দাম্পত্যে রোমান্স ফিরুক ১৪ উপায়ে


দিন যাপনের কোলাহলে কোথায় যেন হারিয়ে যায় দাম্পত্যের আন্তরিকতা। পাশাপাশি থেকেও হয়তো অনুভব করা যায়না সম্পর্কের মাঝে সেই প্রেমের শিহরণ। বিয়ের প্রথম দিকের রোমান্টিক দিনগুলোর কথা মনে পড়লে নিজের অজান্তেই কেমন যেন মন খারাপ হয়ে যায়। অথচ সেই দম্পতি আর বর্তমানের দম্পতি কিন্তু আলাদা নন। কিন্তু তারপরেও দৈনন্দিন ব্যস্ততা আর সময়ের প্রভাবে দাম্পত্য সম্পর্কে কোথায় যেন একটা সুর কেটে যায়। অথচ একটু চাইলেই কিন্তু সেই দিনগুলো, অসম্ভব সুন্দর মুহূর্তগুলো ফিরিয়ে আনা সম্ভব সহজেই!
আপনিও যদি থাকেন এমন পরিস্থিতিতে, তবে আপনারই জন্যে রইলো দারুণ কার্যকর কিছু টিপসঃ

১)স্পর্শ করুনঃ

ভাবছেন, এ আবার নতুন কী! স্বামী স্ত্রীর মাঝে স্পর্শ ব্যাপারটা তো থাকেই। কিন্তু অনেক দিন একসাথে সংসার করার পর একেবারে একঘেয়েমিতে পরিণত না হলেও বিয়ের শুরুর দিনগুলোর মত শিহরণটা ঠিক সেরকম থাকে না। ব্যাপারটা তখন একরকম অভ্যস্ততায় পরিণত হয়। তাই এখানে আপনি একটু বৈচিত্র্য আনতে পারেন আর দাম্পত্য জীবনের একটা বড় পজিটিভ দিক হলো এটি। স্পর্শ করুন আপনার সঙ্গীকে। হতে পারে অফিসে যাবার সময় বা ফেরার পর বা এমনিতেই বাসায় অবসরে অকারণেই কয়েক মুহূর্তের জন্যে জড়িয়ে ধরা বা ছোট্ট একটা চুমু। ক্ষতি কি! বরং আপনার সঙ্গী অবাক ও খুশী হবেন। উনিও আপনাকে উপহার দেবেন এমন কিছুই! রোজ!

২)যৌন জীবনে এগিয়ে আসুনঃ

হয়তো সব সময় আপনার সঙ্গীই এগিয়ে আসেন। কিন্তু একটু পরিবর্তন আনুন না! নিজেই এগিয়ে যান। হ্যাঁ, প্রথমবার ব্যাপারটা খুব অস্বস্তিকর হতে পারে আপনার জন্যে। কিন্তু সম্পর্কে নতুনত্বের ছোঁয়া আনতে এর চেয়ে ভালো বিকল্প নেই!

৩)হাতটা ধরুনঃ

হয়তো দাম্পত্য জীবনের শুরুতে সঙ্গীকে কথা দিয়েছিলেন তার হাতটা কখনোই ছেড়ে দেবেন না। কিন্তু এখন নানা ব্যস্ততায় একবার তার হাতটা ধরে বসে থাকার অবসরও হয়ে ওঠে না। এবার কিন্তু এ কাজটাই করুন। আর তা দারুণ কাজেও দেবে। একসাথে যখন বাসায় বসে মুভি দেখছেন বা টিভিতে খবর দেখছেন সঙ্গীর হাতটা হাতে নিন। দেখবেন, নতুন এক ধরনের অনুভূতি তো টের পাবেনই!

৪)একান্ত মুহূর্ত উপভোগ করুনঃ

একান্ত ভালোবাসার মুহূর্তগুলোর সময়ে ফোন মনে করে বন্ধ করে রাখুন। এর চেয়ে বিরক্তিকর আর কিছুই হতে পারে না। ফোন বন্ধ করে না রাখতে পারলে কমপক্ষে ফোন সাইলেন্ট করে রাখুন। ঘরের কাজের দায়িত্বগুলো ভাগাভাগি করে নিয়ে যত জলদি সম্ভব কাজ সেরে দুজন দুজনকে সময় দিন। হতে পারে বারান্দায় বা ছাদে বসে থাকা, গল্প করা।

৫)প্রশংসা করুনঃ

‘বাহ! আজ তো তোমাকে দারুণ লাগছে’, ‘এই পোষাকটা তোমাকে খুব ভালো লাগে’- এই ধরণের প্রশংসা করুন। তবে যেটা সত্যি সেটাই, বানোয়াট কিছু নয়। প্রশংসার আবেদন সব সময় একই রকম। তাই এ টিপসটা কাজে লাগান। আপনি যখন আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করেবেন, তিনি খুশি হবেন ও আপনার ভালো দিকগুলোই তার চোখে নতুন করে ধরা পড়বে। দাম্পত্য জীবনকে দেখার সাদাকালো কাঁচটা বদলে রঙিন কাঁচ লাগান!

