
সবুজ, গোলাপি ইত্যাদি রঙের আইশ্যাডো দেওয়া যেতে পারে চোখে। হলুদ, লাল,
কালো, সবুজ এসব রঙের নেইলপলিশও ব্যবহার করা যায়। গলায় বড় মালার সাথে
হাতের গড়ন বুঝে পরা যেতে পারে ভারী ও মোটা বালা। হাতের বালা, ব্যাঙ্গল,
চুড়ি কিংবা ব্রেসলেট যা-ই পরা হোক না কেন, এখন ফ্যাশনে তা বেশ মোটা আকারের
হচ্ছে। হাতে মোটা একটি ব্যাঙ্গল আর ঠোঁটে থাকবে হালকা রঙের লিপগ্লস।
রেসিপিঃ ক্ষীর – যাহা পায়েস তাহাই ক্ষীর।
যাহা পায়েস তাহাই ক্ষীর। তবে ক্ষীর কখনো পায়েস নয়! কথাটা কেমন যেন কানে লাগে। আসলে পায়েস এবং ক্ষীরে কি তফাৎ! আমার তেমন মনে হয় না, আসলে দুটোই একই জিনিষ একটা রান্নায় সরু চাল দিয়ে করা হয় অন্যটায় চালের গুড়া বা ভাঙ্গা। এইই, বাকী প্রণালী সব একই রকম।
আজকাল বাজারে রেডিমেট প্যাকেটে অনেক কিছু পাওয়া যাচ্ছে, এটা আশার কথা। মন চাইলে দোকান থেকে কিনে আমরা সহজে এমন রান্না করে খেতে পারি। এই রকম রান্নায় রান্নাকারীর তেমন কৃতিত্ত নেই তবে যে কোন রান্না রান্নাই। যে কোন খাবার খাবারই।
আমি মাঝে মাঝে এমন খাবারের প্যাকেট কিনে নেই, চোখে পড়লে। কারন মন চাইলে কি আর করা। শহরে আমরা যে জীবন যাপন করি, তাতে ইচ্ছা থাকলেও সব কিছু করে ফেলা চলে না! চলুন আজ রেডিমেট ক্ষীর বানানো দেখি।
রেসিপি পরিমাণঃ
- এক লিটার তরল দুধ
- এক প্যাকেট রেডিমেট ক্ষীর মিক্স
- কয়েকটা কিসমিস
প্রস্তুত প্রণালীঃ
বাজারে বেশ কিছু কোম্পানির এমন ধরনের ক্ষীরের প্যাকেট পাওয়া যায়।
ভাল করে তরল দুধ জ্বাল দিয়ে নিন এবং প্যাকেটের ক্ষীর মিক্স ঢেলে দিন।
প্যাকেটের ক্ষীরে চিনি থেকে সব কিছু দেয়া থাকে।
আগুনের তাপ চলবে, সাথে নাড়াতে হবে সারাক্ষণ।
অন্যথায় ক্ষীর দলা দলা হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে পাতিলের তলায়ও লেগে যেতে পারে/ পুড়ে যেতে পারে।
ব্যস হয়ে গেল ক্ষীর। কেমন খাবেন ঠাণ্ডা না গরম গরম।
কয়েকটা কিসমিস ছড়িয়ে দিতে পারেন।
অন্য একটা ঢাকনা দিয়ে আমি এটা ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম, ইফতারের পর ঠাণ্ডা ক্ষীর খেতে ভাল লেগেছিল।
রান্নায় সাহস এবং হাত পাকানোর জন্য এমন ছোট ছোট রেডি রান্না করা উচিত।
এতে রান্নার নানান দিক গুলো চোখের সামনে চলে আসে। বুটের হালুয়া তৈরীতে
আগুনের তাপে অগ্নেয়গিরির মত যে বাবল উঠে তা আমার জানা ছিল না। চোখে চশমা
এবং সারা শরীর ঢেকে কড়াইয়ের কাছে দাঁড়িয়ে যে কসরত করতে হয়, তা না দেখলে বিশ্বাস করা মুস্কিল।
রান্না একটা শিল্প। এই শিল্পের শিল্পীদের তাই আমাদের আরো সন্মান করা উচিত, কারন তারা রান্নাঘরে আমাদের জন্য বলতে গেলে জানবাজি রেখে কাজ করেন।
চিকেন স্টার ফ্রাই
বাড়িতে ডিনারে আসছেন বন্ধুরা। কারও পছন্দ চাইনিজ, তো কারও ভারতীয় খাবার।
