হার্টের করনারি আরটারির মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল করে যার ফলে হার্টের
মাংসপেশি পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়। কারণ রক্ত পুষ্টি সরবরাহ করে। কিন্তু যদি
চর্বি বা রক্ত জমাট বেধে আরটারির রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয় তবে মাংসপেশি
পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পায় না এবং হার্টের মাংসপেশি মারা যেতে থাকে।
এই মৃত মাংসপেশি আর ভাল করা যায় না। এ কারণে হার্টের কাজ করার ক্ষমতা কমে
যায়। একে myocardial infraction বলে। বেশির ভাগ হার্ট ফেল এ কারণে হয়ে
থাকে।
এই মৃত হার্টের মাংশপেশীকে পুনরায় সৃষ্টি করতে লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজ
জীন থেরাপির মাধ্যমে হার্টের মাংসপেশি তৈরি ও ফেনসিলভেনিয়ার পিটসবার্গ
বিশ্ববিদ্যালয় স্টিম সেলের (stem cell) মাধ্যমে হার্ট মাশুল তৈরি করার ওপর
গবেষণা চালাচ্ছে।
জীন থেরাপির মাধ্যমে মাংসপেশি হার্ট ফেইলার রোগীদের ওপর গবেষণায় দেখা যায়, তাদের শরীরে SERCA2a
নামের প্রোটিনের মাত্রা অনেক কম।বিজ্ঞানীরা এক ধরনের জিনকে জেনেটিকালি
মডিফাই করা ভাইরাসের মধ্যে ঢুকিয়ে তা হার্টের মাংশপেশীর কোষের ওপর স্থাপন
করেন।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এ জিনের মাধ্যমে ভাইরাস হার্টের নিউক্লিয়াসের মধ্যে
অতিরিক্ত ডিএনএ (DNA ) তৈরি করে ফলে হার্টের মাংশপেশিতে বেশি মাত্রা এ
SERCA2a প্রোটিন তৈরি করবে এবং মরে যাওয়া মাংসপেশিকে আবার পূর্বের
অবস্থায় ফিরে আনা সম্ভব হবে। হার্টের মাংশপেশি ভাল থাকলে হার্ট ফেল ও
হার্টের অন্যান্য রোগের সম্ভাবনা অনেক অংশে কমে যাবে।
stem cells এর মাধ্যমে হার্টের মাংসপেশি তৈরি
বিজ্ঞানীরা stem cell ব্যবহার করেছেন মানুষের হার্টের মাংসপেশি তৈরি
করার জন্য। তৈরি করার পর তা এটি পাত্রের মধ্যে রাখলে সঙ্কোচন ও প্রসারণ
লক্ষ করা যায়। Pittsburgh বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক হার্টের কোষ
(MCPs) তৈরি করার জন্য মানুষের শরীরের pluripotent stem (iPS) cells
ব্যবহার করেন। iPS cells এমন একটি অবস্থা যেখান থেকে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে
শরীরের যেকোনো অঙ্গের কোষ তৈরি করা সম্ভব। বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের মাধ্যমে এই
পরীক্ষাটি সম্পন্ন করেছেন।
দেখা গেছে, হার্ট মাশুলের মধ্যে IPS কোষ বড় হয়েছে এবং হার্টের
মাংসপেশি কাজ করছে। তবে একজন বিজ্ঞানী বলেন, মানুষের সম্পন্ন হার্ট মাশুল
তৈরি করতে আর অনেক সময় লেগে যাবে।
হার্ট ফেইলারের শেষের অবস্থা থেকে হার্টকে কখনও ভাল করা যায়না এবং
প্রতিস্থাপন অঙ্গের পরিমাণও কম এবং অর্ধেকেরও বেশি হার্টের রোগী ওষুধে ভাল
হয়না। তাই হার্টের বিজ্ঞানিরা হার্টের মাশুল তৈরি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা
করে যাচ্ছেন।
World Health Organization এর একটি জরিপে দেখা যায়, প্রতি বছর ১ কোটি
৭০ লাখ মানুষ হার্টের রোগে মারা যান। তাই বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা সার্থক হলে
বেঁচে যাবে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ।
0 comments:
Post a Comment