কতটা উপকারী ফেয়ারনেস ক্রিম


গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ রঙ ফরসাকারী পণ্যে মারকিউরাস ক্লোরাইডের মতো অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহার করা হয়, যা ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর

মানুষ এখন ফরসা ত্বকে মোহগ্রস্ত। এটা শুধু বাংলাদেশ কিংবা ভারতে নয়, পৃথিবীর অনেক দেশেই। আর এ সুযোগ নিতে ভুল করেননি ব্যবসায়ীরা। কসমেটিক কোম্পানিগুলো নিয়ে এল রঙ ফরসাকারী ক্রিম। কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে এর বাজার বাড়ল। একসময় সেলিব্রিটিরা এসব পণ্যের প্রচারে নামলেন, বিক্রি উঠল তুঙ্গে। ভারতের একটি গবেষণা সংস্থার ফলাফল অনুযায়ী, ২০১০ সালে রঙ ফরসাকারী প্রসাধনীর বাজার ছিল ৪৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতি বছর এটা বাড়ছে ১৮ শতাংশ করে। গত বছর দেশটিতে ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার করা হয়েছে ২৩৩ টন।

এসব ক্রিম কি সত্যিই কোনো কাজে আসে? সেলিব্রিটিরা নিজেরাই যে এগুলো ব্যবহার করেন না এটা বলা তো বাহুল্য। প্রথমত, রঙ ফরসাকারী ক্রিম সবার জন্যই ক্ষতিকর। দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি মোটামুটি নিশ্চিত। হয়তো ভাবছেন, ব্যবহারের ফলে এরই মধ্যে ত্বকের রঙে পরিবর্তন এসেছে। আগের চেয়ে একটু ফরসা দেখা যাচ্ছে (আসলে ফ্যাকাসে)। কিন্তু এর বিনিময়ে কতটুকু মূল্য দিয়ে যাচ্ছেন, সেটা জানা আছে তো?

গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ রঙ ফরসাকারী পণ্যে মারকিউরাস ক্লোরাইডের মতো অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহার করা হয়, যা ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। মারকিউরাস ক্লোরাইড মূলত ব্লিচের কাজ করে, আর এটাই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ ধরনের ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক পাতলা হয়ে যায় ও টানটান ভাব হারায়। এতে ব্রণও সৃষ্টি হয়।

ফেয়ারনেস ক্রিম ত্বককে ফটোসেনসেটিভ বা আলোক সংবেদনশীল করে তোলে। তাই এ ধরনের ত্বকে সূর্যের রশ্মি তুলনামূলক বেশি প্রভাব ফেলে এবং গুটি ও খুজলি তৈরি হয়। এছাড়া আলোক সংবেদনশীল ত্বকে অয়েল প্যাক, ফেশিয়াল কিংবা ম্যাসাজ করলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বর্তমানে পুরুষদের ফেয়ারনেস নিয়েও বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছে কোম্পানিগুলো। বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় ক্রিকেটারকেও এ ধরনের পণ্যের প্রচারণায় দেখা যায়। কিন্তু মনে রাখা ভালো, পুরুষ ও নারীর ত্বকে খুব বেশি পার্থক্য নেই। উল্টো ছেলেদের ফেয়ারনেস ক্রিমে অধিক পরিমাণে ব্লিচ ব্যবহার করার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্রণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তার পরও অনেকে নিজের ত্বক ফরসা করার ত্যাগ হিসেবে এ ক্ষতি মেনে নেন। তাই ফেয়ারনেস ক্রিমের মায়া তারা ছাড়তে পারেন না। কিন্তু তাদেরও জেনে রাখা ভালো, ব্লিচিং শুধু সাময়িক ফরসা করতে পারে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ভালো ত্বকের জন্য জরুরি পিগমেন্টেশন কমানো, যা ফেয়ারনেস ক্রিমের পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়া এটাও খেয়াল করা দরকার, ড্যামেজ ফরসা ত্বকের চেয়ে তুলনামূলক কম ফরসা নিখুঁত ত্বক অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও কাঙ্ক্ষিত।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!