মেনু ঠিক করতে নাজেহাল দশা আপনার। বানিয়ে ফেলতে পারেন চিকেন স্টার ফ্রাই।
সাদা ভাত বা নুডলস যে কোনও কিছুর সঙ্গেই সঙ্গত করতে পারে এই পদ।
কী কী লাগবে
কী কী লাগবে
বোনলেস চিকেন ব্রেস্ট(অর্ধেক করা)- ৪টে
কর্নফ্লাওয়ার- ৩ টেবিল চামচ
সয়া সস- ২ টেবিল চামচ
আদা গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
রসুন গুঁড়ো- ১/৪ চা চামচ
সাদা তেল- ৩ টেবিল চামচ
ব্রকোলির ফুল- ২ কাপ
সেলারি পাতা কুচি- ১ কাপ
সরু কুচনো গাজর- ১ কাপ
ছোট পেঁয়াজ- ১টা
জল- ১ কাপ
কর্নফ্লাওয়ার- ৩ টেবিল চামচ
সয়া সস- ২ টেবিল চামচ
আদা গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
রসুন গুঁড়ো- ১/৪ চা চামচ
সাদা তেল- ৩ টেবিল চামচ
ব্রকোলির ফুল- ২ কাপ
সেলারি পাতা কুচি- ১ কাপ
সরু কুচনো গাজর- ১ কাপ
ছোট পেঁয়াজ- ১টা
জল- ১ কাপ
কীভাবে বানাবেন
চিকেন ব্রেস্ট ১/২ ইঞ্চি সরু ফালি করে নিয়ে প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে নিন।
ওই ব্যাগে কর্নফ্লাওয়ার ভরে ঝাঁকিয়ে নিন। এরপর সয়া সস, আদা গুঁড়ো, রসুন
গুঁড়ো ওই ব্যাগে ভরে ভাল করে ঝাঁকিয়ে মিশিয়ে ৩০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন।
একটা নন-স্টিক প্যানে ২ টেবিল চামচ তেল গরম করে ৩-৫ মিনিট চিকেন নাড়াচাড়া করে ভেজে নিন। চিকেন নামিয়ে
প্যানে আর এক চামচ তেল দিয়ে ব্রকোলি, সেলারি, গাজর আর পেঁয়াজ ৪-৫ মিনিট
নাড়াচাড়া করে নরম কিন্তু মুচমুচে করে ভেজে নিন। সব্জি ভাজা হলে চিকেন
প্যানে দিন। জল দিয়ে ঘন করে নিয়ে নামিয়ে নিন।
ভাত বা নুডলস যে কোনও কিছুর সঙ্গেই খাওয়া যায় এটা।
চাইনিজ ভেজিটেবল রেসিপি
আজ নিয়ে এলাম সহজ আর স্বাস্থ্যকর একটি রেসিপি-চাইনিজ ভেজিটেবল। আসুন জেনে নেই মজাদার চাইনিজ ভেজিটেবলের প্রস্তত প্রণালী।
উপকরন-
বাধাকপি, ফুলকপি, পেঁপে, গাজর, লাউ, চিচিঙ্গা, বরবটি, পেঁয়াজ, বেবি কর্ণ, মাশরুম ইত্যাদি- ১ কেজি (পাতলা সালিস করে কাটা)
সয়াবিন তেল- ১/৮ লিটার,
কর্ণ ফ্লাওয়ার – ৪ টেবিল চামচ (পানিতে মিশিয়ে তরল করে রাখবেন),
কাঁচা মরিচ ফালি – ৫টি
টেষ্টিং সল্ট,লবন ও চিনি- স্বাদ মত
এক চিমটি সাদা গোল মরিচ গুড়ো
১ কাপ পানি (চিকেন স্টক হলে ভাল হয়)
কর্ণ ফ্লাওয়ার – ৪ টেবিল চামচ (পানিতে মিশিয়ে তরল করে রাখবেন),
কাঁচা মরিচ ফালি – ৫টি
টেষ্টিং সল্ট,লবন ও চিনি- স্বাদ মত
এক চিমটি সাদা গোল মরিচ গুড়ো
১ কাপ পানি (চিকেন স্টক হলে ভাল হয়)
প্রণালী-
সাধারনত তেলের কাজে ব্যবহার হয় এরকম একটি চওড়া কড়াই চুলায় দিয়ে আঁচ বারিয়ে দিন।
এবার তাতে পুরো ১/৮ লিটার সয়াবিন তেল ঢেলে দিন।
তেল গরম হয়ে উঠলে তাতে বরবটি ছাড়া সকল তরকারী ঢেলে দিয়ে ভালভাবে নাড়ুন।
কড়াইয়ের তরকারীতে সামান্য পানি কিংবা চিকেন স্টক ঢেলে দিন (ভালভাবে নাড়ুন)।
