ল্যাপটপের সামনে নিজেকে খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করে উপার্জন


ঢাকা : সকাল ১০ টা। মেকআপ নিয়ে সাজতে ব্যস্ত ২৫ বছর বয়সী এক মডেল। এরপর নিজের ঘরের আলো ঠিকঠাক করে কাজ শুরু হবে তাঁর। কাজের নাম ‘ক্যাম মডেলিং’।

ল্যাপটপের বা ভিডিও ক্যামেরার সামনে নিজেকে খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করে তার ভিডিওচিত্র ধারণ করা ও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এই মডেল নিজেকে যতোটা আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন ততোই দ্রুত বাড়বে তার জনপ্রিয়তা ও আয়।

নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি ‘ক্যাম মডেলিং’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর একজন জনপ্রিয় ক্যাম মডেলের নাম ‘লেসি’। তাঁর কাজ হচ্ছে, বাড়িতে বসে বসে কিংবা সুবিধামতো পরিবেশে ওয়েবক্যামের সামনে মডেলিং করা। এরপর এই ভিডিও ক্লিপটি একটি বিশেষ সাইটের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা।

অনলাইন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে সারা বিশ্বেই এ ক্যাম মডেলিং ব্যবসার প্রচলন বাড়ছে। গত কয়েক বছরে ডিজিটাল ব্যবসা হিসেবে ক্যাম মডেলিং দ্রুত বেড়েছে। প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতির ফলে বর্তমানে ক্যাম ব্যবসা আরও ফুলে-ফেঁপে উঠছে এবং দ্রুত অর্থ আয় করার দরজা খুলছে। এই ব্যবসার সঙ্গে অনলাইন পর্নোগ্রাফির পার্থক্য হচ্ছে যে, এ ক্যাম শো সহজে কপি বা পাইরেসি করা যায় না। অর্থাত্ রিয়েল টাইমে কেবল এ শো ওয়েবসাইটে প্রচারিত হয়।

অনলাইনে ওয়েবসাইট ভিজিটরদের আচরণ ও তথ্য প্রদানকারী সাইট কমপিট ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, লাইভ ক্যাম শো সম্প্রচার করে এমন ওয়েবসাইটের ভিজিটর প্রচুর। শীর্ষস্থানে থাকা অনেক সাইট মাসে লাখ লাখ ভিজিটর পায়।

এ ধরনের ওয়েবসাইটগুলোতে একটি নির্দিষ্ট সময় কয়েক শ মডেল অনলাইনে থাকে যাদের শো এক হাজারের বেশি বার দেখা হয়। আবার অনেকে এ সাইটগুলোকে ‘প্রাইভেট শো’ হিসেবেও উপভোগ করে। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে লাইভ ভিডিও ক্যাম সাইটগুলোর আয় দ্রুত বাড়ছে।

এ ধরনের সাইটে যারা মডেল হিসেবে কাজ করছে তাদের আয়ের বিষয়টি আবার পেজভিউ বা সাবসক্রিপশনের ওপর নির্ভর করে না। তাদের পারিশ্রমিক নির্ধারিত হয় ক্রেডিট বা টিপস হিসেবে। এসব টিপস ও ইলেকট্রনিক টোকেনের সুবিধা রাখে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো। লাইভ শো দেখতে এসব ইলেকট্রনিক টোকেন কিনতে হয় দর্শকদের। দর্শকরা অনলাইনে বার্তা পাঠানো বা ভাব বিনিময় করার সুযোগ পান মডেলদের সঙ্গে। ওয়েবসাইটগুলো যোগাযোগের সব বন্দোবস্ত করে দেয়। এসব ওয়েবসাইটগুলো সংগৃহীত অর্থ পরে মডেলদের পরিশোধ করে।
ক্যাম মডেলদের ভাষ্য হচ্ছে, যতোই তাঁরা ইন্টারনেটের সুবিধা নিয়ে নিজেদের নিরাপদ ভাবুন না কেনো তাদের পরিচয় প্রকাশ হয়ে পড়তে পারে যেকোনো মুহূর্তেই।

এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়েব ক্যাম মডেলদের কাছে প্রতারিত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে হর-হামেশাই। লাইভ-শোর নামে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আগে ধারণকৃত ভিডিওচিত্র দেখানো হয় এবং প্রতারক ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ফাঁদে ফেলে। অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দর্শককে খোলামেলা হতে বলে এবং সে ভিডিও চিত্র ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলেন, ক্যাম মডেলিং প্রতারণার শিকার হতে পারে শিশু, তরুণ ও নারীরা। যুক্তরাজ্যের চাইল নেট ইন্টারন্যাশনালের গবেষকেদের মতে, ওয়েবক্যামের প্রতারণার এক পর্যায়ে ভয়ানক হয়ে ওঠে প্রতারকরা। তবে অনেক ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রতারণার বিষয়টি সহজে সামনে আসে না। অনেকে প্রতারণার বিষয়টি ধরতেও পারেন না। একাকিত্বের দুর্বলতার সুযোগে ক্যাম প্রতারকরা হাতিয়ে নিতে পারে অর্থ। হতাশ হয়ে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটাতে পারে প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিটি। প্রথম আলো।

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!