কোক পেপসির যতো বিপদ!

কোকা কোলা ও পেপসি কোলা দুটি মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি, তবে কোম্পানিদ্বয় তাদের কোমল পানীয়র জন্য সবিশেষ বেশি পরিচিত। এ দুটি পানীয় হচ্ছে এক প্রকার কার্বোনেটেড কোমল পানীয়। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, জেনারেল বা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, ভেন্ডিং মেশিনসহ বিভিন্ন স্থানে কোকা-কোলা ও পেপসি কোলা বিক্রি হয়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই তারা চেইন বিজনেসের মাধ্যমে এসব কোক-পেপসির বিপণন করে থাকে। ছেলে-বুড়ো সবাই দেদার পান করে এসব পানীয়। যদিও কোকা কোলা, পেপসি কোলাসহ অন্যান্য কোমল পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ভাল না মন্দ এই নিয়ে কথা হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে। সম্প্রতি শতবর্ষ ধরে বিশ্বস্ততার জায়গা থেকে কোকা কোলা আর পেপসিকে নাড়িয়ে দিল ফ্রান্সের এক গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন। সেখানে বলা হচ্ছে জনপ্রিয় পানীয়দ্বয় অ্যালকোহলিক এবং স্বাস্থ্যের জন্য সমূহ ক্ষতির কারণ।
প্যারিস ভিত্তিক ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কনজাম্পশন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী অর্ধেকেরও বেশি কোলা জাতীয় পানীয়তে অ্যালকোহলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ধর্মীয় অনুশাসন ও স্বাস্থ্যগত বিষয়াদি যারা মেনে চলেন তাদের অবগত করতেই এই তথ্য উদঘাটন হয়েছে বলে জানায় ডেইলিমেইল অনলাইন।
ফ্রান্সের এক ম্যাগাজিনে এই প্রতিবেদন প্রথম ছাপা হয়। সেখানে বলা হয় ৬ কোটির মত ভোক্তা রয়েছে এমন পানিয়ের। অবশ্য সেই প্রতিবেদন বলছে যে এসব কোমল পানিয়ে অ্যালকোহলের পরিমাণ খুবই কম। লিটার প্রতি ১০ মিলিগ্রাম অ্যালকোহল রয়েছে এসব পানীয়তে যা মোট পানীয়ের শতকরা ০.০০০১ ভাগ। যদিও এই ছোট পরিমাণই মুসলিমদের বিপর্যস্ত করবার জন্য যথেষ্ট। যখন নিজ ধর্মেই পানীয়তে ন্যুনতম অ্যালকোহল অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কী খাচ্ছি :  কোক পেপসির যতো বিপদ!

এদিকে, নিয়মিত গাড়ি চালক অ্যালকোহল বিমুখ ব্যক্তিরাও এ বিষয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। বিশেষত যারা কোকের নিয়মিত ভোক্তা। বিশ্বব্যাপী বাজারজাতকৃত মোট উনিশটি কোমল পানীয় পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আয়ুচান, কোরা, ক্যাসিনো, লিডার প্রাইস এবং ম্যান ইউ কোলাসহ নয়টি অ্যালকোহলমুক্ত বলে জানা যায়। আর কোকা কোলা, পেপসি কোলা, কোকা কোলা ক্ল্যাসিক লাইট এবং কোক জিরোসহ মোট দশটি পানিয়তে অ্যালকোহল ও ক্ষতিকর উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। কোকা কোলা ফ্রান্সের বৈজ্ঞানিক পরিচালক মাইকেল পেপিন এ বিষয়ে বলেন, “গোপন রেসিপি অনুযায়ী কিছুটা অ্যালকোহলের অস্তিত্ব কোকাকোলায় থাকতেও পারে।”

সরকারি বরাত দিয়েই তিনি কোকা কোলাকে ‘কোমল পানীয়’ বলে অভিহিত করেন। পেপিন আরও জানান, প্যারিসে মসজিদ কমিটির দেয়া হালাল সনদ তাদের কাছে রয়েছে ফলে মুসলিমরাও এই কোম্পানীর ভোক্তা। অন্যদিকে পেপসির মুখপাত্র বলেন, “উপকরণের দিক থেকে বেশকিছু কোমল পানীয়তে অ্যালকোহলের অস্তিত্ব থাকতে পারে। যদিও পেপসির রেসিপিতে অ্যালকোহলের কোন জায়গা নেই। অবশ্য এই দুই স্বনামধন্য কোমল পানিয় প্রস্তুতকারক কোম্পানিই দাবি করেছে প্রাকৃতিক ফল পর্যন্ত গাঁজন প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহল উৎপাদন করতে পারে। ১৮৮৬ সালে আবিষ্কৃত কোকা কোলা বর্তমানে দু’শরও বেশি দেশে জনপ্রিয় কোমল পানীয়।

আমেরিকার জন পেমারটন ১৮৮৬ সালে কোকা-কোলা আবিষ্কার করেন। প্রথমে এটি ওষুধ হিসেবে প্রচলিত ছিল। তখন বলা হতো, এটি মাথাব্যথা থেকে পুরুষত্বহীনতা পর্যন্ত সব রোগ সারাতে পারে। তখন থেকেই আন্তর্জাতিক কোমল পানীয় বাজারে কোকা-কোলা প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিষ্ঠানটি দুই শতাধিক দেশে এই পানীয়টি রপ্তানি করছে।

কোক বা পেপসি জাতীয় পানীয় খেলে কী হয়কী খাচ্ছি :  কোক পেপসির যতো বিপদ!

নাড়ীর ভিতরের শ্লেষ্মা ঝিল্লী বা মিউকাস মেমব্রেণ পচে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। অনেকসময় নাড়ীর সংকোচণ, সম্প্রসারণ ক্ষমতাও কমে যায় এবং খাদ্য থেকে পুষ্টি শুষে নেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। ডাক্তাররা বলেন, এ ধরনের পানীয় খেলে হজম ক্ষমতা কমে যায়, বদ হজম, ফুড পয়জনিং, গ্যাস্ট্রিক, ক্ষুদামন্দা দেখা দিতে পারে। স্থায়ী কোষ্ঠ কাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অনেকের শরীরের ওজন বেড়ে ওবেসিটি হয়ে যায়। শরীরে চর্বি বা কোলেস্টরেল এর পরিমাণ বেড়ে যায়।



নারীদের প্রজনন প্রক্রিয়ায় নতুন শিশুর হাড় গঠনে ক্যালসিয়ামের অভাব হয়, নতুন শিশু প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম পায় না।মেটাবোলিক সিন্ড্রম নামে খুব খারাপ একটা সমস্যা আছে যার চারটা অংশ- উচ্চ রক্তচাপ, মুটিয়ে যাওয়া, হাই কোলেস্টেরল, ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্স। সফট ড্রিঙ্ক আপনাকে এগুলো অর্জন করতে অনেক সাহায্য করবে। কোমল পানীয় বিশেষ করে কোলা, কিডনি বিকল করে দেয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। কোলায় থাকা এসিডিটিকে বাফার করতে শরীরের নিজের ক্যালসিয়াম খরচ হতে থাকে। আর এই ক্যালসিয়াম যখন অতিরিক্ত পরিমানে কিডনি দিয়ে পাস হবে, ধীরে ধীরে কিডনি পাথর তৈরি হবে। তাই কোক বা পেপসি খাওয়ার আগে দুদণ্ড ভেবে নিন।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!