তরকারী কিছুটা সিদ্ধ হয়ে এলে তাতে বরবটি ঢালুন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
এখন স্বাদ অনুযায়ী লবন এবং এর সম পরিমান টেষ্টিং সল্ট ও চিনি মেশান এবং তাতে সাদা গোল মরিচ গুঁড়ো ছিটিয়ে দিন।
লবন চেখে দেখুন পর্যাপ্ত হয়েছে কিনা, হলে তরকারীর উপর পানিতে মেশানো কর্ণ ফ্লাওয়ার ঢেলে দিন ও মিশিয়ে নিন ভালো করে।
তরকারীর সাথে ভালভাবে মেখে মাখা মাখা হলে কড়াই হতে নামিয়ে পরিবেশন পাত্রে ঢালুন।
তৈরী হয়ে গেল মজাদার চাইনিজ ভেজিটেবল। পরিবেশন করুন গরম গরম।
খাসির মাংসের রেজালা
উপকরণ:
খাসির মাংস ২ কেজি, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, হলুদগুঁড়া ২ চা চামচ, মরিচের গুঁড়া ২ চা চামচ, জিরার গুঁড়া ২ চা চামচ, ধনেগুঁড়া ২ চা চামচ, পোস্তদানা বাটা ২ টেবিল চামচ, তেল ১ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, কাঁচা মরিচ ১০টি, তেজ পাতা ২টি, দারচিনি ৩ টুকরা, এলাচ ৪টি, পেঁয়াজ কুঁচি ২ কাপ, কেওড়া জল ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি:
খাসির মাংস টুকরো করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। হাঁড়িতে তেল গরম করে দারচিনি, এলাচ ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ বাদামি করে ভাজুন। এবারে মাংস ও লবণ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ভেজে নিন।
মাংস ভাজা হলে পোস্তদানা বাটা ও জিরার গুঁড়া বাদে অন্যান্য বাটা মসলা
দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে ঢেকে দিন। ১০-১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ১ কাপ গরম পানি
দিয়ে মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন ও ঢেকে দিন।পানি শুকিয়ে এলে আরও ১
থেকে দেড় কাপ গরম পানি দিয়ে কাঁচা মরিচ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর
ঢাকনা খুলে জিরাগুঁড়া ও পোস্তদানা বাটা দিয়ে নেড়ে আবারও ঢেকে দিন।
মাংস মজে তেল অল্প ছাড়লে ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর চুলা বন্ধ করে দমে রাখুন কিছুক্ষণ।
বিদেশি খাবারের কিছু রেসিপি
রে সি পি
বিদেশি খাবারের প্রতি ঝোঁক আছে অনেকের। কিন্তু সবসময় তো বাইরে গিয়ে খাওয়া সম্ভব হয় না। তাই বিদেশি খাবার তৈরির নিয়মগুলো জানা থাকলে সেগুলো ঘরে বসেই বানানো যায়। আজকের আয়োজনে রয়েছে বিদেশি খাবারের কিছু রেসিপি
থাই ফ্রায়েড চিকেন
