ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচাবে কীটনাশক যুক্ত মশারি



স্বাস্থ্য ডেস্ক: ২৬ এপ্রিল (টাইমস অফ বাংলা) : উদ্ভাবনটা নতুন নয়, কিন্তু সে মশারি ধুলে যে তা থেকে কীটনাশকও ধুয়ে যায়, সেটাই ছিল সমস্যা৷ ‘লাইফ-নেট’ ব্যবহার করলে সে বিপদ নেই, কেননা কীটনাশক মশারির কৃত্রিম তন্তুতেই ঢোকানো থাকে, বলছেন বিজ্ঞানীরা৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন ডাব্লিউএইচও-র বিবৃতি অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় দশ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় প্রাণ হারায়, তাদের নব্বই শতাংশ আফ্রিকায়৷ বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত যে, কীটনাশক যুক্ত মশারি ব্যবহার করে ম্যালেরিয়ার বিস্তার রোধ করা সম্ভব৷

কিন্তু মশারি তো একবার ব্যবহার করার জন্য নয়, তা প্রত্যহ ব্যবহার করতে হয়৷ সেজন্য তা টেঁকসই হওয়া দরকার, এবং সে মশারি মাঝেমধ্যে ধুতে পারা চাই৷ আবার সেই ধোয়ার ফলে কীটনাশক ধুয়ে গেলে চলবে না৷

ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত মশারি ব্যবহার করাটা বিশেষ জরুরি, কেননা ম্যালেরিয়ায় যারা প্রাণ হারায়, তাদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি৷ ম্যালেরিয়ায় যাদের মৃত্যু ঘটে, তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম৷

মশার কামড় থেকে রক্ষা পাবার সেরা উপায় আজও মশারি, বিশেষ করে যখন অ্যানোফিলিস মশা, যা ম্যালেরিয়া ছড়ায়, রাতেই বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ মশারি নিয়মিত ইম্প্রেগনেট করা বা কীটনাশকে ভেজানো প্রয়োজন৷ এছাড়া বেশ কিছুদিন ব্যবহারের পর মশারি ফুটো হয়ে গেলে চলবে না৷

ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত মশারি ব্যবহার করাটা বিশেষ জরুরি

সাধারণ মশারিগুলোর মুশকিলটা সেখানে৷ পুরনো, ময়লা হয়ে যাওয়া ল্যাতপ্যাতে মশারি ধুলে আবার ছেঁড়া-ফাটার ভয় থাকে৷ কৃত্রিম তন্তু সে তুলনায় অনেক বেশি কড়কড়ে হয় বটে, কিন্তু সেগুলো পরিষ্কার করা সাধারণ মশারির চেয়ে মুশকিল৷ সবচেয়ে বড় কথা, এ যাবৎ কৃত্রিম তন্তুর মশারিগুলির উপর বার বার কীটনাশক স্প্রে করতে হতো, যা-তে সেটা কার্যকর অবস্থায় থাকে৷ বিশেষ করে ধোয়ার পরে মশারিতে কীটনাশকের আর কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট থাকতো না৷

কাজেই জার্মানির বায়ার সংস্থা এমন একটি মশারি উদ্ভাবন করতে চায়, যার কৃত্রিম তন্তু সুতার মতো না হলেও, কিছুটা নরম হবে, এবং সেই সঙ্গে কীটনাশক পদার্থটি মশারির তন্তুর মধ্যেই ধরা থাকবে৷ পলিপ্রপিলিনের এই তন্তু উৎপাদনের সময়েই তা-তে কীটনাশক মিশিয়ে দেওয়া হয়৷ এবং বহুদিন ধরে সেই কীটনাশক কার্যকরি থাকে৷ ব্যবহার কিংবা ধোয়ার ফলে তন্তুর উপরিভাগের কীটনাশক ধীরে ধীরে ক্ষয়ে গেলেও, তার তলা থেকে আরো কীটনাশক বেরিয়ে আসে৷ কৃত্রিম তন্তুর তৈরি এই মশারি ৩০ বার ধুলেও কীটনাশক তার কার্যকরিতা হারায় না – স্বয়ং ডাব্লিউএইচও তা পরীক্ষা করে দেখেছে৷

অপরদিকে স্প্রে করা কীটনাশক মানুষের পক্ষে যতটা হানিকর হতে পারে, কৃত্রিম তন্তুর কীটনাশক তার চেয়ে অনেক বেশ নিরাপদ৷ এমনকি কোলের শিশুরা মশারি ধরে টানাটানি করলে কিংবা তা মুখে দিলেও বিপদ ঘটার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ বায়ার সংস্থা এই ধরনের লক্ষ লক্ষ মশারি উৎপাদন করার লক্ষ্য নিয়েছে – কেননা বিশ্বে ম্যালেরিয়া পীড়িতদের সংখ্যা ৩০ থেকে ৫০ কোটি৷
সুত্র: ডি ডব্লিউ

0 comments:

Post a Comment

" কিছু স্বপ্ন আকাশের দূর নীলিমাক ছুয়ে যায়, কিছু স্বপ্ন অজানা দূরদিগন্তে হারায়, কিছু স্বপ্ন সাগরের উত্তাল ঢেউ-এ ভেসে যায়, আর কিছু স্বপ্ন বুকের ঘহিনে কেদে বেড়ায়, তবুও কি স্বপ্ন দেখা থেমে যায় ? " সবার স্বপ্নগুলো সত্যি হোক এই শুভো প্রার্থনা!