কম ওজনও ভালো নয়


সাধারণত ডায়াবেটিস রোগ সহজে সারে না। তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ রোগ খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এবং তা নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রায় স্বাভাবিক কর্মঠ জীবনযাপন করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে নিজের অবস্থা ও রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা ও নিয়মনীতি মেনে চলতে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা বাঞ্ছনীয়। এটা সম্পূর্ণ বিপাকজনিত রোগ বলে খাদ্যগ্রহণের ক্ষেত্রে অতি সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। সঙ্গে সঙ্গে জীবনধারায় শৃঙ্খলাও গুরুত্বপূর্ণ।


ডায়াবেটিস রোগীর শরীরের ওজন বেশি থাকলে তা কমিয়ে এবং ওজন কম থাকলে বাড়িয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে এসে এই স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। চিনিজাত বা মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট জাতীয় খাবার যেমন ঘি, মাখন, চর্বি, ডালডা, মাংস ইত্যাদি খাবারের বদলে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট জাতীয় খাবার যেমন সয়াবিন তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি এবং সব ধরনের মাছ খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। চিকিৎসকের নির্দেশিত পরিমাণের বাইরে ক্যালরিবহুল খাবার খাওয়া যাবে না। তিতা জাতীয় খাবার যেমন নিয়মিত করলার রস খেলে ডায়াবেটিস রোগের প্রকোপ কম হতে পারে। যোগশাস্ত্রে এই রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় করতে প্রাচীন মুনিঋষিদের প্রবর্তিত কিছু নিয়ম ও যোগব্যায়াম অভ্যাসের উল্লেখ রয়েছে। যেমন- ভাত বা রুটির বদলে কাঁচকলা সিদ্ধ, মানকচু বা ওল সিদ্ধ খাওয়া। অম্লধর্মী আমিষ জাতীয় খাদ্য, যথা- মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি গ্রহণ না করে ক্ষারধর্মী আমিষ জাতীয় খাদ্য, যথা- দই, ছানা, নারিকেল ইত্যাদি গ্রহণ করা।


নিম গাছের বাকল অথবা তেজপাতা ভেজানো পানি খালিপেটে পান করলে বহুমূত্র রোগীরা দ্রুত ফল লাভ করে। প্রথম দিন এক গ্লাস জলে ১টি তেজপাতা, পরের দিন ২টি, এভাবে ২১ দিনের দিন ২১টি তেজপাতাসহ জল পান করতে হবে। পুনরায় ১টি করে কমিয়ে ২১ দিনের দিন ১টি তেজপাতা ভেজানো জল পান করতে হয়। অর্থাৎ মোট ৪২ দিন পান করতে হয়। পাশাপাশি কিছু যোগব্যায়াম অভ্যাস করা প্রয়োজন। সকালে-সহজ বস্তিক্রিয়া, পরে গোমুখাসন, উত্থিত পদাসন, পদহস্তাসন, অর্ধচন্দ্রাসন, জানুশিরাসন, হলাসন, অগি্নসার ও যেকোনো একটি সহজ প্রাণায়াম। সন্ধ্যায়- যোগমুদ্রা, পবনমুক্তাসন, পশ্চিমোত্তানাসন, শশঙ্গাসন, উষ্ট্রাসন, অর্ধমৎস্যেন্দ্রাসন, জানুশিরাসন, অগি্নসার ও ভ্রমণ-প্রাণায়াম। এই যোগ ব্যায়ামগুলো অভ্যাসের পূর্বে কিছু খালি হাতে ব্যায়াম বা সূর্য-নমস্কার ব্যায়াম অভ্যাস করে নিলে আরেকটু দ্রুত ফললাভ হয়।


উপরোক্ত খাদ্যতালিকা থেকে নিজ অভিরুচিমতে প্রস্তুত একটা নিয়ন্ত্রিত ও সুষম খাদ্যতালিকা অনুযায়ী খাদ্যগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত ২/৩ মাস উল্লেখিত যৌগিক ব্যায়ামগুলো অভ্যাস করলে প্লীহা, যকৃৎ ও অগ্ন্যাশয় সুস্থ ও সক্রিয় হয়ে ওঠলে আমিষ ও শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য থেকে গ্লুকোজ তৈরি করে যকৃতে গ্লাইকোজেন রূপে সঞ্চিত করে রাখে এবং এই গ্লাইকোজেন দৈহিক নানা প্রয়োজনে যথাসময়ে ব্যয়িত হয়ে রোগীকে রোগমুক্ত করতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করে নেওয়া উচিত। তাতে রোগমুক্তির জন্য তা আরও সহায়ক হবে।

Related Posts:

  • হজমশক্তি বাড়াতে অনেকেই ওজন নিয়ে আছেন খুব চিন্তায়। কী করলে কী হবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না। হয়তো কম খাচ্ছেন, ব্যায়াম করছেন, কিন্তু ওজন কমছে না। আবার হজমের গণ্ডগোল… Read More
  • ধীরে খান, ওজন কমান ইউনিভার্সিটি অব রোড আইল্যান্ডের গবেষকরা জানিয়েছেন, দ্রুত খাওয়া খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বাড়ায়। তাদের প্রকাশিত দুটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরু… Read More
  • শসা খাওয়ার বিভিন্ন কারণ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি উত্পাদিত সবজির মধ্যে শসা চতুর্থ। শসা খাওয়ায় কত কী উপকারিতা মেলে জেনে নিন— পানিশূন্যতা একটি সাধারণ শারীরিক সমস্যা। অনেক… Read More
  • স্বাস্থ্য রক্ষায় ২০ উপায় আপনার স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য খুব বেশী কিছু করার দরকার নেই৷ কিছু ৰুদ্র পদৰেপই আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে৷ ১. ‘হাঁটাকে একটা … Read More
  • ক্যানসার : বাঁচার লড়াইয়ে এগিয়ে বিবাহিতরা ক্যানসারে আক্রান্ত অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিতদের মৃত্যুর ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম। সম্প্রতি মার্কিন এক গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানান,… Read More

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!