উপকরণ: আস্ত মুরগি ১ কেজি, রসুন বাটা ১ চা চামচ, আদা বাটা আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়া আধা চা চামচ, এলাচ গুঁড়া ১ চা চামচ, দারুচিনি গুঁড়া ১ চা চামচ, সয়াসস ৩ টেবিল চামচ, ফিশ সস ১ টেবিল চামচ, মরিচের গুঁড়া আধা চা চামচ, টেস্টিং সল্ট ১ টেবিল চামচ, চিনি দেড় চা চামচ, তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: মুরগির মাংস চামড়া ফেলে বুকের দিক চিরে সব ফেলে পরিষ্কার করে নিন। এবার কাটা চামচ দিয়ে কেচে নিন। কিচেন টাওয়াল দিয়ে মুছে নিন। তেল ছাড়া সব উপকরণ দিয়ে মেখে মুরগিটা মেরিনেটের জন্য ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এবার ডুবোতেলে অল্প আঁচে ভেজে তুলুন। তারপর টাবাজকো সস দিয়ে পরিবেশন করুন।
শাহী টুকরা
উপকরণ: পাউরুটি ৪ পিস, তেল আধা কাপ, চিনি ১ কাপ, পানি ১ কাপ, কিশমিশ ১ টেবিল চামচ, চেরি ১ টেবিল চামচ, ঘনদুধ আধা কেজি, পেস্তাবাদাম কুচি ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: পাউরুটির চারপাশের লাল অংশ ফেলে তিনকোনা করে কেটে তেলে ভেজে নিন। প্লেটে সাজিয়ে ওপরে ঘনদুধ ঢেলে দিন। দুধ টেনে গেলে আবার দিন। এবার পেস্তা, কিশমিশ ও চেরি ছিটিয়ে দিয়ে ফ্রিজে রাখুন। পরে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
চায়নিজ সবজি কারি
উপকরণ: সবজি ৪ কাপ, চিংড়ি কিমা আধা কাপ, মুরগি কিমা ১ কাপ, তেল আধা কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ টুকরা ৫টি, কাঁচামরিচ ৬টি, লবণ ১ চা চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, টেস্টিং সল্ট আধা চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কর্নফ্লাওয়ার গোলা ১ কাপ।
প্রণালি: চিংড়ি ও মুরগির কিমার সঙ্গে আদা, রসুন, সয়াসস ও গোলমরিচ মাখিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। কড়াইয়ে তেল গরম মাখানো মাংস কিছুক্ষণ ভেজে সবজি দিন। সবজি নরম হলে ২ কাপ গরম পানি, কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজ টুকরা দিন। শেষে কর্নফ্লাওয়ার গোলা, লবণ, চিনি ও টেস্টিং সল্ট দিন। শেষে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
প্রন বল স্পেশাল প্যালেট
উপকরণ: চিংড়ি কিমা আধা কাপ, ডিম ১টার তিন ভাগের এক ভাগ, সয়াসস ১ চা চামচ, টেস্টিং সল্ট আধা চা চামচ, লবণ আধা চা চামচ, পেঁয়াজ কিউব করে কাটা আধা কাপ, মরিচ কুচি ৩ চা চামচ, ময়দা ১ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ, পাউরুটি সøাইস ৫টি, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, ফিশ সস আধা টেবিল চামচ, ম্যাগি সস আধা চা চামচ।
প্রণালি: রুটি ছাড়া সব উপকরণ আধঘণ্টা মেরিনেট করে রাখুন। রুটি ছোট টুকরো করে সামান্য পানি দিয়ে মেখে গোল গোল বল তৈরি করুন। বলের মধ্যে মেরিনেট করা কিমা পুরের মতো করে দিন। কড়াইয়ে তেল গরম করে অল্প আঁচে বাদামি করে ভেজে নিন। গরম গরম সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
চিকেন মাচুরিয়ান