৬)উপহার দিনঃ

খুব বেশি খরচের ব্যাপার নয় এটা। হতে পারে এক গাছি কাঁচের রঙিন চুড়ি, হতে পারে একটা চকোলেট, হতে পারে একটা মুভির সিডি বা হতে পারে একটা বডি স্প্রে/টিশার্ট। যা ইচ্ছে দিন। তবু ছোট খাট উপহার মাঝে মাঝেই দিতে পারেন সঙ্গীকে।

 

৭)একসাথে ছবি তুলুনঃ

সংসারেরর দৈনন্দিন কাজের ছবি তুলে রাখুন। ধরুন আপনার স্ত্রী রান্না করছেন বা স্বামী গাছে পানি দিচ্ছেন এমন কিছু ছবি তুলতে পারেন। একদিন ছুটির দিনে পরিবারের সবাই মিলে টুকরো টুকরো মুহূর্তের ছবি তুলে রাখুন। দিনশেষে দেখবেন আপনাদের রোজকার একঘেয়ে সংসারের টুকরো টুকরো আনন্দের ছবি মিলে কত সুন্দর একটা সুখী জীবন আপনারা একসাথে কাটাচ্ছেন!

 

৮)একসাথে কিছু ভালো সময় কাটান রোজঃ

এটা করতেই হবে। হোক তা ১০ মিনিটের জন্যে। কাজ থেকে ফিরে টিভি দেখা বা অন্য কাজ থেকে ১০ টা মিনিট সময় বের করে রাখুন কেবল দুজন দুজনের জন্যে। কথা বলুন। কথা শুনুন মনোযোগ দিয়ে। দেখবেন কত না বলা কথা রয়ে গেছে!

 

৯)একসাথে কিছু কাজ করুনঃ

অফিস থেকে ফিরে একজন মুভি নিয়ে, আর আরেকজন ফেসবুক নিয়ে বসে থাকলে কিন্তু এভাবেই দূরত্ব বাড়তে থাকবে। এক কাজ করুন না, দুজন মিলেই একসাথে করুন। হতে পারে সেটা গেমস খেলা, টিভি দেখা বা অন্য কিছু। সন্তান থাকলে তাদেরকেও আনন্দে সামিল করে নিন।

 

১০)রান্না করুন প্রিয়জনের পছন্দের খাবারঃ

সঙ্গীর পছন্দের খাবারটি যত ঝক্কিই হোক না কেন মাসে একবার রান্না করার চেষ্টা করুন। বা জেনে নিন তার মায়ের কাছে, ছেলেবেলায় কোন খাবারটি তিনি পছন্দ করতেন, রেসিপিটাও জেনে নিতে ভুলবেন না যেন!

 

১১)সারপ্রাইজ ক্যান্ডেল লাইট ডিনারঃ

ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে যে এক কাড়ি টাকা খরচ করে নামী দামী রেস্টুরেন্টেই যেতে হবে এমন কোন কথা নেই! ঘরেই ভালো কিছু রান্না করে সুন্দর করে সাজান। দোকান থেকে কিনে আনুন ফুল আর সুগন্ধী মোম! সঙ্গীকে না জানিয়েই আয়োজন করে রাখুন। দেখবেন উনি তো চমকে যাবেনই! আর চোখের পলকে আপনারাও ফিরে গিয়েছেন সেই শুরুর দিকের রোমান্টিক দিনগুলোয়!

 

১২)ঘুম থেকে জেগে উঠুন একসাথেঃ

ঘুম থেকে জেগে উঠুন একসাথে আর একই সময়। একটা ছোট্ট চুমু দিয়ে ঘুম ভাঙ্গাতে পারেন আপনার সঙ্গীর। সকালে কাজে যাবার আগে একটু সময় করে একসাথে নাস্তা করুন। চা খান, গল্পগুজব করুন। সকালে দেরী করে ঘুম থেকে উঠে অফিসের দিকে দৌড়াবার চেয়ে সঙ্গীর সাথে কাটানো এই সময়টা সারাদিন আপনাকে অনেক বেশী রিফ্রেশ রাখবে।শোবার ঘরের ঘড়ির কাঁটাটা ১৫ মিনিট এগিয়ে রাখুন। সকালে টাইম ম্যানেজমেন্টে সমস্যা হবে না।

 

১৩)রোমান্টিক সময় কাটানো স্থান গুলোয় বেড়াতে যানঃ

প্রথম যেখানে হানিমুনে গিয়েছিলেন, বছরে একবার হলেও সেখানে ঘুরে আসুন দুজনে। স্মৃতিগুলো সতেজ তো হবেই আর এর রেশও থেকে যাবে বহুদিন! বন্ধু বা আত্মীয়কে সাথে নিয়ে যাবেন না, কেবল দুজনে যান।

 

১৪)অতিথিপরায়ণতার মাঝেও নিজেদের জন্যে সময় রাখুনঃ

বাসায় অতিথি আসবেই, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অতিথিদের জন্যে নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনকে ক্ষতিগ্রস্থ করবেন না। চেষ্টা করবেন একসাথে ৫ মিনিট হলেও আলাদা থাকার। একসাথে ঘুমোবার নিয়মটারও পরিবর্তন ঘটাতে যাবেন না। মুখ ফুটে না বলতে পারলেও হয়তো এতে আপনার সঙ্গীর খারাপ লাগতে পারে। কিছু বিষয়ে শক্ত হোন। নিজেদের জন্যে সময় দিন, দাম্পত্যকে সময় দিন। অতিথিদের আপ্যায়ণ করতে গিয়ে যাতে আপনার সম্পর্ক আহত না হয়! 

আপনাদের ঘরের বাতাসে এবার সারাক্ষণই ভেসে বেড়াবে ভালোবাসার রঙিন প্রজাপতি। ফিরিয়ে আনুন পুরোনো দিনগুলো। বছরের প্রতিটি দিনই হোক আপনাদের দাম্পত্য জীবনে ভ্যালেন্টাইন্স ডে!

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!