উপকরণ:
হাড় ছাড়া মুরগির মাংস
পাতলা করে কাটা ২৫০ গ্রাম, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, রসুন
কুচি ২ টেবিল চামচ, ডিম ১ টা, পেয়াজ মোটা কুচি আধা কাপ, মরিচ গুড়া ১
চা-চামচ, সিরকা ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ৩ টেবিল
চামচ, ধনে পাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, ময়দা ৩ টেবিল
চামচ, লবণ পরিমাণমতো, স্বাদ লবণ আধা চা-চামচ, তেল পরিমাণ মতো।
প্রণালি:
মুরগির টুকরা ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। ডিম, লবণ, ময়দা, সামান্য
স্বাদ লবণ ও লেবুর রস মুরগির সঙ্গে মাখিয়ে ২০-২৫ মিনিট রাখুন। তেল গরম
করে মাখানো মুরগি অল্প আঁচে বাদামি করে ভেজে উঠিয়ে রাখুন। পাত্রে আরও একটু
তেল গরম করে আদা, রসুন, পেয়াজ ও কাচা মরিচ দিয়ে কয়েক মিনিট ভেজে নিন।
এবার এতে টমেটো সস, লবণ, চিনি, স্বাদ লবণ ও এক কাপ পানি দিয়ে দিন। ফুটে
উঠলে সিরকা গোলমরিচ গুঁড়া, সয়াসস ভাজা মুরগি ও ধনে পাতা দিয়ে একটু নেড়ে
নামান। পোলাও বা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন।
রেসিপি: অরেঞ্জ চিকেন
দেশি-বিদেশি রেস্তোঁরার মুখোরোচক খাবার খেয়ে অনেকের মন চায় ঐ খাবারটি ঘরে তৈরি করতে। নিজের হাতের রান্নার স্বাদ খানিকটা আলাদা। খাবারে তৃপ্তিও বেশি। যারা দেশি-বিদেশি খাবার পছন্দ করেন তাদের জন্য অরেঞ্জ চিকেনের রেসিপি দেয়া হল।
উপকরণ
আধা কাপ বাটার মিল্ক
৩ পাউন্ড চামড়া ছাড়া চিকেন ব্রেস্ট
আধা কাপ ময়দা
আধা চা চামচ পিপার
১ কাপ পানি
আড়াই চা চামচ অরেঞ্জ জুস
১ কাপ ব্রাউন সুগার
এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ রাইস ভিনেগার
২ চা চামচ সয়া সস
এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ লেমন জুস
আধা চা চামচ রসুন
এক চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ রেড পিপার ফ্লেকস
৩ চা চামচ কর্নস্টাচ
প্রণালি
বড় একটি বাটিতে আধা কাপ বাটার মিল্ক নিন। চিকেন ব্রেস্ট টুকরো করে
কেটে বাটিতে রাখুন। ভালো করে বাটার মিল্কের সঙ্গে মেশান। এবার এর সঙ্গে
ময়দা মেশান। চিকেনের টুকরায় ময়দা মেশান। চিকেন থেকে অতিরিক্ত ময়দা সরিয়ে
ফেলুন। ফ্রাই প্যানে তেল দিন। ডুবে তেলে সোনালি রঙ আসা না পযন্ত ভাজুন।
ভাজা চিকেন তুলে টিস্যু পেপারে মুড়িয়ে অতিরিক্ত তেল বের করে দিন। আরেকটি
বাটিতে লবণ, পিপার, অরেঞ্জ জুস, ব্রাউন সুগার, সয়া সস, লেমন জুস, রসুন, রেড
পিপার ফ্লেকস নিন। মিশ্রন তৈরি করুন। মিশ্রনটি একটি প্যানে দিয়ে ভালো ভাবে
জ্বাল দিন। এবার মিশ্রনতে চার চা চামচ পানি দিন। আবারও জ্বাল দিন। এবার
ভাজা চিকেন মিশ্রনটিতে দিয়ে ভালো ভাবে মেশান। ব্যস, হয়ে গেল অরেঞ্জ চিকেন।
কুলফি !!!
উপকরণ
(৬টি কুলফির জন্য)
দুধ – ৫০০ গ্রাম ফ্রেশ ক্রিম – আধা কাপ কনডেন্স মিল্ক –
আধা কাপ পছন্দের ফলের রস – ১ কাপ চিনি – আধা কাপ((স্বাদ মতো) জাফরান –
সামান্য যে কোনো বাদাম কুঁচি-২ টেবিল চামচ।
পদ্ধতি:
অল্প আঁচে দুধ জ্বালিয়ে
ঘন করে অর্ধেকটা করুন। ফ্রেশ ক্রিম ও কনডেন্স মিল্ক দিয়ে আরও ৫ মিনিট
চুলায় রাখুন। খুব ভালো করে মিলিয়ে নিন। দুধ ঠাণ্ডা করে জাফরান, ফলের রস,
চিনি দিয়ে বিট করুন। কুলফির মিশ্রণে বাদাম কুঁচি দিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে
নিন। চাইলে মিক্সারে ৩০ সেকেন্ড বিট করে নিতে পারেন। কুলফি তৈরির জন্য এবার
পছন্দ মতো কুলফি বক্সে মিশ্রণ ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। ৬ ঘণ্টা পর ফ্রিজ
থেকে বের করে খেয়ে দেখুন কেমন মজা হয়েছে আপনার নিজের তৈরি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা
কুলফি। আপনি পছন্দ মতো সব কিছু যোগ করেই তৈরি করতে পারেন মজার কুলফি। চাইলে
ফলের রসের পরিবর্তে যে কোনো ফ্রেভার দিতে পারেন। ঘরে বাদাম বা জাফরান না
থাকলেও কুলফি খেতে ভালোই হবে।
ঘরেই তৈরি করুন মজাদার সন্দেশ
ছানার সন্দেশ
উপকরণ :দুধ : ২ লিটার
টক দই অথবা লেবুর রস : পরিমাণমত
চিনি : ২ টেবিল চামচ
কনডেন্সড মিল্ক : ২০০ গ্রাম
ঘি : ২ টেবিল চামচ
এলাচ গুড়া : এক চিমটি
সুজি : ২ চা চামচ
কিশমিশ / বাদাম সাজানোর জন্য পরিমাণমত
প্রণালি :
আগে জেনে নিন ছানা তৈরির প্রণালি। প্রথমে হাঁড়িতে দুধ জাল দিতে হবে।
ফুটে উঠলে পরে তাতে টক দই বা লেবুর রস দিয়ে নাড়তে হবে যতক্ষণ না দুধের ছানা
এবং পানি আলাদা না হয়ে যায়। একটি চালনিতে ছানা থেকে পানি ঝরিয়ে ৩০ মিনিট
রেখে দিতে হবে। আধাকাপ পানিতে চিনি গুলিয়ে রাখতে হবে। হাড়িতে ঘি গরম করে
ছানাটা কিছুক্ষণ ভাজতে হবে। এবার এর মধ্যে এলাচগুঁড়া আর সুজি দিয়ে আরো
কিছুক্ষণ ভাজতে হবে। এবার চিনি মিশ্রিত পানি ছানার মধ্যে ঢেলে কিছুক্ষণ
নাড়তে হবে। আস্তে আস্তে কনডেন্সড মিল্ক ঢালতে হবে এবং একই সঙ্গে নাড়তে
হবে।ছানা যখন মাখা মাখা হয়ে আসবে তখন তা ২-৩ মিলিমিটার পুরু পাত্রে ঢালতে
হবে। ঠাণ্ডা হলে ৪-৫ ঘণ্টা রেফ্রিজারেটারে রাখতে হবে। গরম অবস্থায় এটাকে
হাত দিয়ে গোল অথবা যে কোনো আকৃতির ও করে নেওয়া যায়। এরপর শক্ত অবস্থায় কেটে
তার উপরে কিসমিস এবং বাদাম দিয়ে পরিবেশন করা যায়। চিনি প্রয়োজনে কম বেশি
করা যেতে পারে।
মজাদার লাউশাক ভর্তা। গরম গরম ভাতের সঙ্গে ওমমম!!!
ঢাকা: স্বাস্থের জন্য উপকারী একটি খাবার
হচ্ছে লাউশাক। ভর্তা, ভাজি অথবা তরকারি নানাভাবেই এই শাক রান্না করা যায়।
তবে গরম ভাতের সঙ্গে লাউশাক ভর্তা খেতে বেশ মজা। আর এটি তৈরিতেও সময় লাগে
কম।
উপকরণ:
কচি লাউপাতা ২৫ থেকে ৩০টি, রসুন বড় সাউজের একটি, কাঁচামরিচ কুচি ৬ থেকে ৭টি, আদা বাটা ১ চা চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, সরষে বাটা ২ চা চামচ, সরিষার তেল সামান্য, হলুদ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, লবণ পরিমাণ মতো।
প্রণালী:
প্রথমে লাউপাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। কয়েকটি পাতা বিছিয়ে রাখতে হবে। এবার ওপরের সব মসলা একটি বাটিতে মেখে বিছানো পাতাগুলোর মধ্যে রেখে ভালো করে মুড়ে দিতে হবে। এর সঙ্গে বাকি পাতাগুলো মুড়ে সুতা দিয়ে বেঁধে দিতে হবে, যাতে মসলা বের না হয়। এবার বসা ভাতের মধ্যে মসলা মোড়ানো লাউপাতা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ভাত হয়ে গেলে মসলা মোড়ানো পাতা বের করে পাটায় বেটে নিতে হবে। এরপর বাটা মিশ্রণটি সরিষার তেল দিয়ে মেখে নিলেই হয়ে যাবে মজাদার লাউশাক ভর্তা। গরম গরম ভাতের সঙ্গে এ ভর্তা থেকে খুব মজা লাগবে। ভর্তা তৈরির করার জন্য লাউশাক সেদ্ধ রাইস কুকারেও করা যায়।
গরম গরম আলুপরোটা
গরম গরম আলুপরোটা
ঢাকা:
প্রতিদিন সকালে একই ধরনের নাস্তা খেতে ভালো লাগে না। তাই মাঝে মধ্যে যদি
নাস্তায় একটু পরিবর্তন আনা যায় মন্দ হয় না। অনেকেই নাস্তায় পরোটা খেয়ে
থাকেন। ইচ্ছে করলেই এই পরোটাতে একটু আলু যোগ করে বানাতে পারেন সুস্বাদু
আলুপরোটা। তবে সেজন্য আপনাকে একটু বাড়তি সময় দিতে হবে। প্রয়োজন হবে বাড়তি
কিছু উপকরণের। শুধু সকালের নাস্তা নয়, এই পরোটা আপনি খেতে পারেন বিকেলের
নাস্তা হিসেবেও।
আলুপরোটা বানাতে যা যা লাগবে:
আলুসিদ্ধ ২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, তেল ৩ টেবিল চামচ, আদা বাটা সিকি চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, জিরা বাটা আধা চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, গোল মরিচ আধা চা চামচ, লবণ ২ চা চামচ, শুকনা মরিচ ১ চা চামচ, ময়দা পরিমাণ মতো।
যেভাবে তৈরি করবেন:
একটি পাত্রে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ ঢেলে বাদামী করে ভেজে নিন। পেঁয়াজ বাদামী হয়ে এলে তাতে আদা, রসুন, জিরা, গোলমরিচ, শুকনা মরিচ, পেঁয়াজ বাটা ও লবণ দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। এবার কষানো মসলায় আলু সেদ্ধ দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিন।
এবার মিশ্রনটি ময়দার সঙ্গে ভালো করে মাখিয়ে পরোটার মতো বেলে গরম তাওয়ায়
পরিমাণ মতো তেলে ছেঁকে নিন। ব্যাস, হয়ে গেলো গরম গরম আলুপরোটা। সবজি, ডিম
অথবা শুধু সস দিয়েও খেতে পারেন সুস্বাদ এই আলুপরোটা।
" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!